শেষ আপডেট: 21st February 2024 08:17
ভবেশ দাশ
ভাষা নিয়ে ভাবুকেরা যা বলেন তা ভাসা ভাসা কথা নয় আমরা জানি। তবু কি অবস্থার বদল ঘটে? ঘটছে কি আদৌ? প্রতিবছরই এই দিনটাই ভাষা নিয়ে নানারকম উদ্বেগ ঝরে পড়ে। নতুন করে আরও কিছু উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ জমা হয়, আর তারই চর্চায় কেটে যায় দিনটা। যদিও আমরা বলতেই পারি ভাষার প্রতি ভালোবাসা আছে বলেই তো উঠে আসে এইসব উদ্বেগের কথা। তাও ঠিক। কিন্তু আমাদের নিত্যযাপনে বাংলা ভাষার দুর্গতি, দূষণ, তার প্রতি উপেক্ষা, উদাসীনতা, অযত্ন, যেখানে পৌঁছেছে তার থেকে বেরিয়ে আসার কোন উদ্যম আছে কি আমাদের চিন্তায়, পরিকল্পনায়, প্রাত্যহিক ভাষা প্রয়োগে?
ভুল বাংলা, ইংরেজি-হিন্দি জর্জরিত বাংলা, শব্দের অপপ্রয়োগে মলিন বাংলা, অতিকথন আর অপ্রয়োজনীয় শব্দের ভারে নুয়ে পড়া বাংলা—যে প্রবাহ তৈরি করেছে, তার টান বিপরীত দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার উপায় কী?
আমরা জানি কোনও ভাষা আক্রান্ত হলে, কারও মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করলে, রাষ্ট্র বা শাসক জোর করে ভিন্ন ভাষা চাপিয়ে দিলে প্রতিবাদে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে নামতে হয়। তখন মাতৃভাষাকে ঘিরে তৈরি হয় দুর্মর আবেগ। আর সেই সংগ্রামে, লড়াইয়ে রক্তপাত আর ভাষা শহিদের কথাও জানি। ১৯৫২ সালে ঢাকায়, ১৯৬১ তে অসমের বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষার জন্য লড়াই আমরা দেখেছি। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনকে কুর্নিশ জানিয়েই তো ইউনেস্কো দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দিয়েছে।
কিন্তু তারপর?-যে ভাষা নিয়ে গৌরব তার মর্যাদা রক্ষায় আমরা যত্নশীল কতটা? মুখের কথায়, লেখার ভাষায়, বিজ্ঞাপনে, সাইনবোর্ডে ভুল আর বিচিত্র বাংলার অসহ্য চিত্ররূপ দেখেই চলেছি। অবনীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, শব্দ হল ‘উচ্চারিত ছবি।’ মিশরীয় লিপিকে তিনি মনে করেছিলেন ‘সংচিত্রিত ভাষা’। সত্যি কথা বলতে, একটা অক্ষরও তো সবার আগে ছবি। সুতরাং, ভুল বানানের শব্দ, বাক্য সবই ছবি হয়ে গেঁথে যাচ্ছে মাথার ভিতরে।
সংবাদপত্রে সাম্প্রতিক দু-একটি বিজ্ঞাপনের নমুনা তুলে ধরছি। কোথাও বানানে বিপর্যয়, কোথাও ইংরেজি মিশেছে বাংলায়, কোথাও বসানো হয়েছে এমন দুঃসহ শব্দ, যা ভাষাকেই তুর্কি নাচন নাচায়।
ক. মেয়েদের কেশচর্চায় তেলের বিজ্ঞাপন: ‘……. ব্যবহার করে কে কি লক্ষ্য করেছে’
এখানে ‘কি’ হবে ‘কী’। ‘লক্ষ্য’ নয় হবে ‘লক্ষ’।
খ. পেট্রোল পাম্পের বিজ্ঞাপন:
‘এটাই তো ফিউচারের শুরু, কারণ ইউ ডিজার্ভ মোর’
এখানে হরফটাই শুধু বাংলা। শব্দ ব্যবহারে ইংরেজির দৌরাত্ম্য।
গ. করদাতাদের সুবিধার জন্য বিজ্ঞাপন:
‘আমাদের ট্যাক্স কালেকশন সার্ভিসের মাধ্যমে আপনার বৃদ্ধির কাহিনীকে এগিয়ে নিয়ে চলুন এবং দেশ গঠনেও অবদান রাখুন।’
অনায়াসেই ‘কাহিনী’কে বদলে দিয়ে ‘গতি’ এবং ‘অবদান রাখুন’-এর পরিবর্তে ‘সাহায্য করুন’ ব্যবহার করা যায়।
ঘ. ছানি অস্ত্রোপচারের বিজ্ঞাপন:
