শেষ আপডেট: 23rd June 2024 18:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিমানে চড়তে অনেকেই ভয় পান। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে যেভাবে বিমান দুর্ঘটনার খবর সামনে এসেছে, তাতে এই নিয়ে উদ্বেগ অমূলক নয়। তবে যাত্রা তো বন্ধ করলে হবে না। কাজের প্রয়োজনে হোক বা বেড়াতে, ফ্লাইটে চড়তে হয় অনেককেই। বিশেষ করে আজকের দিনে, যখন বিমান আর কেবলই লাক্সারি নয়, সময়ে অসময়ে প্রয়োজনও বটে। এমন অবস্থায় অনেকেই খোঁজ করে থাকেন, 'বিমানের সবচেয়ে নিরাপদ সিট' কোনটি। যদিও বড়সড় দুর্ঘটনায় যে কোনও আসনই নিরাপদ নয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু তবু এই নিয়ে গবেষণা করে দেখা গেছে, বিমানের কিছু অংশের আসনে বসলে, বিপদ ঘটার সম্ভাবনা কম।
তথ্য বলছে, বিমান অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ। ইউএস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য অনুসারে, গাড়ি দুর্ঘটনায় ১০২ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হতে পারে, সেখানে বিমানের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা হল, ২,০৫,৫৫২ জনের মধ্যে একজন। তবুও, মনকে শান্ত রাখার জন্যই, বিমানের নিরাপদ অংশের আসনে টিকিট কাটা যেতেই পারে।
আমেরিকার ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের এয়ারক্রাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ডেটাবেসের একটি গবেষণা বলছে, বিমানের পিছনের অংশটি বিমানের অন্যান্য অংশের তুলনায় বেশি নিরাপদ। এই ডেটাবেস ১৯৮৫ সাল থেকে ২০২০, মোট ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। দুর্ঘটনা ঘটলেও কমবে মত্যুর ঝুঁকি।
এর পিছনে অবশ্য যুক্তিও রয়েছে। তারা বলছে, বিমানের ডানাগুলিতে জ্বালানি সঞ্চয় করে রাখা হয়। ফলে আগুন লাগলে ফ্লাইটের মাঝখানের অংশটিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার বড় টার্বুল্যান্সের ক্ষেত্রে, মাঝখানের অংশে বাউন্স সবচেয়ে কম হয়। ফলে যাত্রীদের চোট-আঘাত অনেক বেশি লাগতে পারে। লেজের দিকের অংশটা সেক্ষেত্রে একটি দোলনার মতো হয়ে ওঠে। আবার বিমান যদি গোঁত্তা খেয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে সামনের অংশটি সবচেয়ে আগে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
এখন প্রশ্ন হল, পিছনের অংশের কোন আসনটি সবচেয়ে বেশি নিরাপদ?
পিছনের আইল সিটে বসলে দ্রুত এমার্জেন্সি গেটের দিকে যাওয়া যায়। আবার সেক্ষেত্রে মাথার ওপরের ব়্যাক থেকে লাগেজপত্র ঘাড়ের উপর এসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানলার দিকের সিটে বসলে সেখান থেকে বেরোতে বেশি সময় লেগে যায়। ফলে সব দিক ভেবে, পিছনের সারির মাঝামাঝি আসনগুলিকেই সবচেয়ে নিরাপদ বলে বিবেচনা করা যেতে পারে। যে কোনও ধরনের আঘাতের ক্ষেত্রে দু'পাশে এক জন করে মানুষ বাফার হিসেবেও থাকে।
তবে সব সময় এটা মনে রাখতে হবে, যে বিমানের সবচেয়ে নিরাপদ আসন জরুরি অবস্থা অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। সঙ্কটের সময়ে সবচেয়ে জরুরি হল, এয়ারহোস্টেস এবং বিমানকর্মীরা কী নির্দেশ দিচ্ছেন, তা অনুসরণ করা। কারণ তাঁরা এই বিষয়ে প্রশিক্ষিত এবং তাঁদের কাজই হল যাত্রীদের নিরাপদে রাখা।