শেষ আপডেট: 24th May 2022 12:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পেটে খেলে তবেই না পিঠে সয়। খাবারের সঙ্গে তাই আপোষ করা যায় না। আর বাঙালি মানেই খাদ্যরসিক। এদেশের খাবারদাবার তো আছেই, সুযোগ পেলে বিদেশি খাবারেও কামড় বসানো বাঙালির মজ্জাগত। আপনিও কি বিদেশে ঘুরতে যাবেন ভাবছেন (Food Destination)? ঘুরতে গেলে খাওয়াদাওয়া নিয়ে যাঁদের শৌখিনতা থাকে, বিদেশে ঘুরতে যাওয়ার আগে কিন্তু তাঁদের ভাল করে প্ল্যানিং করতেই হবে। কারণ সব জায়গায় তো আর মনের মতো খাবার পাওয়া যায় না। আজকের প্রতিবেদনে রইল সেরা কিছু বিদেশি ফুড ডেস্টিনেশন, দেশের বাইরে গেলে যেসব জায়গার খাবার একবার অন্তত চেখে না দেখলেই নয়।
হাওয়াইয়ের ওয়াহু দ্বীপ খাবারের জন্য পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরের এই ছোট্ট দ্বীপে প্রতিবছর প্রচুর মানুষ ঘুরতে যান। সমুদ্রের ধারে বসে ওয়াহুর বিখ্যাত ম্যাকাডামিয়া নাট ক্রাশ ফিশ কিংবা স্প্যাম মাসুবির স্বাদ নেওয়ার মজাই আলাদা। এছাড়া এখানে রয়েছে ফোই গ্রাস নিগির, নারকেলের পুডিংয়ের মতো দুর্দান্ত কিছু খাবার। ঘোরা তো হবেই, সঙ্গে পেটপুজোটাও জমে ক্ষীর।
বিদেশে ঘুরতে যাওয়ার সবচেয়ে ভাল চয়েস বোধ হয় ফ্রান্স। তবে যারা খেতে ভালবাসেন, তাঁরা কিন্তু চিরাচিরত প্যারিসের হাতছানি এড়িয়ে চলে যেতেই পারেন বারগেন্ডি। এখানকার বিখ্যাত একটা স্থানীয় খাবার এসকরগটস। এটি শামুকের এক ধরনের জিভে জল আনা পদ। বারগেন্ডি গিয়ে একবার তা চেখে দেখতেই হবে।
আর্জেন্টিনায় আন্দিজ পর্বতের গা ঘেঁষে রয়েছে ছোট্ট শহর মেনদোজা। সাজানো গোছানো নিরিবিলি এই শহরে বহু মানুষ যান ঘুরতে। মেনদোজা বিখ্যাত এখানকার হরেকরকমের ব্রেকফাস্টের জন্য। ব্রেকফাস্টের এত ভ্যারাইটি আর কোথাও নেই। গ্রিলড স্টেক থেকে শুরু করে কেক, পেস্ট্রি, প্যাটিস- জিভে জল আনা সব খাবার সাজিয়ে পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে এই দক্ষিণ আমেরিকান শহর।
খাওয়াদাওয়ার জন্য আদর্শ জায়গা এই সিওল। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী শহরটিতে রাস্তায় রাস্তায় সাজানো রয়েছে স্ট্রিট ফুড। স্ট্রিট ফুডের চোখ ধাঁধানো, মনমাতানো বৈচিত্র্যে সেজেছে সিওল। আমিষ, নিরামিষ, নোনতা-ঝাল-মিষ্টি, সবরকমের মুখরোচক খাবার সিওলে পাওয়া যায়। শুধু খেতেই প্রতিবছর দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক এই শহরে ভিড় করেন।
বিখ্যাত খাবারের ডেস্টিনেশন ফ্রান্সে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। প্রোভিয়েন্স শহরের মাছের নানারকম আইটেম খাদ্যরসিকদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। বৌল্লাবাইসি তো একেবারে লা জবাব। এখানকার খাবারে রসুন, টমেটো এবং সর্বোপরি ওয়াইন বেশি করে ব্যবহৃত হয়। বিদেশি খাবার যে কত সুস্বাদু, একবার চেখে না দেখলেই নয়।
বিদেশি ফুড ডেস্টিনেশনের মধ্যে ফ্রান্স, ইতালির পাশাপাশি স্পেনও কিছু কম যায় না। এখানকার সেন্ট সেবাস্টিয়ান পেটুকদের স্বর্গরাজ্য। দীগন্ত বিস্তৃত সমুদ্র আর তার পাড়ে বসে সামুদ্রিক লবস্টারে কামড়- সে এক অতুলনীয়, অপার্থিব অনুভূতি। অক্টোপাস থেকে শুরু করে পমফ্রেট, ফো গ্রাস সব হাতেগরম পাওয়া যায় এই উপকূলীয় শহরে। কোয়েল পাখির ডিমও এখানে খুব জনপ্রিয় পদ।
দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে জঙ্গলের স্বাদ নিতে প্রতিবছর বহু মানুষ পাড়ি দেন কেপ টাউনে। এই শহর ফুডিদের জন্যেও আদর্শ। নানা ধরনের সাবেকি, ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে ডালি সাজিয়ে রেখেছে কেপ টাউন। অসাধারণ সমস্ত রেস্তোরাঁ এখানে পর্যটকদের জন্য অপেক্ষা করে আছে। সেসব খাবার একবার মুখে দিলে বারবার এই বিদেশ-বিভুঁইয়ে ফিরে যেতে ইচ্ছে করবে।
ইতালির বুকে ছবির মতো সাজানো শহর এই তোসকানা। এখানকার ওয়াইন বিশ্ববিখ্যাত। ওয়াইন খেতে যাঁদের ভাললাগে তাঁরা তোসকানা অন্তত একবার হলেও ঘুরে আসতে পারেন। এছাড়া খাদ্যরসিকদের জন্য এখানে রয়েছে পিজ্জা, জিলেটোর মনভোলানো সব কম্বিনেশন। তোসকানায় খুব ভাল চিজও তৈরি হয়। ঘুরতে গিয়ে দেশের লোকের জন্য সেসব নিয়েও আসতে পারেন ঝুলি ভরে।
উটের মাংসের নানারকম পদ দুবাইতে খুব বিখ্যাত। এছাড়া আরবিয়ান কফি থেকে শুরু করে টার্কিশ ককটেল- সুস্বাদু খাবার ছড়িয়ে রয়েছে দুবাইজুড়ে। প্রকৃত খাদ্যরসিক হলে একবার অন্তত সেসব খাবারের স্বাদ নিয়ে দেখতেই হবে।
থাই ডিশ ভাল লাগলে আপনি ব্যাংককের প্রেমে পড়তে বাধ্য। এখানে থাইল্যান্ডের সেরা খাবারগুলো পাওয়া যায়। টম ইয়াম গুং (শ্রিম্প স্যুপ), সোম তুম (পেঁপের স্যালাড), তোম খা কাই (চিকেন ইন কোকোনাট স্যুপ), প্যাড থাই (থাই স্টাইল ফ্রায়েড নুডুলস)- এ তালিকা বলে শেষ করা যাবে না।