শেষ আপডেট: 16th June 2024 19:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১২ দিনে ১০০০ কিলোমিটার দৌড়ে রেকর্ড গড়লেন ৫২ বছর বয়সি নাতালি দাউ! থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরজুড়ে দৌড়ে এই অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন মহিলা আল্ট্রাম্যারাথন রানার নাতালি। প্রতিদিন গড়ে ৮৪ কিলোমিটার করে দৌড়েছেন তিনি!
নাতালির এই কীর্তি যে কেবল কঠিন ছিল তা নয়, তিনি যে সব প্রতিকূলতার মুখে পড়েছিলেন, তাতে তাঁর এই সাফল্য একরকম অসম্ভবই হয়ে উঠেছিল বলা যায়। তিনি সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছেন।
নাতালির এই দৌড়ের প্রথম ও প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল, প্রবল গরম। ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি তাপমাত্রায় প্রতিদিন দৌড়ছেন তিনি। রোজ অতিক্রম করেছেন দু'টি ম্যারাথনের সমান দূরত্ব। গরমের জন্য তাঁর রানিং শু গলে গিয়েছিল রাস্তার তাপে। এছাড়াও, দৌড় শুরু করার প্রথম দিনই হিপ জয়েন্টে চোট পান নাতালি। তৃতীয় দিনে তাঁর ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন হয়ে যায়। এই সব চ্যালেঞ্জের মধ্যেই দৌড় চালিয়ে যান তিনি। একটানা ১২ দিন ধরে।
৫ জুন দৌড় শেষ করেন নাতালি। 'দ্রুততম হাজার কিলোমিটার থাইল্যান্ড-সিঙ্গাপুর আল্ট্রাম্যারাথন'-এর রেকর্ডও গড়েন সেই সঙ্গেই। এই ম্যারাথনে নামার জন্য নাতালি গোটা বিশ্বে প্রচার চালিয়েছেন এবং ৫০ হাজার ডলারেরও বেশি টাকা তুলেছেন। এই টাকা তিনি কাজে লাগাবেন স্পোর্টসে বিভিন্ন নারীদের অনুপ্রাণিত করতে।
নাতালি জানান, বয়স্ক ব্যক্তিদের, বিশেষ করে মহিলাদের জন্যই তাঁর এই দৌড়। তিনি চান, সকলেই নিজেদের সীমাবদ্ধতাকে চ্যালেঞ্জ করুক। তাঁর কথায়, 'কবে শুরু করছেন, প্রথম করছেন নাকি শেষ করছেন, তাতে কিছু আসে যায় না। কিন্তু এমন কিছু করুন, যা আপনি আগে করেননি, যা বিশ্ববাসী সচরাচর করে না।'
এই আল্ট্রাম্যারাথনে নাতালিক নিজের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, প্রতিদিনের দৌড়ের ক্লান্তি দূর করে নতুন করে জেগে ওঠা। এক একদিনের দৌড় শেষ করার পরে রোজই তাঁর ভয় করত, পরের দিন হয়তো আর উঠতে পারবেন না, দৌড়তে পারবেন না। হয়তো আর শেষ করতে পারবেন না গোটা রাস্তা। মনে পড়ত পরিবারের কথা। তবু সেই ক্লান্তি, ফোস্কা পড়া পা, পরিবারের কাছে ফেরার অপ্রতিরোধ্য আকাঙ্ক্ষা নিয়েই রোজ ফের দৌড়তে শুরু করতেন তিনি। একসময়ে শেষও করলেন, গড়লেন রেকর্ড।
নাতালির কথায়, 'যেভাবেই হোক দৌড় চালিয়ে যেতে হবে। ফিনিশিং লাইন কতটা দূরে, সেটা নিয়ে ভাবলে হবে না।'