‘আমাদের অত্যাধুনিক ছানি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আপনার দৃষ্টিশক্তি পুনর্জীবিত করুন।’
এখানে ‘ছানি’ অত্যাধুনিক, নাকি ‘অস্ত্রোপচার’-টা অত্যাধুনিক? তাহলে ‘অত্যাধুনিক’ শব্দটা কোথায় বসবে? সেক্ষেত্রে বাক্যটাই পুনর্গঠন করা উচিত। হঠাৎ ‘পুনর্জীবিত’ শব্দ কেন? এর পরিবর্তে সহজেই লেখা যায়, ‘দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনুন।’
বিজ্ঞাপনে এই ধরনের ভাষা অনেক সময়ই ইচ্ছাকৃত। কোনও কোনও ক্ষেত্রে মূল ইংরেজি বিজ্ঞাপনের বাংলা এমন ব্যক্তিদের দিয়ে করানো হয়, বিশুদ্ধ বাংলা ভাষার সঙ্গে যাদের সম্পর্ক নেই।
একদিকে কর্পোরেটিয় বাজার-অভিমুখী শিক্ষা ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা বাধ্যতামূলক করে তুলছে। অন্যদিকে কৌশলে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার রাষ্ট্রীয় ঝোঁক। আবার তারই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, হাটে-বাজারে পথের দু’ধারে, মিডিয়ার বিজ্ঞাপনে বাংলা ভাষার নামে এই যথেচ্ছাচার। বাংলাকেই বিশুদ্ধ সহজ সুন্দর বাংলা হিসাবে ধরে রাখার পথ যেন বন্ধ হয়ে আসছে।
আজ থেকে প্রায় চার দশক আগে এইরকমই আশঙ্কায় বোধহয় ভুগছিলেন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত। তিনি ভারত-বাংলাদেশের মিলিত এক আলোচনাচক্রে বলেছিলেন, ‘সমাজের উন্নতি হলে, শিক্ষার বিকিরণ হলে, দেশের সাধারণ মানুষের খাওয়া পরার কষ্ট দূর হলে, অর্থাৎ পূর্ণ মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটলে যে নতুন ভাবনার ও চিন্তার সৃষ্টি হবে তার থেকে ভাষা সমৃদ্ধ হতে পারে।’
ভাষা সমৃদ্ধ করে তোলা তো দীর্ঘপথ। কিন্তু ভাষা তার আপন সৌন্দর্য আর গৌরবে সৌরভ ছড়াবে—তার একটা পরিসর তো বহমান জীবনের মধ্যেই থাকা চাই। সেই পরিসর আজ সঙ্কুচিত। ভাষাজ্ঞান বা ভাষাবোধ নিয়ে সংকট ঘণীভূত হলে আমাদের ভরসা রাখতে হয় শিক্ষায়তনের উপর। সেখানেই ভাষাশিক্ষার সাধারণ মানটুকুও আজ আর ধরে রাখা হয়নি। নিতান্তই প্রশ্নোত্তরমূলক বইপত্র যতখানি তথ্যজ্ঞাপনের দিকে ঝুঁকেছে, ততখানি ভাষাজ্ঞান বা ছাত্রছাত্রীদের উদ্ভাবনের দিকে নয়। মাতৃভাষায় নির্ভুল কথা বলতে পারা, মুক্তচিন্তায় স্বতঃস্ফূর্ততায় লিখতে পারার চর্চাই তো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিত্যদিনের পাঠ থেকে। অথচ বিদ্যালয়স্তরে সরকারি পাঠ্যবই রচনার সপক্ষে রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তার দোহাই দেখতে পাই। কবির যে-কথা অবলম্বন করে এইসব পাঠ্যপুস্তক তৈরি হয়েছে। সেখানে লেখা: ‘একটা শিক্ষাপুস্তককে রীতিমতো হজম করিতে অনেকগুলি পাঠ্যপুস্তকের সাহায্য আবশ্যক। আনন্দের সহিত পড়িতে পড়িতে পড়িবার শক্তি অলক্ষিতভাবে বৃদ্ধি পাইতে থাকে। গ্রহণশক্তি, ধারণাশক্তি, চিন্তাশক্তি, বেশ সহজে ও স্বাভাবিক নিয়মে বললাভ করে।’ কিন্তু সত্যিই কি তা পুস্তক রচনায় প্রতিফলিত? প্রক্ষিপ্ত, বিক্ষিপ্ত কিছু তথ্য সমাবেশ ঘটিয়ে, তারই চর্চায় পরীক্ষায় নম্বর তোলার তা এক প্রক্রিয়া হতেই পারে, কিন্তু ভাষাবোধ গড়ে দেবার রাস্তা কতটা খোলা?
