তাঁর মতে, সঠিক নিয়মে জীবনযাপন করলে যেমন শরীর সুস্থ থাকে, তেমনই মনও হয় স্থির ও পরিষ্কার।
প্রেমানন্দ মহারাজ
শেষ আপডেট: 26 June 2025 07:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুধু শরীরচর্চা নয়, প্রকৃত শক্তি আসে ভিতর থেকে। মন, আত্মা আর ঈশ্বরের প্রতি আস্থা, এই তিনের সঙ্গে সামঞ্জস্যের মাধ্যমে। অন্তরের ভারসাম্যই জীবনের চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে। অন্তত এমনই মনে করেন আধ্যাত্মিক গুরু প্রেমানন্দ মহারাজ। তাঁর মতে, সঠিক নিয়মে জীবনযাপন করলে যেমন শরীর সুস্থ থাকে, তেমনই মনও হয় স্থির ও পরিষ্কার। কী সেই নিয়মগুলি? দেখে নেওয়া যাক-
১. ব্রহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে ওঠা
সূর্য ওঠার আগে যে সময়টা থাকে, তাকে ‘ব্রহ্ম মুহূর্ত’ বলা হয়। মহারাজ বলেন, 'এই সময় প্রকৃতির মধ্যে এক বিশেষ পবিত্র শক্তির প্রবাহ থাকে। তাই এই সময় ঘুম থেকে উঠলে মন থাকে শান্ত, ধ্যান ও চিন্তায় আসে স্পষ্টতা, আর সারাদিন ভালভাবে কাটে।
২. প্রতিদিন ধ্যান ও জপ
ঈশ্বরের নাম জপ বা ধ্যান প্রতিদিনের অভ্যাসে রাখলে মন শান্ত থাকে, একাগ্রতা বাড়ে। মহারাজ বলেন, 'ঠিক যেমন শরীর সুস্থ রাখতে দরকার শরীরচর্চা, তেমনই আত্মার শুদ্ধির জন্য দরকার জপ ও ধ্যান। এতে নেতিবাচক চিন্তা দূর হয়।'
৩. সাত্ত্বিক খাদ্যাভ্যাসে ভরসা রাখুন
তাঁর মতে, আমরা যা খাই, তাই আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই পরিশুদ্ধ, নিরামিষ, ঘরোয়া খাবার, যেমন শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, শস্য, এগুলি খেলে শরীর যেমন পুষ্ট হয়, তেমনই মন থাকে শান্ত।
৪. ব্রহ্মচর্য পালনে জোর
নিজের চিন্তা, ইচ্ছা ও কর্মে সংযম রাখাই হল ব্রহ্মচর্য। মহারাজ মনে করেন, এই আত্মনিয়ন্ত্রণই ধীরে ধীরে তৈরি করে শারীরিক ও মানসিক বল। খুব সহজেই জীবনের প্রতি আসে নিয়ন্ত্রণ ও স্পষ্টতা।
৫. নিঃস্বার্থ সেবা বা ‘সেবা’
অন্যকে নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করলে হৃদয় প্রসারিত হয়, অহংকার ক্ষয় পায়। মহারাজ বলেন, 'সত্যিকারের শক্তি শুধু পেশিতে থাকে না, তা থাকে সহানুভূতি, সহিষ্ণুতা ও নম্রতার মধ্যে।'
৬. সাধু-সঙ্গ ও শাস্ত্র পাঠ
প্রতিদিন কিছুটা সময় ঈশ্বরচিন্তা, পবিত্র মানুষদের সান্নিধ্য অথবা ধর্মগ্রন্থ পাঠে মনোনিবেশ করলে মন ইতিবাচক থাকে। তাঁর মতে, এটি যেন রোজকার একটি চার্জিং পয়েন্ট, যা মনকে নির্মল করে, সংকল্পকে দৃঢ় করে।
মহারাজ প্রেমানন্দের মতে, বাহ্যিক শক্তির চেয়ে অনেক বড় হল অন্তরের বল। সেই শক্তি জাগে নিয়মিত অভ্যাস, সংযম, সদগুণ আর আত্মিক চর্চার মাধ্যমে। আর সেই পথেই রয়েছে সত্যিকারের শান্তি ও সাফল্যের চাবিকাঠি।