Advertisement
Advertisement
শেষ আপডেট: 9 February 2024 14:22
সংসারী মানুষের জীবনে মৌনী অমাবস্যার একটা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। আমরা সব সময়েই চাই অর্থ সম্পত্তিতে ভরে থাকুক জীবন। যা পেয়েছি তাতে আমাদের সন্তুষ্টি নেই। বেশির ভাগ মানুষ ছোটেন আরও আরও ধনসম্পদের পিছনে। ফলে হিংসা কলহ বাড়ে, জীবনে অশান্তি আসে। শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতরা বলেন, 'মৌনী অমাবস্যা নিজেকে সংযত করার দিন। এই দিন খারাপ চিন্তা মনে আনবেন না। কারও সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি বা গালাগালি করবেন না। এতে জীবনে অশুভ প্রভাব পড়বে।'
• মৌনী অমাবস্যায় পজেটিভ এনার্জি বাড়াবেন কী করে?
মৌনী অমাবস্যার দিনটি নিজেকে সবদিক থেকে সংযত রাখার অভ্যাস শুরু করার দিন, বললেন স্বনামধন্য জ্যোতিষী শিবশংকর ভারতী। 'অনেক অসাধু তান্ত্রিক জ্যোতিষী মৌনী অমাবস্যাকে তাবিজ কবচ তৈরির দিন হিসেবে দেখাতে চান। এটা একেবারেই ঠিক নয়। আমি মনে করি এই অমাবস্যা নিজের মনের মুখোমুখি হওয়ার দিন।' জানালেন জ্যোতিষী।
শিবশংকর ভারতীর ব্যাখ্যা থেকে যা বোঝা যাচ্ছে তা হল, রোজের জীবনে আমরা এমন অনেক কাজকর্ম করতে বাধ্য হই বা করে থাকি যা আমাদের করা উচিত নয়। অনেক সময় নিজের স্বার্থের জন্য অপরের অমঙ্গল চিন্তা করি, সম্পত্তি দখলের জন্য কলহ হানাহানিতে লিপ্ত হই বা নিজের ক্রোধ সংবরণ করতে না পেরে মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ফেলি, গালাগালি দিয়ে ফেলি। এতে জীবনে নেগেটিভ এনার্জি বেড়ে যায়। পজেটিভ এনার্জি বাড়াতে এই দিন কারও অমঙ্গল চিন্তা করবেন না, কাউকে কটু কথা বলবেন না। নিজেকে সংযত রাখার জন্য অনেকে এই দিন মৌনব্রত পালন করেন। এটা প্রতীকী।
• মাঘমাসের এই তিথির নাম মৌনী অমাবস্যা কেন?
অনেকের মতে, ঋষি মনু এই তিথিতে জন্মেছিলেন বলে এটির নাম হয়েছে মৌনী অমাবস্যা। আবার অনেকে বলেন এই তিথিতে মৌনব্রত পালন করলে অশুভ শক্তির বিনাশ হয় বলে তিথির নাম হয়েছে মৌনী অমাবস্যা। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী মনের দেবতা চন্দ্রদেব। মাঘী অমাবস্যার রাতে আকাশে চন্দ্রদেবকে দেখা যায় না। অন্য অমাবস্যার তুলনায় এই অমাবস্যার রাত অনেক বেশি ঘন কালো হয় তাই মানুষের মন বিচলিত ও অশান্ত হয়ে ওঠে। মনকে শান্ত করার জন্যই মৌনব্রত পালন করা হয়। তাই এই অমাবস্যার নাম মৌনী। নামের ব্যাখ্যা যাই হোক না কেন শাস্ত্রজ্ঞরা স্বীকার করেন মৌনী অমাবস্যার তিথি হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব আছে।
বৈদিক পঞ্জিকা অনুসারে আজ সকাল ৮ টে বেজে ১ মিনিটে মৌনী অমাবস্যা শুরু হয়েছে। আগামীকাল ১০ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টে ২৯ মিনিটে শেষ হবে এই তিথি। পুরাণ মতে, মৌনী অমাবস্যায় গঙ্গা স্নান করলে সব পাপ ধুয়ে যায়। এই অমাবস্যায় প্রয়াগরাজে সাগরসঙ্গমে গুরুজনের পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম করলে তাঁদের আত্মার শান্তি হয় এবং অশুভ শক্তির বিনাশ হয় বলে মনে করেন পণ্ডিতরা।
• মৌনী অমাবস্যা পালনের রীতিনীতি মাঘ মাসের এই অমাবস্যা প্রত্যেকের পালন করা দরকার বলে মনে করেন শাস্ত্রজ্ঞ ও জ্যোতিষীরা। কারণ মৌনী অমাবস্যা পালন করলে পজেটিভ এনার্জি বেড়ে যায়, অশুভ শক্তির বিনাশ হয়। সংসারে সুখ সমৃদ্ধি ফিরে আসে। কীভাবে পালন করবেন জেনে নিন।
• গঙ্গা বা কোনও পবিত্র নদীর জলে স্নান করে দিন শুরু করবেন। নদীতে যাওয়া সম্ভব না হলে স্নানের জলে কয়েক ফোঁটা গঙ্গাজল মিশিয়ে স্নান করুন।
• সাধ্য মতো দান করুন।
• কালো তিল, তিলের তেল, তিলের নাড়ু, আমলকি দান করুন।
• স্নানের পর সূর্যদেবকে প্রণাম করুন। দুধ ও তিলের বীজের অর্ঘ্য সূর্যদেবকে অর্পণ করলে সব আটকে যাওয়া কাজ সম্পূর্ণ হবে এবং মনের সব ইচ্ছে পূর্ণ হবে।
• খারাপ চিন্তা করবেন না। ঝগড়াঝাঁটি গালাগালি করবেন না। সুস্থ চিন্তা করুন। পজেটিভ থাকুন।
Advertisement
Advertisement