করিম বেঞ্জিমা
শেষ আপডেট: 8 May 2025 07:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অবিশ্বাস্য! নাটকীয়! রোমহর্ষক!
খাতায়-কলমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল। মুখোমুখি দুই দল বার্সেলোনা-ইন্টার মিলান। স্পেন বনাম ইতালি। আক্রমণ বনাম রক্ষণ। অভিজ্ঞতা বনাম তারুণ্য। মারকাটারি লড়াইয়ের সমস্ত মশলা মজুত ছিল। বলা বাহুল্য, দুই লেগের দ্বৈরথে বিশ্বের তামাম ফুটবল অনুরাগীর ইচ্ছেপূরণ হয়েছে। রেকর্ড বলবে, দু’দফায় গড় হিসেবে ৭-৬ স্কোরলাইনে শেষ হাসি হেসেছে ইতালির ক্লাব। কিন্তু আসলে জিতেছে ফুটবল, জিতেছে হার-না-মানা জেদ আর লড়াই শেষের আগে ময়দান না ছাড়ার দৃঢ় প্রত্যয়!
কিন্তু ইতিহাসের মহাফেজখানায় একটি মাত্র ম্যাচের কথাই লেখা থাকবে না। এর আগেও অনেক টানটান থ্রিলার এই চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের মঞ্চেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফিরে দেখা যাক এমনই কিছু রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ:
১। রিয়াল মাদ্রিদ ৬-৫ ম্যাঞ্চেস্টার সিটি (২০২২):
ম্যাঞ্চেস্টারের এতিহাদ স্টেডিয়ামে প্রথম লেগের আসর বসে। সেখানে জয়লাভ করে পেপ গোয়ার্দিওলার মান সিটি। ফল ৪-৩।
সেকেন্ড লেগে এক গোলে পিছিয়ে থাকলেও অনেকেই ভেবেছিলেন শুরু থেকেই কামব্যাকের মন্ত্রে তেতে থাকবে কার্লো অ্যান্সিলোত্তির টিম। কিন্তু সবাইকে অবাক করে রিয়াদ মাহারেজ গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। সমতা ফেরানোর জন্য অন্তত দু’গোল করতে হত করিম বেঞ্জিমা, লুকা মদ্রিচদের। কিন্তু গোটা ম্যাচে সেভাবে থাবা বসাতে পারেনি রিয়াল। খেলা ঘুরে যায় দ্বিতীয়ার্ধ-শেষে সংযুক্ত সময়ে। ব্রাজিলীয় রদ্রিগো পরপর দু’মিনিটে দু’গোল করেন। তারপর ৯৫ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় রিয়াল। স্পটকিক থেকে গোল করেন করিম বেঞ্জিমা। জিতে ফাইনালে ওঠে মাদ্রিদ।
২। বার্সেলোনা ৩-৪ লিভারপুল (২০১৯):
প্রথম লেগ ছিল ন্যু ক্যাম্পে। একতরফা লড়াইয়ে লিভারপুলকে কার্যত দুরমুশ করে বার্সা। স্কোরলাইন ৩-০। দু’গোল মেসির। সেকেন্ড লেগ যখন মনে হচ্ছে নিয়মরক্ষার, তখনই জ্বলে ওঠে লাল আর্মি। রবার্তো ফেরমিনো, মহম্মদ সালাহ না থাকলেও দলের দুর্যোগে দায়িত্ব তুলে নেন ডিভক ওরিগি। প্রথম ও শেষ গোল করে অবিশ্বাস্য কামব্যাক করে দেখায় লিভারপুল।
৩। টটেনহ্যাম ৩-৩ আয়াক্স (২০১৯):
লিভারপুলের বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর সিজনেই আরেকটি দুর্ধর্ষ কামব্যাকের সাক্ষী ছিল আমস্টারডাম স্টেডিয়াম। প্রথম লেগে লন্ডন থেকে ১-০ গোলে জিতে ঘরের মাঠে খেলতে নেমেছিল এরিক টেন হাগের তারুণ্যে ভরপুর আয়াক্স। প্রথমার্ধে দু’গোল করে গড়ে ৩-০ স্কোরে এগিয়ে যায়। কিন্তু ম্যাচের অন্তিম লগ্নে লুকাস মউরার নেতৃত্বে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করে টটেনহ্যাম। ওঠে ফাইনালে।
৪। বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ৪-৩ রিয়াল মাদ্রিদ (২০২৩):
প্রথম লেগে ৪-১ স্কোরলাইনে জয়লাভ করে জার্মানির ক্লাব। আগুনে ফর্মে ছিলেন রবার্ট লেভানডস্কি। নিজেই দলের হয়ে চার গোল করেন। দ্বিতীয় লেগে স্পেনের ক্লাবকে অন্তত তিন গোল করতেই হত। কিন্তু দু’গোল করেই থমকে যেতে হয় রিয়ালকে। শেষ ১০ মিনিট দাঁতে দাঁত চিপে ডিফেন্ড করে চলে য়ুর্গন ক্লপের টিম। শেষ হাসিও তারাই হাসে।
৫। এসি মিলান ৫-৩ ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড (২০০৭):
সেই সময় রোনাল্ডো খেলতেন ম্যান ইউয়ের জার্সিতে। কাকা নামতেন মিলানের হয়ে। প্রথম লেগের লড়াইয়ে ম্যান ইউ ৩-২ গোলে জিতলেও দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ব্রাজিলিয়ান মিডমিল্ডার রিকার্ডো কাকা দু’গোল করে বুঝিয়ে দেন সান সিরোয় সেকেন্ড লেগে মিলান এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দেবে না। আর কার্যত সেটাই হয়। ফের জ্বল ওঠেন ব্রাজিলীয় মায়েস্ত্রো। দ্বিতীয় গোল ক্লারেন্স সিডর্ফের। প্রায় হেসেখেলেই ম্যান ইউকে হারিয়ে দেয় এসি মিলান।