শেষ আপডেট: 14th January 2025 16:09
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আকাশ জুড়ে শুধুই রঙবেরঙের ঘুড়ি। এদিক ওদিক থেকে ভেসে আসছে একটাই শব্দ- ভোক্কাট্টা! এই সময়টায় চারপাশ ভরে যায় নতুন ধান, খেজুরের গুড় আর পাটালির মোহনীয় সুগন্ধে। বাংলায় নতুন ফসল কাটার আনন্দে পালিত হয় পৌষ পার্বণ। আর মকর সংক্রান্তি শুধুই ফসলের উৎসব নয়, এটি ভারতীয় সংস্কৃতিতে ‘উত্তরায়ণের সূচনা’ হিসেবেও পরিচিত। এই দিনে দেশের আকাশ রঙিন হয়ে ওঠে নানা রঙের ঘুড়িতে। কিন্তু মকর সংক্রান্তির সঙ্গে ঘুড়ি ওড়ানোর এই বিশেষ প্রথার যোগসূত্র কী? কেন এই দিনে ঘুড়ি ওড়ানোর এত বড় ঐতিহ্য? এটাই জানার বিষয়।
ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে মকর সংক্রান্তি এক বিশেষ উৎসব হিসেবে পালিত হয়। এটি ফসল কাটা, সূর্যের পুজো এবং সমৃদ্ধির প্রতীক। প্রতি বছর জানুয়ারির ১৪ তারিখে এই উৎসবটি ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহ্যের সঙ্গে পালিত হয়। গঙ্গাস্নানের বিশেষ তাৎপর্যের পাশাপাশি মকর সংক্রান্তির দিন আকাশ রঙিন ঘুড়িতে ভরে ওঠে। তবে মকর সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানোর ঐতিহ্য কেন রয়েছে, তা নিয়ে অনেকেরই কৌতূহল।
ধর্মীয় বিশ্বাস
প্রাচীন ধর্মীয় কাহিনি অনুযায়ী, মকর সংক্রান্তির দিন ভগবান শ্রী রাম প্রথম ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন। কথিত আছে, তাঁর ঘুড়ি এত উঁচুতে উঠেছিল যে তা ইন্দ্রলোকে পৌঁছে যায়। এই ঘটনাকে স্মরণ করে মকর সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানো শুভ এবং সুখের প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। মানুষ বিশ্বাস করে, ঘুড়ি ওড়ানোর মাধ্যম দিয়ে জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে
মকর সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানোর পিছনে রয়েছে কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ।
১. ভিটামিন ডি গ্রহণের সুযোগ: শীতকালে সূর্যের আলো তুলনামূলক কম পাওয়া যায়, যা শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি তৈরি করতে পারে। সকালে ছাদে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় শরীরে সূর্যের আলো লাগে, যা হাড় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
২. শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য: ঘুড়ি ওড়ানোর সময় শারীরিক পরিশ্রম হয়, যা শরীর সক্রিয় রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পাশাপাশি এটি মেজাজ উন্নত করতে সাহায্য করে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
নিরাপত্তা ও পরিবেশের যত্ন
ঘুড়ি ওড়ানোর সময় কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। যেমন- বৈদ্যুতিক তার ও ছাদের ধারে দাঁড়ানোর সময় সতর্ক থাকুন। আপনার আনন্দের জন্য যাতে অন্যের কোনও রকম ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।