এই রান করার পথে রেকর্ডের ঝড় তুলেছেন ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের বর্তমান অধিনায়ক।
শুভমান গিল
শেষ আপডেট: 4 July 2025 08:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ইংল্যান্ড-ভারত চলতি সিরিজের (England vs India Test Series) প্রথম ম্যাচ হেরে গিয়েছিল গৌতম গম্ভীরের ছাত্ররা। সেই ম্যাচের পর লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের পারফরম্যান্স, ফিল্ডিং ও বোলিং দুর্বলতা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে টিম ইন্ডিয়া যেন সব সমালোচনার জবাব দিতে শুরু করে দিয়েছে।
লোয়ার অর্ডারে নেমে অসাধারণ খেলেছেন দুই অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর। ২১১ রানে পতন হয়েছিল ভারতের পঞ্চম উইকেটের। সেখান থেকে ভারতের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৫৮৭ রানে। জাদেজা ও সুন্দরকে নিয়ে অধিনায়ক শুভমান গিল টিম ইন্ডিয়াকে পৌঁছে দিয়েছেন রানের পাহাড়ে। এরপর বোলাররা তাঁদের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। পরপর দুই বলে দু’টি উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে প্রাথমিক ধাক্কা দেন বঙ্গ পেসার আকাশ দীপ। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে তিন উইকেট হারিয়ে ৭৭ রানে।
এদিকে, দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৬৯ রান করার পর থেমেছে ভারতীয় টেস্ট দলের অধিনায়ক শুভমান গিলের ইনিংস। ৩৮৭ বলের ইনিংসে রয়েছে ৩০টি চার এবং তিনটি ছক্কা।
এই রান করার পথে রেকর্ডের (Records) ঝড় তুলেছেন ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের বর্তমান অধিনায়ক। অবশ্য প্রথম টেস্টেও শতকের (১৪৭) দেখা পেয়েছিলেন গিল। ইতিমধ্যেই তিনটি ইনিংসে করে ফেলেছেন ৪২৪ রান।
এজবাস্টনে রবীন্দ্র জাদেজা এবং ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল অর্ধশতক করেন। গিল এবং জাদেজার ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে ওঠে ২০৩ রান। এরপর গিল-ওয়াশিংটন জুটিতে ওঠে ১৪৪ রান।
গিলের রেকর্ডের ঝড়
বিরাট কোহলির পর গিল দ্বিতীয় ভারতীয় অধিনায়ক, যিনি টেস্টের এক ইনিংসে ২৫০ রান বা তাঁর বেশি করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি টেস্টে ভারতের হয়ে এক ইনিংসে সর্বাধিক রান করা অধিনায়কও হয়েছেন। এই ক্ষেত্রে, তিনি কোহলিকে পিছনে ফেলেছেন। কোহলি পুণেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অপরাজিত ২৫৪ রান করেছিলেন।
শুভমান গিল হলেন প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক, যিনি ইংল্যান্ডে দ্বিশতরান করেছেন। এজবাস্টনে গিলের দ্বিশতরান এসেছে ৩১১ বলে। পাশাপাশি গিল চতুর্থ ব্যাটার হিসাবে বিদেশের মাটিতে টেস্টে ২৫০ বা তার বেশি রান করেছেন।
টেস্টে দ্বিশতরান করা ভারতের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হলেন গিল। এই ক্ষেত্রে তিনি শচীন তেন্ডুলকর এবং বিরাট কোহলিকে পিছনে ফেলেছেন। গিল ২৫ বছর ২৯৮ দিনে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। ভারতের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে কম বয়সি দ্বিশতরান করা অধিনায়কের রেকর্ডটি অবশ্য রয়েছে মনসুর আলি খান পতৌদির নামে। পতৌদি ১৯৬৪ সালে দিল্লিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন ২৩ বছর ৩৯ দিনে।
ইংল্যান্ডে অধিনায়ক হিসাবে সবচেয়ে কম বয়সে ডাবল সেঞ্চুরি করার ক্ষেত্রে গিলের চেয়ে এগিয়ে আছেন কেবল দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রেম স্মিথ। ২০০৩ সালে ২২ বছর ১৭৫ দিন বয়সে স্মিথ ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন।
গিল হলেন প্রথম এশিয়ান অধিনায়ক যিনি SENA দেশগুলিতে (দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া) ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন।
টেস্টে ২৫০ রান করা দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক এখন গিল। গিল ২৫ বছর ২৯৮ দিন বয়সে এই কাজটি করেছেন। টেস্টে সবচেয়ে কম বয়সি অধিনায়ক হিসাবে ২৫০ রান করার রেকর্ডটি অবশ্য রয়েছে গ্রেম স্মিথের নামে। তিনি ২০০৩ সালে বার্মিংহামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই কাজটি করেছিলেন।
গিল বিদেশের মাটিতে এক ইনিংসে সর্বাধিক রান করা তৃতীয় ভারতীয় ব্যাটার। এই তালিকার সবার উপরে রয়েছেন বীরেন্দ্র সেওয়াগ। ২০০৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩০৯ রান করেছিলেন বীরু। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়। ভারতীয় ক্রিকেটের ‘দ্য ওয়াল’ ২০০৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২৭০ রান করেছিলেন।
ইংল্যান্ডে এক ইনিংসে সর্বাধিক রান করা ব্যাটার এখন গিল। এই ক্ষেত্রে তিনি কিংবদন্তি ভারতীয় ওপেনার সুনীল গাভাসকরকে ছাড়িয়ে গেছেন। ১৯৭৯ সালে ওভাল টেস্টে সানি ২২১ রান করেছিলেন।
গিল এখন SENA দেশগুলিতে এক ইনিংসে সর্বাধিক রান করা এশিয়ান অধিনায়ক। এতদিন এই দেশগুলিতে এক ইনিংসে সর্বাধিক রান করার রেকর্ডটি ছিল শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ব্যাটার তিলকরত্নে দিলশানের। এই লঙ্কান ওপেনার ২০১১ সালে লর্ডসে ১৯৩ রান করেছিলেন। সামগ্রিকভাবে, গিল SENA দেশগুলিতে সর্বোচ্চ রান করা তৃতীয় এশিয়ান ব্যাটার। তাঁর আগে রয়েছেন পাকিস্তানের জহির আব্বাস (ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২৭৪) এবং জাভেদ মিয়াঁদাদ (নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২৭১)।
এজবাস্টনে গিল পঞ্চম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তাঁর আগে রয়েছেন-অ্যালিস্টার কুক (২৯৪), পিটার মে (২৮৫ অপরাজিত), গ্রেম স্মিথ (২৭৭) এবং জহির আব্বাস (২৭৪)।
ইংল্যান্ডে ভারত তাদের চতুর্থ সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর করেছে বৃহস্পতিবার। এর আগে, টিম ইন্ডিয়া ২০০৭ সালে কেনিংটন ওভালে ৬৬৪, ২০০২ সালে লিডসে ৬২৮/৮ (ডিক্লেয়ার) এবং ১৯৯০ সালে কেনিংটন ওভালে নয় উইকেটে ৬০৬ রান করেছিল।