শেষ আপডেট: 14th February 2024 16:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্লাস্টিকের বোতলভর্তি জলে গুঁড়ো প্লাস্টিকের কণা মিশে থাকে এমন তথ্য আগেই দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছেন, প্লাস্টিকের বোতলে রাশি রাশি প্লাস্টিক কণা জলের সঙ্গে মিশে থাকে। এই গুঁড়ো প্লাস্টিক জল খাওয়ার সময় শরীরে ঢোকে এবং শরীরে টক্সিনের মাত্রা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। পানীয় জলকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে বিজ্ঞানীরা আশ্চর্য আবিষ্কার করেছেন। জল থেকে প্লাস্টিক ছেঁকে বের করবে চুম্বক! এমন চুম্বক যা প্লাস্টিক কণার মতোই সূক্ষ্ম। এর গায়ে লাগলেই সেঁটে যাবে গুঁড়ো গুঁড়ো মাইক্রোপ্লাস্টিক।
কেন্টাকি মার্টিন ইউনিভার্সিটির খাদ্য ও পরিবেশ বিষয়ক বিভাগের অধ্যাপক-গবেষকরা একধরনের ন্যানো-ম্যাগনেট আবিষ্কার করেছেন যা প্লাস্টিকের সূক্ষাতিসূক্ষ কণা অর্থাৎ মাইক্রোপ্লাস্টিক ছেঁকে বের করতে সাহায্য করবে। ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ নামে সায়েন্স ম্যাগাজিনে এই গবেষণার খবর বেরিয়েছে। কেন্টাকি ইউনিভার্সিটির সঙ্গে এই গবেষণায় রয়েছে ব্রিটেনের কেমিক্যাল ও মেটিরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষকরাও।
কেন্টাকি ইউনিভার্সিটির গবেষক জ্যারেনা ক্রফচেক বলছেন, এই ন্যানো-ম্যাগনেটের নাম NADES। এই ম্যাগনেট অনেকটা জলে মিশলেই সেটি তরল হয়ে যাবে। তারপর এক এক করে জলে মিশে থাকা গুঁড়ো প্লাস্টিক ছেঁকে বের করবে। এই চুম্বকের গায়ে লাগলেই অতি সূক্ষ প্লাস্টিকের কণাও আটকে যাবে।
অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণাকে বলা হয় ন্যানোপ্লাস্টিক। গবেষণা বলছেন, ১ লিটার প্লাস্টিকের বোতলের জলে (৩৩ আউন্স) কম করেও ২ লাখ ৪০ হাজার প্লাস্টিকের কণা মিশে থাকে। খালি চোখে এদের দেখা যায় না। জলের সঙ্গে শরীরে ঢুকে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। যে কোনও রকমের প্লাস্টিকের ভগ্নাংশ, যা লম্বায় ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট, তাকেই বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক। এর আগে মানুষের কোষে, গবেষণাগারের জীবজন্তুদের মধ্যে, এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কিন্তু জীবিত মানুষের উপর এই দূষকের ভূমিকা এখনও পর্যন্ত অজানাই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি স্তনদুগ্ধে মাইক্রোপ্লাস্টিক এর উপস্থিতি খুঁজে পাওয়ার পর তার ক্ষতিকর প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরেছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকরা বলছেন, খাদ্য, জলের মাধ্যমে প্লাস্টিকের কণা ঢুকছে শরীরে। বিশেষ করে প্লাস্টিকের বোতলে থাকে পলিইথিলিন টেট্রাফ্যালেট, যার সূক্ষ কণা বোতলের জলে মিশে থাকে। শুকনো খাবার প্যাক করার প্লাস্টিকে থাকে পলিল্যাকটিক অ্যাসিড। ফুড কন্টেনারগুলোতেও এই ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়।
গবেষণা বলছে, এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের থেকেও সূক্ষ্ম ন্যানোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে বোতলের জলে। এদের দৈর্ঘ্য ১ থেকে ৫০০০ মাইক্রোমিটারের মতো। মানুষের মাথার চুলের চেয়েও সূক্ষ্ম। প্লাস্টিকের বোতলের জলে এই সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণাগুলোই মিশে থাকে যা শরীরে ঢোকে। এই প্লাস্টিক কণাগুলোকে ছেঁকে জলকে পরিশুদ্ধ করার কাজই করবে ন্যানো-ম্যাগনেট।