বিশ্বাস, বিপত্তারিণী আরাধনায় মনের কামনা পূরণ হয়, আর পরিবারের সমস্ত অমঙ্গল দূর হয়ে আসে কল্যাণ। বিশেষ করে মা ও সন্তানের মঙ্গল কামনায় এই ব্রতের প্রচলন বেশি।
ছবি সৌজন্যে- গুগল
শেষ আপডেট: 28 June 2025 10:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আজ শনিবার, আষাঢ় মাসের শুক্লা তৃতীয়া। দিনটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যের। কারণ বিপত্তারিণীপুজো। বাংলার ঘরে ঘরে ভক্তিভরে উদযাপিত হয় এই প্রাচীন ব্রত। লোকবিশ্বাস, এই ব্রত পালন করলে জীবনের সমস্ত বাধা, দুঃখ ও অমঙ্গল থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
মূলত মহিলারাই এই ব্রতে অংশগ্রহণ করেন। আজকের দিনে সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষত কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু গ্রামে-শহরে ঘরে ঘরে চলছে এই পুজো। কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর, বরানগরের আনন্দময়ী কালীমন্দির, এমনকি শহরতলির রাজপুরে অবস্থিত বিপত্তারিণীদেবীর বিখ্যাত মন্দিরে আজ সকাল থেকেই উপচে পড়েছে ভক্তদের ঢল।
কে এই বিপত্তারিণী?
দেবী দুর্গারই এক বিশেষ রূপ। সিংহবাহিনী, হাতে খড়্গ, ত্রিশূল, বরাভয় ও অভয়মুদ্রা। কোথাও তিনি রক্তবর্ণা, কোথাও কৃষ্ণবর্ণা কালীস্বরূপ। হিন্দু পুরাণমতে, প্রাচীন ঋষি মার্কণ্ডেয় মুনি বিপত্তারিণীব্রতের মাহাত্ম্য প্রচার করেন। আবার অনেকের মতে, এই দেবী বাংলার নিজস্ব লৌকিক বিশ্বাসের ফসল।
বিশ্বাস, বিপত্তারিণীর আরাধনায় মনের কামনা পূরণ হয়, আর পরিবারের সমস্ত অমঙ্গল দূর হয়ে আসে কল্যাণ। বিশেষ করে মা ও সন্তানের মঙ্গল কামনায় এই ব্রতের প্রচলন বেশি।
পুজোর নিয়ম
আজকের দিনটিতে উপবাস পালন করেন বহু মহিলা। ব্রতের নিয়ম অনুযায়ী, আগের দিন খেতে হয় নিরামিষ। ব্রতের দিন অর্থাৎ আজ, উপবাসে থেকে হাতে বাঁধা হয় লাল সুতো, যাতে গাঁথা থাকে তেরোটি গিঁট এবং তেরোটি দুর্বা। তেরো রকম ফল ও তেরো রকম ফুল দিয়ে পুজো হয় দেবীর।
অনেকেই পুজোর দিন নদী বা পুকুরে স্নান করে দণ্ডী কেটে পুজোস্থলে পৌঁছন। সেজন্যই শনিবার ভোর থেকে ভিড় কলকাতা-সহ শহরতলির বিভিন্ন গঙ্গার ঘাটে।
চাল-গম নয়, উপবাসেই পুণ্য
বিশ্বাস রয়েছে, আজকের দিনে চাল ও গম জাতীয় কিছু না খাওয়াই ভাল। সন্ধ্যায় পুজোর পরে উপবাস ভাঙেন অনেকে, কেউ ভোগ রান্না করেও পরিবেশন করেন। তবে, চাল এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
কবে ফের এই ব্রত?
এই বছর বিপত্তারিণীর দ্বিতীয় পুজো পড়ছে ২ জুলাই, মঙ্গলবার। কারণ রথযাত্রা ও উল্টোরথের মধ্যবর্তী শনিবার ও মঙ্গলবারেই পড়ে বিপত্তারিণীব্রতের নির্দিষ্ট দিন। আজ নিয়ম মানতে পারলেও ২ জুলাই পরিবারের কল্যাণে সঠিক নিয়ম মেনে বিপত্তারিণীপুজো করুন।