শেষ আপডেট: 5th December 2023 21:04
রাজস্থান, ছত্তিসগড় এবং মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে অভাবনীয় ভাল ফল করেছে বিজেপি। প্রাক্ নির্বাচনী সমীক্ষার পূর্বাভাস মেলেনি। ভোটের আগের বেশিরভাগ সমীক্ষা বলেছিল, তিন রাজ্যেই ভাল অবস্থায় আছে কংগ্রেস। সেই আভাস ভুল ছিল না। হারা ম্যাচ জেতার আনন্দ বেশি হওয়াই স্বাভাবিক।
সমস্যা হল ভোটে জিতে অনেকেই রাতারাতি শাসক হয়ে ওঠেন। যেমন রাজস্থানে গদিচ্যুত হয়েছে কংগ্রেসের অশোক গেহলট সরকার। এই পালাবদলের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই স্বমহিমায় ধরা দিয়েছেন নবনির্বাচিত এক বিজেপি বিধায়ক।
জয়পুরের রাস্তার ধারে যত নন-ভেজ খাবারের স্টল আছে, তা সরিয়ে দেওয়ার হুকুম জারি করেছেন নব নির্বাচিত বিজেপি বিধায়ক বালমুকুন্দ আচার্য।
বিজেপি-সহ হিন্দুত্ববাদী শিবিরের যে সব এজেন্ডা এখনও কার্যকর করা বাকি তারমধ্যে আমিষ খাবার বর্জন অন্যতম। উত্তরপ্রদেশ সহ বিজেপি শাসিত বেশ কিছু রাজ্যে গো মাংস বিক্রি, বহন এবং খাওয়ার উপর সরকারিভাবেই বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছে। গরুর মাংস বহন করার কাল্পনিক অভিযোগ তুলে সংখ্যালঘুদের মারধর, নির্যাতনের বহু ঘটনা ঘটেছে। মারাও গিয়েছেন কয়েকজন।
আমিষ খাবার বর্জন নিয়ে এখনও সরকারি নির্দেশ জারি হয়নি। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে পুরসভা-সহ সরকারি-আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান হুলিয়া জারি করেছে। তবে বেশিরভাগ সময়ই বালমুকুন্দের মতো হঠাৎ ক্ষমতাশালী মানুষের ফতোয়া জারির ঘটনাই বেশি। অনেক সময়ই তাতে নীতি নৈতিকতা, আইন কানুনের বালাই থাকে না।
সদ্য নির্বাচিত বিজেপি বিধায়ক আমিষ খাবারে যে দোকানগুলি বন্ধ করে দেওয়ার হুলিয়া জারি করেছেন সেগুলিতে কি তাঁর ভোটাররা যান না? সদ্য নির্বাচিত বিধায়ককে সম্ভবত এই প্রশ্ন তাড়া করে না।
আসলে হঠাৎ ক্ষমতাশালীদের অনেকের মধ্যেই এইভাবে সমান্তরাল শাসন ব্যবস্থা কায়েমের প্রবণতা দেখা যায়।
হিন্দুত্ববাদীদের কর্মসূচিতে অনেক কিছুই আছে। তারা দেশের নাম, সংবিধান, অনেক কিছুই বদলাতে চায়। সেই কথা বলে কোনও দিন ভোটে জিতে এলে তেমন পদক্ষেপ অসম্ভব নয়। কিন্তু রাজস্থানের ভোটে বিজেপির ঘোষণায় আমিষ বর্জনের কথা ছিল না। ভোটে জিতেই নিজেকে শাসক ভাবা ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত। অবাক হতে হয় এঁরাই কথায় কথায় রামরাজ্যের কথা বলেন।