শেষ আপডেট: 7th December 2023 15:42
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সূর্যের গায়ে ওটা কী?
অগ্নিপিণ্ডের মধ্যে এঁকেবেঁকে সড়সড়িয়ে যাচ্ছে সাপ। ঝলসে উঠছে তার ফণা। সূর্য থেকে ছিটকে আসা সৌররশ্মির আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সাপের মতো কী যেন এঁকেবেঁকে চলে গেল।
নাসা বলছে ‘সোলার স্নেক’। গত বছর নভেম্বর মাসেও এমনই সাপের মতো কিছু একটা দেখা গিয়েছিল সূর্যের গায়ে। সূর্যের মতো আগ্নেয় পিণ্ডে সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে এমন ভিডিও ভাইরালও হয়।
সূর্যে সাপ?
নাসার সোলার ডায়নামিক্স অবজারভেটরি সূর্যে এই দৃশ্য দেখে তার ছবি সামনে এনেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আসলে সাপ নয়। এস-এর মতো দেখতে চৌম্বক ক্ষেত্র। সূর্যের করোনায় যে প্রবল ঝড় চলছে, এটা তারই প্রতিফলন। সূর্যের অন্দরে শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। প্রবল বেগে বেরিয়ে আসছে সৌরকণারা। সে জন্যই মনে হচ্ছে সেটি এঁকেবেঁকে চলে যাচ্ছে।
সূর্যের করোনা বিরাট এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে আছে। করোনা যেখানে শেষ হচ্ছে সেখানেই সৌরঝড়ের জন্ম। এই করোনা উচ্চতাপমাত্রার প্লাজমা আবরণে ঢাকা। এখান থেকেই বেরিয়ে আসে তড়িদাহত কণার স্রোত। এদের জন্ম হচ্ছে সূর্যের বায়ুমণ্ডল (‘করোনা’)-এর ঠিক নীচের স্তরে। সূর্যের পিঠের (‘সারফেস’ বা ‘ফোটোস্ফিয়ার’) উপর থেকে কিছুটা উপরে যে স্তরটি রয়েছে (‘ক্রোমোস্ফিয়ার’), তার কিছুটা উপরে। যেখান থেকে একটি লম্বালম্বি রেখা টানলে তা ফোটোস্ফিয়ারের এমন একটি জায়গা ছোঁবে, যে এলাকাটিতে তৈরি হচ্ছে একের পর এক বিশাল সৌরকলঙ্ক বা ‘সানস্পট’।
যে শক্তিশালী সৌরকণাদের জন্ম হয় সৌরবিজ্ঞানের পরিভাষায় তাদের নাম- ‘সোলার এনার্জেটিক পার্টিকল্স (এসইপি বা সেপ)’। এদের শরীর তৈরি হয়েছে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণিকা ইলেকট্রন আর বিভিন্ন মৌলের আয়ন (ইলেকট্রন খোয়ানো পরমাণু) দিয়ে। এদের শক্তি ১০ লক্ষ ইলেকট্রন ভোল্ট। এই সৌরকণারাই পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক। একবার সূর্য থেকে ছিটকে পৃথিবীতে এসে আছড়ে পড়লে এদের ধাক্কায় থরথর করে কেঁপে উঠবে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র।