শেষ আপডেট: 1st February 2025 18:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'গর্ব হচ্ছে শাড়িটা বানিয়ে' বললেন পদ্ম পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী দুলারি দেবী। যেমন তেমন শাড়ি নয়। তিনি বানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের শাড়ি। আবেগ, নৈপুন্য, নিজের সৃষ্টির সমস্তটা ঢেলে দিয়েছিলেন নামমাত্র হ্যাল্ডলুম সিল্কের একটি কাপড়ে। নামমাত্র যদিও আর বলা যায় না। কারণ দেশের অর্থমন্ত্রী ওই শাড়িটি রোজকার অধিবেশন বা কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানে পরেননি। পরেছিলেন শনিবার বাজেট পেশ করতে গিয়ে। দুলারি দেবীর বানানো শাড়িটির সঙ্গে তাই আজ মিশে গেল বাজেটের ঐতিহ্য। দেশে যতদিন বাজেট ইস্যুতে কথা হবে, নির্মলা সীতারমের প্রসঙ্গে উঠবে। ততদিন চর্চিত হতে থাকবে দুলারি দেবীর কাজ। সকলের চোখে ভেসে উঠবে একটি মধুবনী শাড়ির গল্প।
মধুবনী প্রিন্ট। বিহারের মিথিলার ঐতিহ্য। দেশের গর্ব। এই প্রিন্টের শাড়ি পরে নির্মলা সীতারমন ঠিক কী বার্তা দিলেন, তা রাজনীতির বিষয়। এমন এক শিল্পকলাকে দেশের সকলের সামনে এমন এক দিনে তুলে ধরে তিনি যে শিল্পীদের মনোবল চাঙ্গা করলেন, তা বলা বাহুল্য।
দুধ সাদা ব্যাঙ্গালোর সিল্কে হালকা সোনালি পাড়ের শাড়িটি হাতে এসেছিল দুলারি দেবীর। তাকেই ক্যানভাস বানিয়ে মনের মাধুরি মিশিয়ে তৈরি করলেন অন্যতম বিশেষ শাড়ি। কী কী ছিল শাড়ির নকশায়? শিল্পী জানান, মাছ যুগল ও পদ্ম ছিল অনেকটা জুড়ে। বাকিটায় মিথিলাঞ্চলের মাখানা, মাছ ও পান জায়গা করে নেয়।
মিথিলা পেইন্টিং ইনস্টিটিউটে অর্থমন্ত্রী গিয়েছিলেন গত বছরের নভেম্বরে। সেখান থেকেই শাড়িটি তাঁর হাতে ২৯ তারিখ তুলে দেওয়া হয়।
এই শাড়ির জন্য আগাম কোনও প্রস্তুতি নেননি শিল্পী। জানান, অর্থমন্ত্রী তাঁর থেকে জানতে চেয়েছিলেন কোনও ছবি আঁকতে তিনি আগে থেকে কিছু পরিকল্পনা করেন কিনা। শিল্পী জানান, শাড়িটির কাজ শুরুর সময় কিছুই তেমন ভাবেননি তিনি। একটা তুলি নিয়ে বসে গেছিলেন। তারপর মাথায় যা আসে তাই দিয়ে কাজ করে গিয়েছেন।
এই কাজ তিনি কাপুরি দেবীর কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তাঁর কাছেই কাজ করেন শিল্পী। ছবি আঁকার পাশাপাশি মহিলাদের উন্নয়নের জন্য আওয়াজ তোলেন। কাজ করেন এইডস, বাল্যবিবাহ রোধ নিয়েও। প্রতিবাদের ভাষা রং-তুলি ও ক্যানভাস। এপর্যন্ত ৫০টি প্রদর্শনীতে জায়গা হয়েছে তাঁর ১০ হাজারটি ছবির।
দুলারি দেবীর সাজানো ক্যানভাস শনিবার শোভা পেল অর্থমন্ত্রীর গায়ে। লাল ব্লাউজের সঙ্গে মিলিয়ে শাড়িটি পরেছিলেন তিনি। সামনেই বিহার নির্বাচন, তাই এই শাড়ি আজকের দিনের জন্য বেছে নেওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ফ্যাশানিস্তারা যদিও বাহবা জানালেন তাঁর ফ্যাশন সেন্সের।