শেষ আপডেট: 9th September 2024 19:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ছোটোবেলায় বইয়ে আমরা অনেকেই পড়েছি, এখানে নাকি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। পাহাড়, গুহা, ধর্না, আবার বৃষ্টিও। আর কী চাই। বলছি চেরাপুঞ্জির কথা। আজ বদলেছে সর্বাধিক বৃষ্টিপাতের জায়গা কিন্তু বদলায়নি চেরাপুঞ্জির চোখ জোড়ানো সৌন্দর্য। তাই পর্যটকদের আকর্ষণও কমেনি কোনও অংশে।
হাতে সময় কম। বর্ষায় প্রকৃতির কোলে কিছুদিন কাটাতে চাইলে চেরাপুঞ্জি হতে পারে আপনার পরবর্তী ডেস্টিনেশন। ঝর্না, পাহাড়, গুহা, মেঘ ও বৃষ্টি নিয়ে ছবির মতো আপনাকে স্বাগত জানাতে সেজে বসে আছে চেরাপুঞ্জি। যার আর এক নাম সোহরা। খাসি গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পীঠস্থান হল মেঘালয়ের এই জায়গা।
এখানে যেদিকেই তাকাবেন সেদিকেই সবুজে ঘেরা পাহাড় আর অজস্র ঝর্না চোখে পড়বে। ধর্নার জল কোথাও জমে লেক তৈরি হয়েছে তো কোথাও বয়ে গিয়েছে ছোট্ট
নদীর মতো। চুপ করে বসে ঝর্নার আওয়াজ শুনতেও মন্দ লাগবে না।
মেঘলা দিনে আবার নতুন পোশাকে সেজে ওঠে এই এলাকা। ঘুরবেন কীভাবে ভাবছেন? দেখে নিন
প্রথম দিন শুরু করতে পারেন চেরাপুঞ্জির অন্যতম আকর্ষণ উমশিয়ঙের ডবল ডেকার রুট ব্রিজ দিয়ে। গাছের শিকড় দিয়ে প্রকৃতি নিজেই তৈরি করেছে এই দোতলা ব্রিজ। ৫০ জন একসঙ্গে সেতুর ওপর দাঁড়াতে পারবেন।
প্রথমদিন রুট ব্রিজ দেখে দুপুরে চলুন নোগরিয়াত গ্রামে রেনবো ফলস দেখতে। খাড়াই পথ, উঠতে হবে অনেকটা। এখানে সূর্যের আলো ঝর্নার জলের মধ্যে এমনভাবে সাতটা রঙ তৈরি করে যে দেখতে অপূর্ব লাগে। এই সৌন্দর্য খাড়াই পথে ওঠার ক্লান্তি দূর করে দেয়। ধর্নার ধারে খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে, চাইলে দুপুরে এখানে খেয়ে নিতে পারেন।
এখান থেকে দেখে আসতে পারেন চেরাপুঞ্জির আর একটি জনপ্রিয় ঝর্না নহকালিকাই। সবুজে ঢাকা উচুঁ পাহাড় থেকে সোজা নীচে নেমে আসছে জল। যার ফলে নীচে পাথরের খাঁজে তৈরি হয়েছে ছোট্ট একটা জলাশয়। যার রং গাঢ় নীল।
বিকেলে ঘুরে দেখা যেতে পারে মাওকডক ডিমপেপ ভ্যালি। ঘন সবুজে ঢাকা পাহাড়ি উপত্যকা এটি। নহকালিকাই জলপ্রপাত থেকে এটির দূরত্ব মাত্র ২৪ কিলোমিটার। সূর্যাস্তের সময় এই উপত্যকায় যখন আলো এসে পড়ে তখন এর সৌন্দর্য দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
দ্বিতীয় দিন সকাল শুরু করতে পারেন চুনাপাথরের গুহা মোসমাই কেভ দিয়ে। গুহায় ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ে তৈরি হয় স্ট্যালাকটাইট ও স্ট্যালাগমাইট। গুহায় কোথাও হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হতে পারে তো কোথাও একপাশ হয়ে। অ্যাডভেঞ্চার ভালবাসলে এই গুহায় যেতে ভাল লাগবেই।
এখান থেকেই চলে যেতে পারেন নংথাইমাই ইকো পার্কে। বিকেলে ঘুরে নিন আর একটি গুহা আরওয়া কেভ। বহু প্রাচীন এই গুহায় রয়েছে বিভিন্ন রকম জীবাশ্ম। মাছের হাড় থেকে বিভিন্ন প্রাণীর জীবাশ্ম দেওয়ালে দেখতে পাবেন।
গুহা থেকে বেরিয়ে ঘুরে নিতে পারেন এখানকার অন্যতম জনপ্রিয় জলপ্রপাত 'সেভেন সিস্টার্স'। বিকেলের দিকে এই জলপ্রপাত দেখতে আরও ভাল লাগে। পাহাড়ের বুক চিরে নেমেছে ৭টি জলধারা। বর্ষায় এখানে দাঁড়িয়ে থাকলে জল হালকা হালকা গায়ে লাগে। অসাধারণ লাগে সেই সময়।
সন্ধেবেলায় ঘুরে নিতে পারেন থাংকারাং পার্ক। ঝর্না ও গাছপালা ঘেরা এই পার্কও বেশ ভাল লাগবে। এখানে থাকার জন্য ছোটো-বড় বেশ কয়েকটি হোটেল রয়েছে।