শেষ আপডেট: 26th November 2023 17:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১৫ বছর নেহাতই কম সময় নয়। প্রত্যেক বছর এই দিনটাতে অনেকেরই মনে পড়ে যায় বাণিজ্য নগরী 'মুম্বই'য়ের অভিজাত হোটেল 'তাজ'-এর ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা কুণ্ডলী পাকানো কালো ধোঁয়ার দৃশ্য। মনে পড়ে যায় চারদিন ধরে চলতে থাকা দুঃস্বপ্নের স্মৃতিকে, মনে পড়ে যায় জঙ্গিদের গুলিতে নিহত নিথর দেহের দৃশ্য। মনে পড়ে যায় নিরীহ মানুষগুলোর আর্তনাদ, মনে পড়ে যায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রাউন্ড জিরো থেকে খবর পাঠানো সেই সাংবাদিকদের।
১৫ বছর কেটে গেছে, ক্ষতর দাগও অনেকটা মিলিয়ে গেছে, মিলিয়ে যায়নি সেই দুঃস্বপ্নগুলো। 'লস্কর-ই-তইবা' দলের ১০ জন জঙ্গি ১৫ বছর আগে এই দিনেই ঢুকে পরে মুম্বইয়ে। পুরো শহরটাকে গ্রাস করে আতঙ্ক। চারদিন ধরে চলে জঙ্গিদের নিরীহ মানুষদের হত্যালীলা, প্রতিরক্ষা বাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে এক ভয়ঙ্কর সংঘর্ষ। মোট ১৬৬ জন মারা যায় এই ভয়াবহ হামলায়।
চারজন জঙ্গি মুম্বইয়ের তাজ হোটেলে ঢুকে হোটেলের মধ্যে এবং বাইরে বিভিন্ন জায়গায় গুলি ও গ্রেনেড ছুড়তে শুরু করে। তাজের উপরের ঘরগুলি থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে দেখে পুলিশ-প্রশাসন ছুটে যায় ঘটনাস্থলে।
পুলিশ ও সিকিউরিটি ফোর্স পুরো তাজ হোটেলকে ঘিরে ফেলে। শুরু হয় হোটেলের ভেতর আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারকাজ।
তাজ হোটেলের বাইরে চলতে থাকে সাংবাদিকদের রিপোর্টিং। নভেম্বরের ২৬ থেকে ২৯ পর্যন্ত দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে প্রশাসন জানায় যে তাজ হোটেল জঙ্গিমুক্ত।
ভারতীয় সৈনিকদের 'ওবেরয়-ট্রাইডেন্ট' হোটেলের বাইরেও পাহারা দিতে দেখা যায়। কারণ, ২৬/১১-তে মুম্বইয়ের কেবল একটি হোটেলে জঙ্গিরা হামলা করেনি। 'তাজ' এবং 'ওবেরয়-ট্রাইডেন্ট' এই দুটি হোটেল মিলিয়ে মোট ৮০০টি ঘরে হামলার দিন রাতে অনেক বিদেশী পর্যটক আটকে ছিলেন বলেও জানা যায়।
সেইসময়ের মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ওবেরয়-ট্রাইডেন্ট হোটেলে উদ্ধারকার্য চালিয়ে মোট ১৪৩ বন্দি ও ২৪ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়। ওবেরয়ের ৪ তলায় গোলাগুলি চলা শুরু হলে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ আরও বেড়ে যেতে দেখা যায়।
ওবেরয়ের উদ্ধারকার্য শেষ হয় নভেম্বর ২৮-এর রাতে। ততক্ষণে হোটেলের ভেতরে থাকা দুজন জঙ্গিকেই মেরে ফেলা হয়েছে।
২৬/১১ হামলায় শহীদ হওয়া প্রত্যেকটি মানুষের জন্য আজও মুম্বইয়ের রাস্তায় বের হয় মোমবাতি মিছিল।