শেষ আপডেট: 12th March 2025 18:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একটা সময় দাপটে কলকাতা ময়দানে ফুটবল খেলেছেন। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল কিংবা জুনিয়র বাংলায় প্রতিনিধিত্ব করা। সোনার সময় কাটিয়েছেন টালিগঞ্জ অগ্রগামীতে। সেইসময় কলকাতার বড় দলগুলিকে লিগের ম্যাচগুলিতে আটকে দিত গোলরক্ষক ভুবন চট্টোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত হাত। দু’প্রধানের সমর্থকদেরও প্রশংসা কুড়িয়েছেন ভুবন।
বহুবার বড় দলের অফার পেয়েও টানা খেলা হয়নি মোহনবাগান কিংবা ইস্টবেঙ্গলে। সেইসময় পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। তাই পরিবারের কথা ভেবে রেলে, পরে যোগ দেন ব্যাঙ্কে। সেই সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক থেকেই অবসর নিয়েছেন এই নামী গোলরক্ষক। ময়দানে অবশ্য তাঁর বিশেষ পরিচিতিও রয়েছে অন্য কারণে।
ভুবন খেলার পাশাপাশি সুরের খেলায় মেতেছেন। তিনি নিজেই গান রচনা করেন, সুর দেন ও এমনকী গায়কের ভূমিকাতেও তিনি। ময়দানের হেন চরিত্র নেই, যাঁকে নিয়ে এই নামী প্রাক্তন সুরসৃষ্টি করেছেন। ভুবনকে এই বিষয়ে সহায়তা করেন তাঁর স্ত্রী কাকলি চট্টোপাধ্যায়।
সুরের ভেলায় ভাসলেও আদতে তাঁর মজ্জায় যে ফুটবল, সেটি কীভাবে অস্বীকার করা যাবে। সেই কারণে দীর্ঘ চাকরি জীবন শেষ করে ফের মাঠে নেমে পড়েছেন। এবার ভুবনবাবু কোচের ভূমিকায় হাজির। হাওড়া সহযাত্রী থেকে একটা সময় নিজের ফুটবল কেরিয়ার শুরু করেছিলেন, সেই ক্লাবেই কোচ ছিলেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায় (গদাই'দা)। তাঁর কাছে কোচিং নেওয়ার প্রথম পাঠ নেন ভুবন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ফের ১৮ বছর পরে কোচিংয়ে ফিরলেন তিনি। এবার প্রয়াত কিংবদন্তি পদ্মশ্রী শৈলেন মান্নার ক্লাব হাওড়া ব্যাঁটরা বিডিএফসি ক্লাবে খুদেদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন জায়ান্ট কিলার খ্যাত প্রাক্তন গোলরক্ষক।
তাঁর কোচিংয়ে বিশেষত্বও রয়েছে। খুদেরা খুবই খুশি তাঁর কোচিংয়ে, এমনকী ক্লাবের কর্তারাও। এর আগে এই সহযাত্রী ক্লাবকেই কলকাতা ময়দানে নার্সারি লিগে ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত কোচিং করিয়ে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন।
তারপর চাকরি জীবনের নানা ঝক্কিতে আর কোচিং করানো হয়নি। সেইসময় ভালবেসে ফেলেছিলেন লেখালেখি ও সুরসৃষ্টি। সেই প্রেম থেকেই একের পর এক মিউজিক অ্যালবাম প্রকাশ করে গিয়েছেন। লিখেছেন আত্মজীবনীও।
দীর্ঘদিন পরে মাঠে ফিরে ভুবন বাবু জানিয়েছেন, 'এর আগেও আমি নার্সারি লিগে কোচিং করিয়ে সাফল্য এনে দিয়েছিলাম। তারপর কাজের চাপে আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এতদিন পরে ব্যাঁটরা ক্লাবের কর্তাদের আন্তরিক ডাককে আমি উপেক্ষা করতে পারিনি। এই ক্যাম্প থেকে সবাই তো ভাল ফুটবলার হবে না, সেটা স্বাভাবিকও নয়। কিন্তু সমাজে লড়াই চালিয়ে যে আগামী দিনে সাফল্য আনা সম্ভব, সেই মন্ত্র আমি দিতে চাই খুদে শিক্ষার্থী ফুটবলারদের।'