
বিন্দু থেকে সিন্ধু, শূন্য থেকে শুরু করে পদকের লক্ষ্যে এগোচ্ছেন অতনু ও সতীশ
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দারুণ কিছু ঘটে যাবে, সেটি মনে হয় তাঁরা শুরুতে ভাবেননি। কিন্তু খেলায় একটা ব্যাপার রয়েছে, ধীরে ধীরে কেউ কেউ পিকে ওঠেন, সেইসময় মনে হয় সবকিছু ঠিকঠাক হচ্ছে যখন এবার তাঁরা পারবেন।
বাংলার অতনু দাস ও উত্তরপ্রদেশের সতীশ কুমারের ক্ষেত্রে সেই কথা দারুণভাবে খেটে গিয়েছে। পদকের লক্ষ্যে নামবেন দুই ভারতীয়। অতনু নামবেন শনিবার, আর রবিবার নামবেন সতীশ।
টোকিও অলিম্পিকের প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলার অতনু দাস। লন্ডন অলিম্পিক্সের সোনাজয়ী তিরন্দাজ ওহ জিন হাইককে হারিয়ে দিয়েছেন তিনি। এ বার দলগত বিভাগেও সোনা জিতেছেন ওহ জিন। তাঁর বিরুদ্ধে অতনু শুধু লড়াই করলেন তাই নয়, জিতলেনও।
অন্যদিকে, সতীশ কুমার জিতলেন দাপট দেখিয়ে। কোয়ার্টার ফাইনালে সতীশ রিংয়ে নামবেন উজবেকিস্তানের বাখোদির জালোলভের বিরুদ্ধে। কোয়ার্টার ফাইনাল বাউট জিততে পারলেই পদক জয় নিশ্চিত করবেন ভারতীয় বক্সার। সতীশ আসলে সিপাই, তিনি রাণীক্ষেতে পোস্টিংয়ে থেকে অলিম্পিকে এসেছেন। সতীশ কৃষক পরিবারের ছেলে, তাঁরা তিন ভাই। তিনিও চেয়েছিলেন বাকি দুই ভাইয়ের মতো সেনাবাহিনীতে কাজ করবেন। সেই হিসেবেই সেনাতে যোগ দেন, কিন্তু অচিরেই হয়ে ওঠেন দেশের বক্সিং প্রতিভা।
সতীশের আগে মেয়েদের বক্সিংয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন লভলিনা ও পূজা রানি। দুই ভারতীয় বক্সার নিজেদের কোয়ার্টার ফাইনাল বাউট জিতলেই চলতি টোকিও গেমস থেকে পদক জয় নিশ্চিত করবেন।
পাশাপাশি, বাছাই পর্বে বেশ খারাপ ছিল অতনুর পারফরম্যান্স। কঠিন প্রতিপক্ষের সামনে পড়তে হয় তাঁকে। প্রথম সেটে ২৫-২৬ ব্যবধানে হেরেও যান বাংলার তিরন্দাজ। কিন্তু তারপরেই যেন ছন্দে ফেরেন অতনু। পর পর দুটো সেট ড্র করেন তিনি।
অতনুকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে ছিলেন স্ত্রী দীপিকা কুমারী। অতনু বলেন, “নিজের লক্ষ্য ঠিক রাখতে চেষ্টা করছিলাম। বেশ কঠিন লড়াই ছিল। হার বা জয় ছাড়া কোনও রাস্তা ছিল না, আমি দ্বিতীয়টাই বেছে নিলাম।”
চতুর্থ সেটে ২৭-২২ ব্যবধানে জেতেন অতনু। খেলার ফল হয় ৫-৫। টাই ব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। প্রথম তির ছোড়েন ওহ জিন। ৯ পয়েন্ট পান তিনি। ১০ মারলেই জয়ের সুযোগ। ভুল করেননি অতনু। লক্ষ্যভেদ করেন বাংলার তিরন্দাজ। অতনু বলেন, “আমরা নিজেদের সেরাটা দিচ্ছি। দেখা যাক কী হয়।”
প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে অতনু খেলতে নামবেন জাপানের তাকাহারু ফুরুকাওয়ার বিরুদ্ধে। জিতলেই পদক বাধা বাংলার তিরন্দাজের। অতনুর মতো সতীশও আত্মবিশ্বাসী, বলেছেন, শূন্য থেকে শুরু করে এতদূর এসেছি, এবার আর পিছন ফিরে তাকাব না।