রবীন্দ্রনাথের ভাষায় যদি পড়ুয়াদের গ্রহণশক্তি, ধারণাশক্তি, চিন্তাশক্তি গড়ে তোলা যায়, তখন তাদের ভাষাবোধও আপনি গড়ে উঠতে পারে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং কলেজস্তরে বাংলায় শুদ্ধ বাক্য লিখতে না পারা, যথার্থ ভাষাপ্রকাশে ব্যর্থ হওয়া পড়ুয়াদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তাহলে প্রকৃত শিক্ষাদান এবং শিক্ষার মান নিয়ে কি আদৌ ভাবছি আমরা?
পাঠ্যবিষয়ের মধ্যে না প্রবেশ করেই মূল পাঠ্যবই না পড়েই সহজে পরীক্ষা পাশের ফর্মূলায় ভুলে-ভরা অজস্র বই মেলে বাজারে। বানান ভুল, বাক্য ভুল, জোড়শব্দের বিযুক্ত ব্যবহার জর্জরিত সব বই। তার দু-একটি দৃষ্টান্ত সামনে আনলেই আমরা বুঝতে পারব, সংকট কতটা গভীর।
ভুল বানানের যথেচ্ছাচার নিয়ে কোনও উদাহরণ দিচ্ছি না। কলেজে চতুর্থ সেমেস্টারের বাংলা ভাষায় যেসব বই বাজারে বিকোচ্ছে, তারই একটি বই থেকে উদারহণ দিচ্ছি। সেই বইয়ে ‘সাময়িক পত্র’ নিয়ে একটি অধ্যায় আছে। সেখানে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর বিভাগে একটি প্রশ্নের বাক্য লেখা হয়েছে এই রকম; ‘ভারতী পত্রিকার কয়েকজন লেখক গোষ্ঠীর নাম লেখো।’-‘লেখকগোষ্ঠীর’ সঙ্গে কয়েকজন শব্দটি চলে কি না- তা দেখবেন কে? এই প্রশ্নের উত্তরে রবীন্দ্রনাথ থেকে আরম্ভ করে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত পর্যন্ত কয়েকজন লেখকের নাম আছে। তাহলে এখানে বাক্যটি হতে হবে, ‘লেখকগোষ্ঠীর কয়েকজনের নাম লেখ।’
আবার আর একটি বাক্য লেখা হয়েছে, ভারতী পত্রিকা প্রকাশিত প্রাথমিক উদ্দেশ্য কী ছিল?- এখানেও ‘প্রকাশিত’ না হয়ে শব্দটা হবে ‘প্রকাশের’ তা কে দেখবে? বই ভরে আছে ভাষার এমন অজস্র অসংগতিতে। যাঁদের নামে বই চলছে, তাঁরা অধ্যাপক। এক প্রকাশকের বই নয়, নানা প্রকাশকের বইয়ে কম বেশি একই চিত্র।
শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ক একটি এই রকমই প্রশ্নোত্তরমূলক। সেই বইয়ে এক জায়গায় দেখছি, একটি প্রশ্ন ‘বুদ্ধি কাকে বলে?’ উত্তরে লেখা হয়েছে: অপেক্ষাকৃত দুরূহ জটিল বিমূর্ত পরিস্থিতিতে প্রাক্ষোভিক শক্তিকে রোধ করে একাপ্রকার সঙ্গে সামাজিক মূল্য সম্পন্ন উদ্দেশ্য অভিমুখী ও সৃজনাত্মক কাজ করার ক্ষমতাই হল বুদ্ধি।’- এই বাক্যকে ধারণ করার জন্য এখন পড়ুয়ার কতটা বুদ্ধির প্রয়োজন আমি জানি না। এই বইয়ের অন্য জায়গায় আর একটি প্রশ্ন আছে, ‘স্মৃতি কাকে বলে?’ - উত্তরে লেখা হয়েছে, ‘ক্রমানুসারে এবং আদর্শগতভাবে অতীত অভিজ্ঞতার পুনরুদ্রেক করার প্রক্রিয়াই হল স্মৃতি।’ - এই সংজ্ঞা কতটা স্মৃতিধার্য তা বলা শক্ত। কিন্তু কথাটা তো এই, আমাদের সঞ্চিত অভিজ্ঞতাকে সুচারুভাবে ফিরিয়ে আনাই হল স্মৃতি। অথচ বইতে দেখতে পাচ্ছি Recall-এর বাংলা পুনরুদ্রেক। Recognition -এর বাংলা প্রত্যভিজ্ঞা—এইসব।
দুরূহতা, অতিরঞ্জন, কষ্টোচ্চারিত শব্দের ঝংকার কি আমাদের বাংলাভাষার অনুপম সৌন্দর্যের পথে চলতে শেখাতে পারে? ভাষার প্রতি অযত্ন বিপুল সংক্রমণশক্তিতে মহামারীর চেহারা নিতে চায়। ভাষার শত দুর্বিপাকে শিক্ষায়তনের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা, তার ভিত্তিটাই যে হারিয়ে যাচ্ছে।
ইউনেস্কো একটা হিসেব দিচ্ছে, বিশ্বের ২৫ কোটি ছেলেমেয়ে এখনও স্কুলে যায় না, প্রায় ৭২ কোটি পূর্ণবয়স্ক সম্পূর্ণ নিরক্ষর। আমরাও কি কিছু সংখ্যায় এর মধ্যে নেই? কোভিডের সময় যত দরিদ্র ছেলেমেয়েকে স্কুল-কলেজ ছাড়তে হয়েছে, তারা কি সবাই ফিরে এসেছে তাদের ক্লাসঘরে?
