শেষ আপডেট: 8th August 2023 14:50
গত কয়েকমাস ধরে জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে (Price of goods rising rapidly)। গরিব মানুষ তো বটেই, মধ্যবিত্তেরও সংসার চালানো দায়। করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। বহু লোকের আয় কমেছে। তার ওপরে জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে তাঁরা চোখে অন্ধকার দেখছেন।
একসময় বাজারে গিয়ে শোনা যাচ্ছিল, শুখা আবহাওয়ার জন্য ভাল ফসল হয়নি। তাই আনাজের দাম বাড়ছে। কোনও কোনও ব্যবসায়ী আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, শীঘ্রই দাম কমবে। তারপরে শোনা গেল, পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) পঞ্চায়েত ভোটের জন্য শস্য আমদানির খরচ বেড়ে গিয়েছে।
জুলাইয়ের শুরুতেই দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। স্থির হয়েছিল, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সুফল বাংলা স্টলের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। সেখানে বাজারের থেকে ১৫ শতাংশ কম দামে সবজি ও ডিম বিক্রি হবে। এছাড়া এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের অফিসাররা বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখবেন, কোথাও অস্বাভাবিক বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে কিনা। কিন্তু এর পরেও দাম কমেনি।
সোমবার ক্রিসিল নামে এক মূল্যায়ন সংস্থার রিপোর্টে জানা যায়, মূল্যবৃদ্ধির জন্য প্রধানত দায়ী টম্যাটো। তার সঙ্গে আছে পিঁয়াজ ও আলু। জুলাইয়ে টম্যাটোর দাম বেড়েছে ২৩৬.১ শতাংশ, পিঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫.৮ শতাংশ এবং আলুর দাম বেড়েছে ৯.৩ শতাংশ।
সামগ্রিকভাবে জুন মাসের তুলনায় জুলাইয়ে নিরামিষ থালি তৈরির খরচ বেড়েছে ২৮ শতাংশ। আমিষ থালি তৈরির খরচ বেড়েছে তুলনায় কম, ১১ শতাংশ।
ক্রিসিলের মতে, সেপ্টেম্বরের আগে জিনিসপত্রের দাম কমবে না। কেউ কেউ বলছেন, বহু এলাকায় বৃষ্টি কম হচ্ছে। এবার শস্যের উৎপাদন কম হতে পারে। সেপ্টেম্বরেও যে দাম কমবে তার নিশ্চয়তা নেই।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেখানে নিশ্চয় মূল্যবৃদ্ধির কথা উঠবে। বিরোধীরা বলবেন, মোদী সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ। সরকারও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কিছু একটা বলবে। মন্ত্রীরা হয়তো দাবি করবেন, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির জন্যই দাম বেড়েছে।
দেশের মানুষ কিন্তু অজুহাত শুনতে চায় না। সরকারকে নির্দিষ্ট করে বলতে হবে, মূল্যবৃদ্ধি কমানোর জন্য কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। বিরোধীদেরও শুধু সরকারকে দোষারোপ করলে চলবে না। তাঁদের বলতে হবে, ক্ষমতায় এলে তাঁরা কীভাবে জিনিসপত্রের দাম কমাবেন।
মানুষের দুর্দশা যদি বাড়তে থাকে, তাহলে সমাজে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তার ফলে স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে। সম্প্রতি আমরা শ্রীলঙ্কায় সেই পরিস্থিতি দেখেছি। আমাদের দেশ যেন সেই পথে পা না বাড়ায়।
আরও পড়ুন: এত অস্ত্র কেন