
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শশাঙ্ক মনোহর যখন আইসিসি-তে ছিলেন, সেইসময়ও আইসিসি ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সম্পর্ক ভাল ছিল না। এখনও যে সেই সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে তা বলা যাবে না। না হলে ২০২১ সালে ভারতের মাঠে টোয়েন্টি ২০ বিশ্বকাপ হবে, তার জন্য কেন্দ্র সরকারকে তো কর দিতেই হবে। পাশাপাশি আইসিসি-কে টুর্নামেন্ট ফি হিসেবে দিতে হবে ২২৬ কোটি টাকা।
সরকার করের বিষয়ে ছাড় দিলেও আইসিসি দেবে না, সেটি পরিষ্কার। কারণ সম্প্রতি এক নির্দেশিকায় তারা সেটি জানিয়েছে। তার মানে মেগা টুর্নামেন্ট ঘিরে কর ইস্যু ও টুর্নামেন্ট ফি ঘিরে ফের জটিলতা বাঁধতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে।
সব মিলিয়ে সরকারকে ৯০৬ কোটি টাকা কর দিতে হবে বিসিসিআইকে। সরকার ছাড় দিলেও আইসিসি নিজেদের দাবিতে অটল থাকবে। করের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত ভারত বিশ্বকাপ আয়োজনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।
এদিকে আইসিসি দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানোর চাপ দিচ্ছে বিসিসিআইকে। সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য এর মধ্যেই বিসিসিআইকে দুটি দিন দিয়েছিল আইসিসি। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পর ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরও চলে গিয়েছে, কিন্তু এখনও সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-জয় শাহের ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
কদিন আগেই বিসিসিআই করোনার আর্থিক ক্ষতির কারণ দেখিয়ে সরকারের অর্থ দপ্তরের কাছে বিশ্বকাপে কর ছাড়ের আবেদন করেছিল। সরকার এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত না জানানোয় বেশ চাপে আছে বিসিসিআই।
আইসিসিও অপেক্ষা করতে রাজি নয়। বিশ্বকাপ সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর কাছে ছেড়ে দিতে চাইছে। সেই নিয়েও ভাবনা শুরু হয়েছে বের্ডের মধ্যে। অথবা সরকার কর ছাড় না দিলে সেই টাকা বোর্ডের নিজের কোষাগার থেকে পরিশোধ করবে এবং সেটি লিখিত দিতে হবে।
গত ডিসেম্বরে বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভায় এই বিষয়ে কথা হয়েছে। তবে কোনও সিদ্ধান্তে এখনও পৌঁছতে পারেনি তারা। ভারতীয় বোর্ডের একাংশ মনে করছে, ‘‘অবিলম্বে কেন্দ্র সরকারকে টুর্নামেন্ট বাবদ কর দিয়ে দেওয়া উচিত। কারণ সরকারকে অনুরোধ করা যেতে পারে, আইসিসি এসব বিষয়ে শুনবে না। তারা অর্থ নিয়েই ছাড়বে। এটা একান্তই মান সম্মানের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, অন্য দেশে টুর্নামেন্ট চলে গেলে বিপুল ক্ষতি তো হবেই, হাস্যকর বিষয় হবে।’’
বিসিসিআইয়ের জন্য এই সমস্যা অবশ্য নতুন নয়। ২০১১ বিশ্বকাপ ও ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও ভারত নিজের ঘরের মাঠে আয়োজন করে। সেখানেও কর নিয়ে সরকার ও আইসিসির সঙ্গে লড়তে হয়েছে বিসিসিআইকে।
২০১১ সালে কর মুকুব করেছিল কেন্দ্র সরকার। তবে মোদী সরকার ২০১৬ সালে বিসিসিআইকে ছাড় দেয়নি। মাত্র ১০ শতাংশ কর মুকুব করা হয় সেবার। কেন্দ্র সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এবার যদি ভারতীয় বোর্ডকে কর মুকুব করা হয়, তা হলে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপেও দিতে হবে। কারণ সেটাই তখন নিয়ম হয়ে যাবে, তাই এবার কর আদায় করেই ছাড়া হবে।