বাংলা মাধ্যমের স্কুল উঠে যাচ্ছে, যেখানে তা আছে তাদেরও বাংলার পাশে খুলতে হচ্ছে ইংরেজি মাধ্যম। তাহলে বাংলা ভাষা শিক্ষার ভিতটা কোথায় তৈরি হবে?
সদ্যপ্রয়াত আমাদের বন্ধু কবি ও ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার অনেক কষ্টে লিখেছেন, ‘ইংলিশ ওর গুলে খাওয়া, ওটাই ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজ/হিন্দি সেকেন্ড, সত্যি বলছি হিন্দিতে ওর দারুণ তেজ/কী লাভ বলুন বাংলা পড়ে?/বিমান ছেড়ে ঠেলায় চড়ে?/ বেঙ্গলি থার্ড ল্যাঙ্গুয়েজ, তাই তেমন ভালবাসে না/ জানেন দাদা, আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না।’
ভবানীপ্রসাদ নিজেও ছিলেন একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। অসহায়ের মতো তাঁরও এই উপলব্ধি।
রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্তও শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘদিন। সাতাশ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেছিলেন: ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি, ডি.লিটের থিসিস পরীক্ষা করে আসছি। এই থিসিসগুলি পড়ে মনে হয়েছে যে, আমাদের সাহিত্য গবেষণায় ভাষাচর্চার বড় স্থান নেই।’
—এই কথা বলার পর চারদশক পেরিয়েছে। তারপর অধোগতির গতি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেনি নিশ্চয়ই। কিন্তু তিনি মনে করতেন, ‘সাধক, যোগী, দুঃখভাগী জ্ঞানীকর্মীর আবির্ভাব’ না হলে ভাষার দৈন্য দূর হবে না। কিন্তু সে তো নিজেদের একরকম ভাগ্যের হাতেই সঁপে দেওয়া।
জন্মশতবর্ষে অম্লান দত্তর কথা মনে পড়ে। তিনি বলতেন, ‘সব ভালবাসারই দুঃখ আছে। ভাষাকে ভালবাসার দুঃখও কম নয়। সব সাধনারই গৌরব আছে, ভাষার সাধনার গৌরবও তার চেয়ে কম নয়।’ দুঃখ বরণ করে বাংলা ভাষার প্রতি যত্ন নেবার সেই আয়োজন আমরা কীভাবে দেখতে পাবো?’
আজ থেকে ২৫ বছর আগে একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি যখন মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেল, তখন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব কোফি আন্নান আশা ব্যক্ত করেছিলেন, নতুন শতাব্দীতে মানুষ বহু ভাষার সুসহাবস্থানের দিকে এগিয়ে যাবে। - এই ‘সুসহাবস্থান’ বলতে বোঝায় ভাষার গণতন্ত্র, কোনও একটি দুটি ভাষার আধিপত্যকামিতা থেকে মুক্তি।
রাজনীতিরও ভাষা আছে। বিনয়, সংযম হারিয়ে দ্বন্দ্বে, সংঘাতে, বিদ্বেষে নেতাদের অকথা-কুকথায় বাতাস ভারী হয়ে যায়। অন্যদিকে টেলিভিশন, এফএম চ্যানেলগুলোতে রেডিও জকিদের ত্রিভাষিক কথার স্রোত। সেখানে শুনি বাংলার প্রান্তিক উচ্চারণ। তবু আমাদের চেয়ে থাকতে হবে ভাষার প্রতি ভালোবাসা- অভিমুখী শিক্ষার দিকেই। আর তা যেন পৌঁছে যেতে পারে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।