পর্তুগালের ছোট্ট শহরতলি গন্ডোমার, যেখানে বছর আঠাশের জোতা বেড়ে উঠেছেন, সেখানেই প্রিয় সতীর্থকে শেষবার চোখের দেখা দেখতে হাজির হন বিশ্বফুটবলের বিখ্যাত তারকারা।
রোনাল্ডো ও জোতা
শেষ আপডেট: 6 July 2025 11:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এসেছেন লিভারপুলের সতীর্থ ভ্যান ডাইক, অ্যান্ডি রবার্টসন, ম্যানেজার আর্নে স্লট। জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলেছেন যাঁরা, বার্নাডো সিলভা থেকে ব্রুনো ফার্ন্দান্দেজ—প্রত্যেকে অকালপ্রয়াত দিয়োগো জোতার শেষকৃত্যে অংশ নেন। সকলের মুখ বেদনায় ক্লিন্ন, কেউ কাঁদছেন, কেউ কান্না লুকোচ্ছেন রোদচশমার আড়ালে!
পর্তুগালের ছোট্ট শহরতলি গন্ডোমার, যেখানে বছর আঠাশের জোতা বেড়ে উঠেছেন, সেখানেই প্রিয় সতীর্থকে শেষবার চোখের দেখা দেখতে হাজির হন বিশ্বফুটবলের বিখ্যাত তারকারা। প্রত্যেকের পরনে কালো পোশাক। চার্চ চত্বরে ভিড় জমান হাজারো সাধারণ মানুষ। ছিলেন পর্তুগালের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীও। বিশপ মনুয়েল লিন্ডা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
আপাত অর্থে বিষাদ-মলিন এই আয়োজন নিয়ে কোনও কারও বিতর্ক বা বক্তব্য না থাকলেও প্রশ্ন ওঠে অনুষ্ঠান শেষে। যার কেন্দ্রে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তিনি দেশের ফুটবল টিমের অধিনায়ক, জোতার সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে খেলেছেন, গাড়ি দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যুর পর আবেগঘন পোস্ট পর্যন্ত শেয়ার করেছেন… সেই তিনিই কিনা অনুজ সতীর্থর শেষকৃত্যে এলেন না? কেন? কোনও ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সমস্যা? এই মুহূর্তে তো কোনও টুর্নামেন্টে খেলছেন না রোনাল্ডো। তাহলে তিনি গেলেন কই?
এই নিয়ে উস্কে ওঠে জল্পনা। অনেকেই তাঁর দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে সওয়াল তোলেন। আগুনে ঘি ঢালে পর্তুগিজ মিডিয়ার খবর। যেখানে দাবি করা হয়, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো এই মুহূর্তে স্পেনের দ্বীপপুঞ্জ মায়োর্কা, যেখানে ইদানীং প্রায়শই ঘুরতে-বেড়াতে যাচ্ছেন ফুটবল তারকা, যেখানে নাকি সপরিবারে চুটিয়ে কাটাচ্ছেন!
এরপরই দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে ক্ষোভের আগুন। বছর উনচল্লিশের রোনাল্ডোকে একহাত নেন ফুটবল মহলের বড় অংশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় বিদ্রূপ, ট্রোলিং। রিবেইরো ক্রিস্টিয়াভোর মতো পোড়খাওয়া সাংবাদিক ছুড়ে দেন একের পর এক সওয়াল: ‘দিয়োগো জোতা টিমের নিয়মিত সদস্য ছিলেন। হয়তো আর কোনও কারণ রয়েছে। যেটা আমি জানি না। যদি রোনাল্ডো না গিয়ে থাকে, তাহলে তাকে কারণ দর্শাতে হবে। ওর একটা দায়িত্ব রয়েছে। জাতীয় দলের অধিনায়ক রোনাল্ডো!’
সমালোচনার আঁচ যখন বেড়েই চলেছে, তখন জানা যায় আসল কারণ। সামনে আনে বিখ্যাত দৈনিক ‘দ্য মিরর’। যেখানে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন মোতাবেক, রোনাল্ডো স্বেচ্ছায় জোতার শেষকৃত্যে যাননি। ভেবেছিলেন, তিনি গেলে ছোট শহরের উৎসাহী জনতা সমস্ত দুঃখকষ্ট ভুলে তাঁকে দেখতে ছুটে আসবে। সেক্ষেত্রে আয়োজনের উদ্দেশ্য বিঘ্নিত হবে। শোকের অনুষ্ঠান উৎসবের চেহারা নেবে। সেটা হতে দিতে চাননি বলেই রোনাল্ডো নিজেকে সরিয়ে নেন।