
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করিনা কাপুর আর সইফ আলি খানের দুই ছেলের নামকরণ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া এখনও উত্তাল। ছেলেদের নামকরণের জন্য সামাজিক প্ল্যাটফর্মে রীতিমতো ট্রোলড হতে হচ্ছে এই তারলা দম্পতিকে। কিন্তু কেন? ২০১৬ সালে তাঁদের প্রথম সন্তান তৈমুরের জন্ম। শোনা যায়, ছেলের নাম রেখেছিলেন করিনা স্বয়ং। এই নামকরণ ঘিরেও কম অসন্তোষ দানা বাঁধেনি সেসময়। কেন আজও ভারতবাসীর মনে নতুন করে ঘৃণার জন্ম দেয় এই নাম? কে ছিলেন তৈমুর?

তৈমুর লং ছিলেন একজন মোঙ্গল সেনাধ্যক্ষ এবং সমরখন্দের এক সামরিক নেতা। তাঁর আসল নাম সুজাউদ্দিন বেগ তৈমুর বারলাস। যুদ্ধ করতে গিয়ে কোনও একসময় মারাত্মক আহত হয়েছিলেন তিনি, যার ফলে একটি পা অকেজো হয়ে যায় তাঁর। তাই তাঁকে ডাকা হত তিমুরে ল্যাংগ্ নামে, ফার্সি ভাষায় যার অর্থ খোঁড়া তৈমুর (Timur)।
নৃশংশ বীর যোদ্ধা তৈমুর লং পৃথিবী জয় করার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁর সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ছিল আধুনিক তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক, কুয়েত, ইরান থেকে মধ্য এশিয়ার কাজাখস্তান, আফগানিস্তান, রাশিয়া, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজিস্তান, পাকিস্তান, ভারতবর্ষ এমনকি চিনের কাশগর পর্যন্ত। (Timur)
মেসোপটেমিয়া, পারস্য, সিরিয়া, তুর্কিস্থান আর আফগানিস্থান জয় করার পর ভারত অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন তৈমুর লং। তুঘলক বংশের শেষ শাসক নাসিরউদ্দিন মহম্মদ শাহ তখন দিল্লির সিংহাসনে। তাঁর রাজত্বকালেই ভারত আক্রমণ করেছিলেন তৈমুর (Timur)৷ নিজের বিরাট সেনাবাহিনী নিয়ে সিন্ধু, ঝিলাম আর রাভি নদী পার করে রাজধানী দিল্লি গ্রাস করতে অগ্রসর হন তৈমুর। তিনি ভেবেছিলেন দিল্লির মুসলিম সুলতানেরা তাঁদের অধীনস্থ হিন্দুদের প্রতি অতিমাত্রায় সহনশীল। এ দেশের হিন্দু রাজা ও শাসকদের উচিত শিক্ষা দেওয়াও তাঁর ভারত আক্রমণের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। রাস্তায় পড়েছিল দীপালপুর, ভাতনার, শীরসা, কৈথালের মতো জায়গাগুলো। এসব অঞ্চলে ব্যাপক লুঠতরাজক চালায় তৈমুরবাহিনী। অগণিত নিরপরাধ নরনারীকে হত্যা করা হয়। এরপর দিল্লির উপকণ্ঠে হাজির হয়ে তাণ্ডব চালায় তাঁরা। প্রায় একলক্ষ মানুষকে অকারণ হত্যা করেছিল সরমখণ্ডের সেনারা। এই রক্তাক্ত নরমেধ যজ্ঞের ইতিহাস আজও ভোলেনি এ দেশের মানুষ। ঘৃণার উৎস হয়তো সেটাই।