Latest News

হাতিদের ক্যানসার হয় না, সম্ভাবনাও নেই, কেন? বিশ্ব ক্যানসার দিবসে জানুন এর রহস্য

দ্য ওয়াল ব্যুরো: মানুষের ক্যানসার হয়। অন্যান্য প্রাণীদেরও ক্যানসার হয়। কিন্তু হাতির হয় না। অবাক লাগছে? এটাই সত্যি। কর্কট রোগ থেকে একেবারে রেহাই পেয়ে গেছে হাতিরা (Elephant won’t suffer Cancer)। জটিল রোগের কারণে হাতির মৃত্যু হলেও ক্যানসারের কারণে কখনও হবে না, কোনওদিনও না।

এতটা জোর দিয়ে বলার কারণ হল, বিজ্ঞানীরা এর সত্যতা প্রমাণ করে ফেলেছেন। হাতিদের ক্যানসার হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। এদিকে এতদিন ধরে বিজ্ঞানীরা বলতেন, যত বড় প্রাণী, ততই বড় কোষের আকার, কাজেই সেই কোষে জিনের রূপবদল দ্রুত হতে পারে, ক্যানসার জিনও সহজেই বাসা বাঁধতে পারে। তাহলে হাতিরা রেহাই পেল কীভাবে?

‘সেল রিপোর্টস’ সায়েন্স জার্নালে এই নতুন গবেষণার খবর সামনে এনেছেন বিজ্ঞানীরা। হাতিরা কেন এবং কীভাবে ক্যানসার থেকে অব্যাহতি পেল, সেই নিয়েই বহু বছর ধরে গবেষণা চলছিল। এবার একেবারে হাতেনাতে প্রমাণ মিলেছে।

New 'zombie' gene found in elephants could help humans fight cancer - ABC News

জেগে উঠেছে ‘জম্বি’ জিন

সবটাই জিনের ভেল্কি। ৫৫০০ কিলোগ্রামের বিশাল বপুর এই প্রাণীদের একটা সময় পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল, ক্যানসার হওয়ার হার অন্যান্য প্রাণীদের থেকে কম। এখন দেখা যাচ্ছে, ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিই নেই হাতিদের। এর কারণ হল দুটি জিনের কারসাজি। একটি এমন জিন আছে যা মানুষের শরীরেও থাকে এবং অন্যটি কোটি কোটি বছর আগে মৃতপ্রায় হলেও ফের তেড়েফুঁড়ে জেগে উঠেছে। একেবারে নিষ্ক্রিয় দশা থেকে সক্রিয় অবস্থায় চলে এসেছে কোনও এক আশ্চর্য জাদুবলে। সেটিই হল ‘জম্বি’ জিন। এই দুই জিনের ভেল্কিতেই হাতিরা এখন কর্কট রোগ মুক্ত।

এবার জেনে নেওয়া যাক কী কী জিন?

প্রথমটা হল পি৫৩ (P53) জিন। ইউনিভার্সিটি অব উটাহ-র পেডিয়াট্রিক অনকোলজিস্ট জোশুয়া স্কিফম্যান বলেছেন, পি৫৩ জিনের সক্রিয়তার কারণে হাতিদের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই জিন নিয়ে বহু বছর ধরে গবেষণা করছিলেন জোশুয়া। ২০১৫ সালে একটি সায়েন্স জার্নালে তিনি এই গবেষণার ব্যাপারে বিস্তারিত লেখেন। জোশুয়া বলেন, পি৫৩ জিন ক্যানসার কোষের বিভাজন ও বৃদ্ধি হতে দেয় না। আক্রান্ত কোষ ফুলেফেঁপে টিউমারের চেহারা নেওয়ার আগেই তার বিনাশ ঘটায় এই জিন। মানুষের শরীরে পি৫৩ জিনের একটিই কপি থাকে, ওই এক কপি জিনই ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিন্তু হাতির শরীরে এই জিনের ২০টি কপি থাকে।

U Calgary on Twitter: "A: Elephants have a large number of P53 genes.Humans normally have two, while they have 40. #exploreUCalgary… "

শিকাগো ইউনিভার্সিটির গবেষক ভিনসেন্ট লিঞ্চ বলেছেন, হাতির শরীরে প্রতিটি পি৫৩ জিন আলাদা করে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেখা গেছে, এই জিনগুলি ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি আটকাতে পারে।

সাইলেন্ট কিলার

হাতির শরীরে নীরবে রয়েছে এই ঘাতক জিন। ভিনসেন্ট লিঞ্চ ও তার টিম এতদিন ধরে খুঁজছিলেন পি৫৩ জিন ছাড়াও আর কী ‘জেনেটিক ফ্যাক্টর’ রয়েছে যা হাতিদের অন্যান্য প্রাণীদের থেকে আলাদা করেছে। অবশেষে তাঁরা আবিষ্কার করেছেন এলআইএফ (লিউকেমিয়া ইনহিবিটরি ফ্যাক্টর)। মানুষের শরীরে এই জিনেরও একটাই কপি থাকে, কিন্তু হাতিদের শরীরে থাকে ৭-১১টা।

Elephants Have a Secret Weapon Against Cancer - The Atlantic

গবেষকরা বলছেন প্রায় ৫ কোটি বছর আগে হাতিদের শরীরে এলআইএফ-৬ জিন ছিল। তবে এই জিনটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় ধীরে ধীরে। কিন্তু এখন এই জিনটিই ফের জেগে উঠেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন জম্বি জিন, যা ক্যানসার কোষ নষ্ট করতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, এই দুই জিন হাতিদের শরীরে কীভাবে কাজ করছে সেটাই এখন খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।

হাতির সহবত-জ্ঞান! পথচারীরা ট্রাফিক নিয়ম ভাঙতেই শিক্ষা দিল দাঁতাল, ভিডিও ভাইরাল

You might also like