দ্য ওয়াল ব্যুরো: এক দলের আক্রমণ চলতি বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা। অন্য দল আবার নিজেদের গোলের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় দুর্ভেদ্য দেওয়াল। শুক্রবার সন্ধ্যায় অ্যাটাক বনাম ডিফেন্সের এই লড়াইয়ের মুখোমুখি হবে নিজনি নভগরোদ স্টেডিয়ামের ৪৩ হাজারের উপর দর্শক।
ফ্রান্স বনাম উরুগুয়ের এই লড়াই মূলত ফ্রান্সের আক্রমণের সঙ্গে উরুগুয়ের ডিফেন্সের। একদিকে এমব্যাপে, জিরু, গ্রিজম্যান, পোগবার শক্তিশালী আক্রমণ ভাগ। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে যে আক্রমণের ঝড় দেখেছিল ফুটবল বিশ্ব। বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা উঠতি তারকা এমব্যাপে রয়েছেন দুরন্ত ফর্মে।
অন্যদিকে উরুগুয়ের প্রধান শক্তি তাঁদের ডিফেন্স। অধিনায়ক দিয়েগো গদিন, জস গিমেনেজ, মার্টিন ক্যাসেরাস ও দিয়েগো ল্যাক্সল্টের ডিফেন্স ভাঙার ফরমুলা এখনও পর্যন্ত বের করে উঠতে পারেনি কোনও দল। তাঁদের ডিফেন্সের পেছনে অভিজ্ঞ গোলকিপার ফার্নান্দো মুসলেরা। গোটা বিশ্বকাপে মাত্র একটা গোল খেয়েছে উরুগুয়ে দল। উরুগুয়ে ছাড়া চলতি বিশ্বকাপে এই রেকর্ড কেবলমাত্র ব্রাজিলের আছে।
উরুগুয়ের আক্রমণ ভাগের প্রধান দায়িত্ব কাভানি-সুয়ারেজ জুটির উপর। কিন্তু পর্তুগালের বিরুদ্ধে কাফ মাসলে চোট পেয়েছিলেন কাভানি। এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি তিনি। কিন্তু উরুগুয়ে ম্যানেজমেন্টের তরফে তাঁকে খেলানোর পুরো চেষ্টা করা হচ্ছে। সুয়ারেজের থাইয়েও রয়েছে হালকা চোট। প্র্যাকটিসে পায়ে টেপ বেধে খেলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
অন্যদিকে ফ্রান্সের আক্রমণ ভাগ যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে খেললেও তাঁদের ডিফেন্সের উপর উঠেছে প্রশ্ন। আর্জেন্টিনার মতো দলের বিরুদ্ধেও তিন গোল হজম করতে হয়েছে তাঁদের। কারণ দিশঁ ফ্রান্সকে খেলান ৩-৫-২ ছকে। মাঝে মাঝে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারদের মধ্য বোঝাপড়ার সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
উরুগুয়ের অভিজ্ঞ কোচ অস্কার তাবারেজ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, “আমরা জানি ফ্রান্সকে একটু সুযোগ দিলেই বিপদ। একটু ফাঁক পেলেই এমব্যাপের গতি তছনছ করে দিতে পারে উরুগুয়েকে। আর তাই আমরা এমব্যাপের উপর আলাদা করে নজর রাখছি।”
এই কোয়ার্টার ফাইনালের দুই দলের মধ্যে বেশ কিছু খেলোয়াড় ক্লাব স্তরে একে অন্যের সঙ্গে খেলেন। যেমন, কাভানি ও এমব্যাপে দুজনেই প্যারিস সাঁ জা’র স্ট্রাইকার। উরুগুয়ের গদিন ও গিমেনেজের সঙ্গে ফ্রান্সের গ্রিজম্যান একসাথে খেলেন অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদে। আবার সুয়ারেজ, দেম্বেলে ও উমতিতি ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার হয়ে খেলেন। তাই এই সব খেলোয়াড়রা একে অন্যের শক্তি, দুর্বলতা ভালো করেই জানেন। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাইছেন দুই অভিজ্ঞ কোচ।
একটা ক্ষেত্রে উরুগুয়ে ফ্রান্সের থেকে এগিয়ে, সেটা হলো অভিজ্ঞতা। এই উরুগুয়ে দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়েরই বিশ্বকাপে এর আগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তাই নক আউটের মতো খেলার চাপ নেওয়ার ব্যাপারে তাঁরা অনেক পারদর্শি। অন্যদিকে ফ্রান্সের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই তরুণ। তাই প্রতিভা থাকলেও বিশ্বকাপের এত বড় মঞ্চে যে দল নিজেদের ফোকাস ধরে রেখে চাপ সামলে খেলতে পারবে, জয়ের সম্ভাবনা তাদেরই বেশি। বলাই যায় বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম খেলায় টানটান ম্যাচের সম্মুখীন হতে চলেছে ফুটবল দুনিয়া।