শেষ আপডেট: 13th May 2022 12:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ৩৩ কোটি দেবদেবীর দেশ ভারতবর্ষে যেমন মন্দির, মসজিদ, গির্জার কোনও শেষ নেই, তেমনই ভৌতিক স্থানেরও (Haunted Place) অভাব নেই। প্রতিটি জায়গা নিয়েই রয়েছে নানা গা ছমছমে গল্প এবং ইতিহাস। সেসব শুনে কেউ ভয় পান, কেউ বা বিশ্বাসই করেন না। কেউ আবার অ্যাডভেঞ্চারের টানেই পৌঁছে যান সেসব জায়গায়।
এডিট করা ছবি নয়, সত্যিই এমন স্বচ্ছ! পাহাড়ি গাঁয়ের ছোট্ট নদী যেন স্ফটিকে গড়া
দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই আনাচকানাচে রয়েছে এই জায়গাগুলি (Haunted Place)। নানা রহস্য, কিংবদন্তী, লোককথার মিশেলে তার কিছু আবার স্বনামধন্য। কোনও জায়গায় স্থানীয় পরামর্শে সূর্য ডোবার পরে যাওয়া নিষিদ্ধ, কোথাও আবার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্বয়ং সরকার। সেই তালিকায় রয়েছে আমাদের রাজ্যের দুটি জায়গাও।
দেখে নিন ছবি।
পুরুলিয়ার বেগুনকোদর স্টেশন। ১৯৬৭ সালে একজন রেলকর্মী অভিযোগ করেন যে তিনি স্টেশনে একজন মহিলার আত্মাকে দেখেছেন। গুজব রটে যায় যে সেই মহিলা রেল দুর্ঘটনার কারণে মারা গিয়েছিলেন। এরপর ঘটে যায় এক অস্বাভাবিক ঘটনা। নিজের কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার হয় স্বপরিবার স্টেশন মাস্টারের মৃতদেহ। ফলে রহস্যময় উপকথা মানুষের মুখে মুখে ঘুরতে থাকে। ভয়ে স্টেশনের দিকে পা বাড়ান না কেউ। এখন এই স্টেশনে প্রতিদিন ১০টি যাত্রীবাহী ট্রেন থামলেও, এখনও যাত্রীরা সূর্যাস্তের পর স্টেশনে যেতে ভয় পান। কেউ বলেন স্টেশনে ভৌতিক আবহাওয়া বজায় রাখার জন্য কিছু স্থানীয় মানুষই উদ্যোগ নেন। এরফলে এলাকায় পর্যটকদের সমাগম হয়। সত্যি মিথ্যা কেউ জানে না।
গুজরাটের সুরাত শহরের প্রায় গা ঘেঁষে চলে যাওয়া আরব সাগরের ডুমস সমুদ্র সৈকতে সূর্যাস্তের পরে যাওয়াই দায়। স্থানীয়দের দাবি, রাতের বেলা নাকি সমুদ্র সৈকত থেকে নানা অস্বাভাবিক শব্দ শোনা যায়। অস্বাভাবিক কান্না, হাসির রব। সেসব ধ্বনি নাকি এই বিশ্বের নয়। বাইরের বিশ্বের। কোনও অবাধ্য পর্যটক যদি রাতের বেলা সৈকতে কাটাতে চান তাহলে তিনি নাকি আর ফিরে আসেন না। একবার এক পর্যটকের মৃতদেহও উদ্ধার হয়েছিল ডুমস সমুদ্র সৈকত থেকে।
অসমের ডিমা হাসাও জেলার জাটিঙ্গা গ্রামে প্রতি বছর পাখিদের আত্মহত্যার ঘটনা অবাক করে বহু মানুষকে। আর এই ঘটনা চাক্ষুস করতেই বছরের পর বছর দেশ বিদেশের পর্যটকের দল সেখানে গিয়ে পৌঁছোয়। সেপ্টেম্বর মাসের নির্দিষ্ট একটি সপ্তাহ থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই গ্রামে চলে পরিযায়ী পাখিদের আত্মহত্যার ঘটনা। কোন রহস্যময় কারণে এখানে পাখিরা আত্মহত্যা করে তা আজও জানা যায়নি।
কার্শিয়ঙের ভিক্টোরিয়া বয়েজ হাই স্কুল এবং ডাউহিল গার্লস্ হাইস্কুলে নাকি অশরীরীরা বহাল তবিয়তে বাস করে। অশরীরী হলেও তাদের পায়ের শব্দ নাকি রাতের বেলা স্পষ্ট শোনা যায়। দার্জিলিং থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ডাউহিল দেশের সবচেয়ে ভৌতিক শৈল শহরের মধ্যে একটি। স্থানীয়দের দাবি এই রাস্তা দিয়ে একটি কিশোরকে একাধিকবার যেতে দেখেছেন তাঁরা। রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে সে কুয়াশার মধ্যে মিলিয়ে যায়। কখনও সেই পথে দেখা যায় ধূসর রঙের পোশাক পরা এক মহিলাকে। এসব দেখে ভয় পেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
ভানগড়ের দুর্গ। বিশ্বাস, দুর্গের ভিতর নাকি অশরীরীরা বাস করে। অন্ধকার নামলেই তাদের শক্তি বাড়তে থাকে। তাই সন্ধ্যা নামলেই তাদের এলাকা ফাঁকা করে দিতে হবে। না হলে তেনারা যে কখন মানুষের ঘাড়ে চাপবে তা কেউ জানে না। সপ্তদশ শতাব্দীতে তৈরি এই দুর্গের ভিতরে প্রবেশ করলে অতি বড় সাহসীও খানিকটা দমে যান। আজও নাকি কেউ অবাধ্য হয়ে রাতেরবেলা দুর্গের ভিতর প্রবেশ করলে আর ফিরে আসে না।
মুম্বইয়ের মহিম অঞ্চলের ডি'সুজা চৌল কিন্তু আজও ভূতুরে তকমা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুম্বইয়ের এই চৌলটিতে বাস করে বহু পরিবার। চৌলের মাঝে রয়েছে একটি কুয়ো। কুয়োটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, অতীতে এলাকার সেই কুয়ো থেকে জল তুলতে গিয়ে সেই কুয়োতেই পড়ে যান এক মহিলা। সেই মহিলার অতৃপ্ত আত্মা নাকি এখনও প্রতি রাতে এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই নাকি তাঁকে দেখেছেন।