শেষ আপডেট: 17th July 2023 10:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশ্বটেনিসের মহাসন যেন তাঁর (Carlos Alcaraz) জন্যই অপেক্ষা করছিল। রজার ফেডেরার অবসর নেওয়ার পরের নাম রাফায়েল নাদাল হলেও, তিনি সম্প্রতি চোটে জর্জরিত। তাঁদের পরে টেনিসে মহাতারকা বলতে বারবারই নাম উঠেছে নোভাক জকোভিচের। বিগত কয়েক বছরে তিনি প্রায় একাই শাসন করেছেন এই রাজত্ব। এতদিনে পেলেন যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী। কার্লোস আলকারাজ। উইম্বলডনের আকাশে জ্বলজ্বল করে ওঠা নবীন তারা। স্পেনের যুবরাজ তিনি (Spain new tennis sensation)।
আলকারাজ টেনিসের নয়া বিস্ময়, নিজের আইডলকে হারিয়ে উচ্ছ্বসিত তরুণ তুর্কি
রবিবার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেও কেউ আন্দাজ করতে পারেননি, এই নবীন তারা আলকারাজের দ্যুতি কতটা উজ্জ্বল। জকোভিচের একাধিপত্য একরকম মেনে নিয়েই খেলা দেখতে বসেছিলেন দর্শকরা। সার্বিয়ান তারকা জকোভিচও হয়তো জিতবেন বলে ধরে নিয়েই নেমেছিলেন মাঠে।
কিন্তু আলকারাজ বুঝিয়ে দিলেন বিশ্বটেনিসে জকোভিজের একক শাসন অবসান হওয়ার সময় হয়েছে। স্প্যানিশ টেনিস তারকা নাদালের উত্তরসূরি এসে গিয়েছেন মঞ্চে।
আলকারাজের বয়স মাত্র ২০। দেড় বছর আগেও টেনিস দুনিয়ায় কেউ তাঁর নাম জানত না। একটিও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা হয়নি। সেই শূন্য থেকেই প্রায় রকেটের গতিতে উত্থান আলকারাজের।
আলকারাজ গতবছর প্রথম নজর কাড়েন ইউএস ওপেন জিতে। এর পরে মাত্র ১৯ বছর ৪ মাস বয়সে এটিপি ক্রম তালিকায় ১ নম্বরে জায়গা করে নিয়ে সবাইকে চমকে দেন তিনি।
এর পরে সেই ঐতিহ্যের উইম্বলডনে মিলল সুযোগ। সেখানে খেলার সুযোগ পেয়েই টেনিস জগতে জাতে উঠলেন আলকারাজ। তবে সে জাতের মর্যাদা যে এমন জয়ের মাধ্যমে রক্ষা করবেন আলকারাজ, তা অনেকেই ভাবেননি।
২০০৩ সালের ৫ মে দক্ষিণ-পূর্ব স্পেনে এল পালমারে নামের একটি গ্রামে জন্ম আলকারাজের। পাহাড় ঘেরা যে গ্রামের বাসিন্দারা কয়েক দশক আগেও শিকার করে জীবন যাপন করতেন।
সেখানেই স্থানীয় শিকারিরা রিয়াল সোসিয়েদাদ ক্লাব ডে ক্যাম্পো চালু করেছিলেন। পরে এই ক্লাবই হয়ে উঠে টেনিসের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
আলকারাজের বাবা কার্লোস আলকারাজ গঞ্জালেস দায়িত্বে ছিলেন এই ক্লাবের। বাবার সঙ্গেই ছোটবেলা থেকে ক্লাবে যেতেন ছোট্ট আলকারাজ। ছোট্ট বয়সেই ব়্যাকেট নিয়ে খেলতেন। সে সময়েই একদিন চোখে পড়ে যান কোচ কিকো নাভারোর। ভবিষ্যতের রত্ন সেদিন ঠিকই চিনেছিলেন শিকারি চোখের কোচ।
তখন স্পেনের আকাশে জ্বলজ্বল করছে নাদালের নাম। তাঁরই অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হলেন কার্লোস। পেশাদার টেনিসের পাঠ পেলেন সেই প্রথম।
২০১৭ সালে সুযোগ এল অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মূল পর্বে খেলার। সেটাই তাঁর প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম। বয়স তখন মাত্র ১৩! এর পরে ২০২০ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে পেশাদার টেনিসে নাম লিখিয়ে ফেলেন। ২০২২ সালে জেতেন যুক্তরাষ্ট্র ওপেন, এবার ঝুলিতে উইম্বলডনও।
আলকারাজের মা ভার্জিনিয়া গার্ফিয়া এসকান্দোনের সাপোর্ট ছাড়া এতদূর এগোনো হতো না কার্লোসের। শুধু ঘর সামলানো বা ছেলের প্রস্তুতিতে নয়, ছেলেকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতেও দেখা যায় তাঁকে।
কার্লোসের আরও তিন ভাই রয়েছে। তাঁর দাদা আলভারো আরকারাজ গার্ফিয়া পেশায় একজন অভিনেতা। ছোট দুই ভাই সার্গিও এবং জেমি আলকারাজ পড়েন স্কুলে। এই দুই আলকারাজ ব্রাদার্সকেও জুনিয়র টেনিস মহল সদ্য চিনতে শুরু করেছে।