শেষ আপডেট: 30th July 2024 14:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জাপানের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ অলিম্পিক্স সোনাজয়ী হিসেবে নাম লেখাল কোকো ইয়োশিজাওয়া। বয়স মাত্র ১৪। মেয়েদের স্ট্রিট স্কেটবোর্ড গেমসে, ‘অল টিনএজ’ ফাইনালে সোনা জিতেছে সে। ওই ম্যাচেই রুপো এসেছে ১৫ বছরের আর এক জাপানি কন্যা লিজ আকামার ঝুলিতে। ব্রোঞ্জজয়ী ব্রাজিলের রায়সা লিয়েল, ১৬ বছরের।
১৪, ১৫, ১৬ বছরে অলিম্পিক্সে সোনা-রুপো জিতে ফেলা যে খুব বিরল ব্যাপার, তা কিন্তু নয়। প্রতি বছরই মাঠ কাঁপায় এই বয়সের ‘টিনএজ’ অ্যাথলিটরা। এমন বহু কিশোর-কিশোরীই প্যারিসের অলিম্পিক্সে অংশ নিয়েছে এবছরেও। যেমন আমেরিকার ৫৯২ জন অলিম্পিয়ানের মধ্যে ৩২ জনেরই বয়স ১৩ থেকে ১৯। জাপান থেকেও এসেছে এমন অনেকে। তাদেরই একজন ইয়োশিজাওয়া।
৭ বছর বয়স থেকে স্কেটবোর্ডিং করছে ইয়োশিজাওয়া। ভাইকে দেখে খেলতে শুরু করলেও, খেলাটা তার ভাল লাগত না প্রথম দিকে। ইয়োশিজাওয়া সোনার মেডেল গলায় ঝুলিয়ে বলে, 'একদম ভাল লাগত না। পড়ে যেতাম, ব্যথা পেতাম খুব। ভাবতাম, লোকে কেন এটা খেলে!’ কিন্তু কোভিডের সময়ে এই খেলার সঙ্গে ভালবাসা তৈরি হয় তার। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা নেই, বাবা মোবাইল ব্যবহার করতে দেন না, সময় তো কাটাতে হবে! তখনই পার্কে প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টা করে অনুশীলন শুরু করে ইয়োশিজাওয়া। তখন অবশ্য সে স্বপ্নেও ভাবেনি, প্যারিস অলিম্পিক্সের টিকিট কাটবে সে এবং জিতে আনবে সোনাও!
তখন কেন, ২০২১ সালের টোকিও অলিম্পিক্স টিভির পর্দায় দেখার সময়েও এ কথা ভাবেনি ইয়োশিজাওয়া। সে বছর জাপানের সর্বকনিষ্ঠ ক্রীড়াবিদ হিসেবে এই একই ইভেন্টে সোনা জিতেছিলেন মোমিজি নিশিয়া। তার বয়স ছিল ১৩। সেই জয়ী কন্যা মোমিজির ফ্রন্টসাইড ও ব্রডসাইড স্পিনের কায়দা টিভি দেখেই আয়ত্ত করেছিল ক্লাস সিক্সের মেয়ে ইয়োশিজাওয়া। তখন অবশ্য বাবা বলেছিলেন, ‘কৌশল তো শিখেই গেছো, তুমিও একদিন অলিম্পিক্সে খেলবে।’
বাবারা এমন বলেই থাকে, সে কি আর বিশ্বাসযোগ্য! শেষমেশ বাবার কথাই ফলে গেল। ইয়োশিজাওয়া অলিম্পিক্সে খেললেন এবং জিতলেন। তবে শুধু সোনা জিতেই ফিরে আসতে চায় না সে, প্যারিসের সব জায়গায় ঘুরতে চায়, ভাল ভাল খাবার খেতে চায়। এমনকি স্কেটবোর্ডে চড়েই প্যারিস শহরটি ভাব করে ঘুরে দেখারও ইচ্ছে তার।
ইয়োশিজাওয়ার মতোই আর এক ১৬ বছরের দক্ষিণ কোরিয়ান কিশোরী বান হিওজিন। মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে সোনা জিতেছে সেও। গড়েছে রেকর্ড। দেশকে এনে দিয়েছে ১০০তম অলিম্পিক পদক। এত বড় গৌরব এনে দেওয়া বান-ও অনেক পরে শুরু করেছে রাইফেস শ্যুটিং। ২০২১ সালের আগে পর্যন্ত সে স্কুলে মার্শাল আর্টস করত। বন্ধুদের সঙ্গে পড়ে শুরু করে শ্যুটিং। তবে সপ্তাহ দুয়েকের অনুশীলনের মধ্যেই স্কুলের শ্যুটিং দলে জায়গা পায় সে। কিন্তু তার তিন বছরের মধ্যে যে অলিম্পিক্সের মঞ্চে সোনার মেডেল অর্জন করবে, তা ভাবতেও পারেনি বান।
ইয়োশিজাওয়া বা বানদের এই জয় যেন মনে করিয়ে দেয়, স্বপ্নকে কখনও বয়স দিয়ে বাঁধা যায় না। প্রতিভা থাকলে কিশোর বয়সেও বিশ্বের দরবারে জয় মেলে।