শেষ আপডেট: 8th July 2024 20:22
দ্য ওয়াল ব্যুরো: স্কুলগুলোতে মোটামুটি গরমের ছুটি পড়ে গেছে। সঙ্গে কলকাতায় পড়েছে কাঠফাটা গরম। এই বছর বিশেষ করে কলকাতায় যা রেকর্ড গরম পড়েছে তাতে বসে না থেকে মনে হয়, পাহাড় পালানোই ভাল। ঘোরাও হবে, আবার কয়েকদিনের জন্য সাময়িক শান্তিও পাবেন।
এখন ঘুরতে যাওয়ার কথা হলেই মানুষ হাজারটা ইউটিউব ভিডিও রিসার্চ করে বা অভিজ্ঞ কোনও ব্যাক্তির সঙ্গে কথা বলে যান। তারপরেও উত্তরবঙ্গের আনাচে কানাচে এত অফবিট গ্রাম এবং ঘোরার জায়গা রয়েছে যে, ঘোরা তো দূর, সব হাতে গুনেও শেষ করা যাবে না। তার মধ্যে থেকেই আপনাদের জন্য রইল কয়েকটা অফবিট জায়গার লিস্ট।
তোদে তাংতা - ভুটান বর্ডারের কাছে এই ছোট্ট গ্রাম এত সুন্দর যে জীবনে একবার হলেও এখানে যাওয়া উচিত। অনেকের কাছেই উত্তরবঙ্গের পাহাড়ের থেকেও ভুটান পাহাড় বেশি প্রিয়।প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এই তোদে তাংতা খুবই পছন্দের জায়গা। ছুমাং নদীর ধারে ট্রেক করা হোক বা ক্যাম্প করা, সকালে টেন্ট থেকে বাইরে বেরিয়ে যখন দেখবেন অপার্থিব পাহাড়ি ভিউ তখন আশা করি ত্রুটি খুঁজে পাওয়ার মতো কিছু পাবেন না।
মালবাজার থেকে ঝালং যাওয়ার পথে পড়বে এই ছোট্ট হ্যামলেটটি। এখানে গেলে অন্তত দু-তিনদিন হাতে নিয়ে যাবেন। তাহলে মন ভরে শান্তিতে ঘুরে দেখতেও পারবেন। চাইলে আবার ট্রেক করার সময়ও থাকবে।
পারেন - পশ্চিমবঙ্গের উত্তর সীমান্তে ডুয়ার্সের কাছাকাছি অবস্থিত পারেন। শিলিগুড়ি থেকে ১১২ কিলোমিটার দূরে ভুটানের পাহাড় লাগোয়া এই গ্রামে রয়েছে জলঢাকা নদী। যদিও পুরো পারেন জুড়েই আপনি জলঢাকা নদীর দেখা পাবেন। পাহাড়ের পাইন-দেবদারু ভরা আলপাইনের জঙ্গলে ট্রেক বা হাইক করতে চাইলে এই জায়গা আপনার জন্য সেরা। পথে পেতে পারেন পাহাড়ি ফুলের সুবাস, ঝর্না আরও কত কী।
আপনি যদি গুগল-বারে পারেন বলে সার্চ করেন তাহলে কিন্তু সেরম কোনও হোটেল দেখতে পাবেন না। তবে এখানে লোকাল যেসব হোমস্টে রয়েছে, সেগুলো বড় কোনও হোটেলের থেকে কম নয়।
অহলদারা - পাহাড়ের একদম উঁচুতে কোনও অজানা পাহাড়ি গ্রামে থাকতে চান তাহলে নর্থ বেঙ্গলের অহলদারাকে বেছে নিতে পারেন। কার্শিয়াং শহরের ৩৬০ ডিগ্রি ভিউর সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘার এক অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে হলে যেতে হবে অহলদারাতে। 'দারা' কথার অর্থ হিলটপ অর্থাৎ পাহাড়ের চূড়া। সত্যিই এই গ্রাম একদম পাহাড়ের চূড়াতে অবস্থিত। তাই এর নাম অহলদারা।
এখান থেকে সূর্যাস্ত, সূর্যোদয় দেখতে একদম ভুলবেন না। এছাড়া রয়েছে জঙ্গল সাফারির ব্যবস্থাও। প্রচুর হোটেল এবং হোমস্টের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। তবে যেহেতু গরমের সময়ে পাহাড়ে ভিড় একটু বেশিই হয়, তাই আগে থেকে বুক করে রাখা ভাল।
তাবাকোশি - দার্জিলিং-এর গোপালধারা টি এস্টেট কাছে অবস্থিত ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম তাবাকোশি। ছোট্ট কাঠের ব্রিজ, নীচ থেকে বয়ে চলেছে সরু নাম না জানা এক নদী, চারিদিক পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা। ঠিক যেন বইয়ের পাতায় আঁকা কোনও পাহাড়ি গ্রাম। আপনি যদি নির্বিঘ্নে দুদিন প্রকৃতির মাঝে, পাহাড়ের কোলে সময় কাটাতে চান তাহলে রংভাং নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই গ্রাম হতে পারে আদর্শ ঠিকানা।
নেপালি ভাষায় 'তাম্বা' কথার অর্থ তামা আর 'কোশি' কথার অর্থ নদী। তাই এই নদীকে গ্রামের লোকেরা তাম্বাকোশি বা তাবাকোশি বলেও চেনে। আর নদীর নাম থেকেই নাম দেওয়া হয় গ্রামের। যদিও এখানে কোনও বড় হোটেল বা রেস্তোরাঁ নেই। গ্রামের লোকেরাই ছোট ছোট সুন্দর হোমস্টে বানিয়েছে অল্প খরচায় থাকার মতো।
খারকা গাঁও - পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলার অন্তর্গত এই ছোট্ট গ্রামটি সত্যিই যেন একটা লুকোনো রত্ন! সবুজ জঙ্গলে ঘেরা এই পাহাড়ি গ্রামের থেকে এত সুন্দর ভিউ পাওয়া যায় যে, স্রেফ যেটা দেখার জন্যই কয়েকটা দিন আরামসে থেকে যেতে পারেন।
যারা পাখি দেখতে বা বার্ড ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করেন তাঁদের জন্য খারকা গাঁও একদম উপযুক্ত জায়গা। সারাদিন ঘন জঙ্গলে কাঠের হোমস্টে, পাখিদের কলতান আর সুবিশাল কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্যের মাঝে থাকতে হলে আপনাকে যেতেই হবে খারকা গাঁও।