শেষ আপডেট: 13th March 2025 13:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দুজনই চোট পান ২৯ বছর বয়সে। সেটাও পিঠের একই জায়গায়, একটু নীচ বরাবর। একজনের কেরিয়ার তারপর নিষ্প্রভ হতে হতে ৩৪ বছর বয়সে শেষ হয়ে গেছিল। অন্যজনের কেরিয়ার খতম হয়নি, কিন্তু থমকে আছে। আর এই থমকে থাকাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অকালে অবসর নেওয়া প্রথম বোলার।
তিনি শেন বন্ড। নিউজিল্যান্ডের তারকা সিমার। তুখোড় ফাস্ট বোলার। গতি আর সুইংয়ের জন্য সুনাম কুড়োন। ঠিকানা-লেখা বিষাক্ত ইয়র্কারে উপড়ে নিতেন উইকেট। এখানেও মিল। আর তাই চোটের কারণে কয়েক মাস যাবৎ দলের বাইরে থাকা জসপ্রীত বুমরাহ এবং সেই সঙ্গে বিসিসিআইকে সতর্ক করলেন বন্ড। জানালেন, একটি চোট আর সেটাও যদি একই জায়গায় ফের একবার দেখা দেয়, তাহলে ভারতীয় বোলারের কেরিয়ার চিরকালের জন্য খতম হতে পারে।
মুম্বই ইন্ডিয়ার প্রাক্তন বোলিং কোচ এই মরশুমে রাজস্থান রয়্যালসের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন। বুমরাহকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। আর তাই বন্ডের বিশ্লেষণ—এবার থেকে বুমরাহকে খেলানো নিয়ে আরও বেশি যত্নবান হওয়া উচিত বিসিসিআইয়ের। পরপর দুটোর বেশি টেস্ট খেলাও তাঁর জন্য বাড়তি চাপ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে। আশঙ্কা নিউজিল্যান্ড পেসারের।
বুমরাহর চোটের ইতিহাস অবশ্য বেশ পুরোনো। কেরিয়ারে এর আগে বহুবার আঘাত পেয়েছেন তিনি। ২০২৩ সালের মার্চে পিঠের নীচের অংশে চোট পান। চলতি বছর জানুয়ারিতে সিডনি টেস্টে ফের আহত হন। সেটাও ওই একই জায়গায়। চিকিৎসকদের তরফে বলা হয়, অতিরিক্ত ম্যাচ খেলা ও একটানা লোড নেওয়ার জেরে আহত হয়েছেন বোলার। ৩২ উইকেট নিয়ে সিরিজ-সেরা হওয়ার পরেও তাই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পারেননি বুমরাহ। আইপিএলেও অনিশ্চিত। খেললেও তারপরই শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ড সফর। সেখানেও দলের বোলিং ইউনিটের প্রধান মুখ হতে চলেছেন তিনি। ফলে দায়িত্ব কমার বদলে বেড়েই চলেছে। আর এখানেই আশঙ্কার মেঘ জমতে দেখছেন বন্ড।
প্রাক্তন কিউয়ি পেসার বলেন, ‘সিডনিতে চোট পাওয়ার পর যখন বন্ড চিকিৎসকের কাছে যায় এবং স্ক্যান করানো হয়, তার রিপোর্ট জানার পর আমি সন্দেহ করেছিলাম সামান্য টান কিংবা ব্যথা নয়, এটা বড় আঘাত। আমি তখনই ভেবেছিলাম, বুমরাহ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে পারবে না।‘
২২ মার্চ থেকে শুরু হতে চলা আইপিএল ২৫ মে শেষ হবে। তার এক মাসের মধ্যে ইংল্যান্ড সফরে যাবে টিম ইন্ডিয়া। খেলবে ৫টি টেস্ট। আর এই টি-২০ থেকে চট করে, সময় না নিয়ে টেস্ট খেলতে নামার ফলও ভুগতে হতে পারে বুমরাহকে। মত বন্ডের। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, ‘ওয়ান ডে খেলায় তেমন কোনও ঝামেলা নেই। সপ্তাহে তিনটে করে ম্যাচ, প্র্যাকটিস। কিন্তু টি-২০ ক্রিকেটে, বিশেষ করে আইপিএলে, সপ্তাহে তিনটি ম্যাচের পাশাপাশি দু’দিনের যাতায়াত, একটি ট্রেনিং সেশন, ২০ ওভার বল করা। এটা টেস্টের লোডের অর্ধেক বা তার চেয়ে কিছুটা কম। এটা বড় জাম্প। টেস্ট সিরিজ খেলার পর এই বদলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা সমস্যার।‘
অস্ট্রেলিয়া সিরিজে সাধ্যাতীত বোঝা কাঁধে তুলেছিলেন বুমরাহ। এক চতুর্থ টেস্টেই ৫২ ওভার বল করেন তিনি। সিরিজে হাত ঘোরান ১৫১ ওভার। ইংল্যান্ড সফরে মোট ৫টি টেস্ট খেলবে ভারতীয় দল। সফর চলবে ২৮ জুন থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত। বন্ডের সতর্কবার্তা: অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিক ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যেন বুমরাহর উপর বাড়তি চাপ দেওয়া না হয়।