দ্য ওয়াল ব্যুরো: রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে রাজস্থানকে মাত্র ২ রানে হারাল লখনউ। ম্যাচ তখনও শুরু হয়নি। টসের সময় থেকেই গ্যালারিতে গুঞ্জন—কে এই ছোট ছেলেটা? রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে মাঠে নামছে মাত্র ১৪ বছর ২৩ দিনের এক কিশোর, নাম বৈভব সূর্যবংশী। সঞ্জু স্যামসনের চোটে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন বিহারের এই ছেলে। বয়সের তুলনায় দমটা যেন অনেক বেশি!

আইপিএল ইতিহাসে এত কম বয়সে আর কেউ নাম লেখায়নি। বৈভব যেন ইতিহাস গড়তেই নামলেন। লক্ষ্য বিশাল—১৮১ রান। কিন্তু ভয়ডর কী জিনিস, তা যেন ভুলেই গেছেন বৈভব। প্রথম বলেই শার্দুল ঠাকুরকে উড়িয়ে দিলেন বাউন্ডারির ওপারে। রাজস্থানের জার্সিতে এই ছিল তাঁর ‘হ্যালো’ বলা। একের পর এক স্ট্রোক, দারুণ আত্মবিশ্বাস। আর যখন ঋষভ পন্থ তাঁকে স্টাম্প করে দিলেন, স্কোরবোর্ডে তখন লেখা—২০ বলে ৩৪। 

তাঁর সঙ্গে ইনিংস শুরু করা যশস্বী জয়সওয়ালও দারুণ মেজাজে। মাত্র ৩১ বলে পঞ্চাশ। দুই বাঁহাতির তাণ্ডবে রাজস্থান তখন ৮.৪ ওভারে ৮৫/০। মনে হচ্ছিল, ম্যাচ তো অনেক আগেই শেষ করে দেবে তাঁরা! কিন্তু এ ক্রিকেট। এখানে গল্পের মোড় বদলাতেই পারে যেকোনও মুহূর্তে।

বৈভব ফেরার পর ছন্দ হারাল রাজস্থান। নীতীশ রানা দ্রুত আউট। যশস্বী লড়াই করলেন, করলেন ৫২ বলে ৭৪, কিন্তু তিনিও ফিরলেন। সঞ্জুর জায়গায় অধিনায়কত্ব পাওয়া রিয়ান পরাগও করলেন ৩৯, তবে তিনিও বড় সময় থাকতে পারলেন না। শেষ ৪ ওভারে দরকার ৩৩ রান, হাতে ছিল ২ উইকেট। তারপর সেই নাটকীয় চিত্রনাট্য। দিগ্বেশ সিংহ রাঠি দিলেন ৮ রান। এরপর আবেশ খানের জোড়া ধাক্কা, ওভারে মাত্র ৫ রান। রান তাড়া করার সমীকরণ দাঁড়াল—২ ওভারে ২০ রান।

১৯তম ওভারে প্রিন্স যাদব দিলেন ১১ রান। শেষ ওভারে বাকি ৯। প্রথম দুই বলে উঠল ৩ রান। তৃতীয় বলে হেটমায়ার ফিরলেন। চতুর্থ বলে ইয়র্কার, রান নেই। পঞ্চম বলে ক্যাচ পড়ল, তবু হল ২ রান। শেষ বলে দরকার ৪। মেলে মাত্র ১ রান। ১৭৮ রানে থেমে গেল রাজস্থান। মাত্র ২ রানে জিতে নিল লখনউ সুপার জায়ান্টস। কিন্তু ম্যাচটা শেষেও থেকে গেল বৈভব সূর্যবংশীর চোখের জলে।