শেষ আপডেট: 9th September 2024 18:53
ইনস্টা-ফেসবুক খুললেই সরোজিনী হওল। জেন জেড-এর নতুন পছন্দ এখন এটাই। শুধু দিল্লি নয়, দিল্লির বাইরে থেকেও লোকজন এই বাজারে আসেন শুধু কেনাকাটা করার জন্য। ওয়ার্ড্রোবে সরোজিনীর একটিও পোশাক নেই, এমন শপিং-প্রিয় মানুষ পাওয়াই যেন মুশকিল!
মনে হতেই পারে, সরোজিনী হয়তো নতুন কিছু বা নতুন করে গজিয়ে ওঠা কোনও মার্কেট। কিন্তু না, সরোজিনী মার্কেটের ইতিহাস অনেক পুরনো। স্বাধীনতার সঙ্গেও রয়েছে এর যোগ।
কম দামে ফ্যাশনেবল-ট্রেন্ডি পোশাক চাই? বাজেট কম? তাহলে পৌঁছে যেতে হবে দিল্লির এই মার্কেটে।
১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান থেকে যারা দিল্লি এসেছিলেন, তাঁদেরই জায়গা দেওয়া হয়েছিল এই সরোজিনী মার্কেটের উপরে থাকা বাড়িগুলোতে। সামনেই ছিল সরকারি আবাসন।
সেখানকার মানুষজনের সুবিধার জন্য নিত্যদিনের জিনিসপত্র বিক্রি করা হত এই মার্কেটে। আমাদের আশপাশে থাকা বাজারগুলোর মতোই খুবই সাধারণ একটি বাজার ছিল এটি। নাম ছিল বিনয় নগর।
১৯৮০-৯০ সালে, বিশেষ করে ৯০-এর শুরুতে বিশ্বায়নের সময় এই মার্কেট এক্সপোর্ট সারপ্লাস শপিং হাবে পরিণত হয়। দামে কম মানে ভাল জিনিসপত্র সেখানকার ভেন্ডররা খুবই কম দামে বিক্রি করতে শুরু করেন।
পাশ্চাত্য দেশগুলো থেকে দান করা জামাকাপড়ও এক সময়ে এখানে এনে বিক্রি করা হত ফলে কম দামে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড বা ওয়েস্টার্ন ফ্যাশনের ছোঁয়াও পেতে শুরু করে দিল্লিবাসী। লোকমুখে ঘুরতে থাকে সেসব কথা।
ধীরে ধীরে কমবয়লি ছেলে-মেয়ে, অভিনয় জগতের লোকজন এমনকি ডিজাইনারদেরও পছন্দের জায়গায় পরিণত হতে শুরু করে এই মার্কেট।
১৯৯৪ সালে মিস ইউনিভার্স হন সুস্মিতা সেন। তিনি বহুবার সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁর পোশাকের কাপড় সরোজিনী থেকেই কেনা।
২০০৫ নাগাদ এই মার্কেটকে টার্গেট করে জঙ্গিরা। তারপরই মার্কেটটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
কাট টু ২০২৪। এখন জ়ারা, এইচ অ্যান্ড এম, ওনলি বা ঋতু কুমার অতীত। একটা আস্ত ব্র্যান্ড সরোজিনীতেই মজে জেন জেড। 'আয়শা' হোক বা 'মেড ইন হেভেন', প্রচুর ছবির ডিজাইনার সরোজিনী থেকেই পোশাক বেছে নিয়েছেন।
এখন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের দৌলতে সরোজিনী সেরার সেরা। বাকেট লিস্টে কিছু থাক না থাক, রাজধানীতে গিয়ে সরোজিনী-শপিং কিন্তু মাস্ট।