মোটে ১২ বছরের কেরিয়ার। বয়সও মেরেকেটে ৩২-৩৩ বছর। এরমধ্যেই গোটা দেশজুড়ে নিজের আলাদা ফ্যানবেস তৈরি করে ফেলেছেন এই সঙ্গীত পরিচালক। ছবির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আবহ সঙ্গীত বানানো যেন জলভাত করে ফেলেছেন তিনি।
কাজ শুরু করেছিলেন ধনুষের সঙ্গে। এরপর কমল হাসান থেকে থালাপতি বিজয়—বহু দক্ষিণী তারকার ছবিতেই তিনি সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। এবার তাঁর বানানো গান শোনা যাবে বলিউডের ‘বাদশা’ শাহরুখ খানের নতুন ছবিতেও।
সূত্রের খবর, শাহরুখের ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করার জন্য ১০ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন তিনি। শুধু ‘কিং খান’ বলেই না, এখন যে কোনও ছবিতেই গান বানানোর জন্য তিনি এই পরিমাণ টাকাই নিয়ে থাকেন।
মজুরির দিক দিয়ে পিছনে ফেলেছেন অস্কারজয়ী সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমানকেও। জানা গিয়েছে, সঙ্গীত পরিচালকদের মধ্যে পারিশ্রমিক নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনিই শীর্ষে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কে এই সঙ্গীত পরিচালক, যিনি রহমানের মতো শিল্পীকেও টপকে গিয়েছেন?
এই তরুণ তারকার নাম অনিরুদ্ধ রবিচন্দ্র। শাহরুখের সঙ্গে ‘জওয়ান’ ছবিতে কাজ করে বলিউডে পা রাখলেন তিনি। শুধু সঙ্গীত পরিচালনা করেই তিনি যে পারিশ্রমিকটুকু পেয়েছেন, তা অভিনয় করে অনেক বড় তারকাও পাননি।
২০১১ সালে ‘কোলাভেরি ডি’ গানের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ হয় অনিরুদ্ধের। তামাম ভারত সেই গানে বুঁদ হয়ে ছিল একসময়। রাতারাতি দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়েছিলেন অভিনেতা ধনুষও। সেটাই প্রথম কোনও ভারতীয় গানের ভিডিও, যা ইউটিউবে ১০০ মিলিয়ন ভিউ হয়েছিল।
মাত্র ২০ বছর বয়সে এমন নজির, এমন কৃতিত্ব আর কোনও সঙ্গীত পরিচালকের রয়েছে কিনা, জানা নেই অনেকেরই। কেরিয়ার শুরুর আগে লন্ডনের ট্রিনিটি মিউজিক কলেজে পিয়ানো নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন। সেটাই জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।
দেশে ফিরেই প্রথম কাজ করলেন ধনুষের সঙ্গে। অভিনেতার সঙ্গে অনিরুদ্ধের পারিবারিক সম্পর্কও ছিল সেসময়। জানা গিয়েছে, সুপারস্টার রজনীকান্তের শ্যালকের ছেলে অনিরুদ্ধ। এদিকে ধনুষ তখনও রজনীকান্তের জামাই। সে অর্থে তাঁর শ্যালক-ভগ্নিপতি সম্পর্ক ছিল অভিনেতার সঙ্গে।
এরপর একাধিক ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করার পর ২০১৬ সাল থেকে মিউজিক প্রোডিউসার হিসাবেও কাজ করা শুরু করেন তিনি। ওই একই বছরে তিনি কাজ করেন বিখ্যাত আমেরিকান ডিজে তথা মিউজিক প্রোডিউসার ডিপলোর সঙ্গেও।
সামনেই তাঁর প্রথম হিন্দি ছবি মুক্তি। শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’ বেরোবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর। এরপর কমল হাসানের ‘ইন্ডিয়ান ২’, জুনিয়র এনটিআরের ‘দেবারা’, রজনীকান্তের ‘জেলার’-এর মতো একাধিক ছবি অনিরুদ্ধের পাইপলাইনে।
তাই এ কথা হলফ করে বলাই যায় যে, অনিরুদ্ধ বর্তমানে শুধুই সর্বোচ্চ উপার্জনকারী সঙ্গীত পরিচালক নন, ব্যস্ততম সঙ্গীত পরিচালকও বটে। আর সেদিক থেকেও তিনি পিছনে ফেলেছেন এ আর রহমান, এম এম কিরাবানিদের।