শেষ আপডেট: 27th January 2024 15:58
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পৃথিবীর মতো গ্রহের খোঁজে (Earth-Sized Planet) বহু বছর ধরেই মহাকাশের আনাচ কানাচে চোখ রেখে বসে আছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। নাসার গ্রহ-শিকারি হাবল টেলিস্কোপ এমন এক গ্রহের খোঁজ দিয়েছে যা একেবারে আমাদের সৌরমণ্ডলের গা ঘেঁষে রয়েছে। আড়েবহরে পৃথিবীর প্রায় সমান। গ্রহে টলটল করছে জল। গ্রহকে ঘিরে বাষ্পের মেঘ ভাসছে। এর আগে কয়েকবার এমন গ্রহের খোঁজ অবশ্য মিলেছে, তবে এবারের খোঁজ চমকে দেওয়ারই মতোই। এই জল আছে, গ্যাসীয় মেঘ তৈরি হয়। ঝড় বয় শোঁ শোঁ করে।
এক্সোপ্ল্যানেটের খোঁজে গত ২০ বছর ধরে কাজ করে চলেছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। হাজারখানেক এমন গ্রহের সন্ধানও মিলেছিল। তবে ২০০৯-এ নাসার কেপলার অভিযান শুরু হলে মাত্র চার বছরেই আরও সাড়ে তিন হাজার ভিনগ্রহের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তাদের বিচিত্র গল্প, অজানা রহস্য। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই গ্রহের দূরত্ব পৃথিবীর থেকে খুব দূরে নয়। এর নাম দেওয়া হয়েছে GJ 9827d। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের অ্যাটমস্ফিয়ারিক ফিজিক্স বিভাগের ডিরেক্টর বিজ্ঞানী লরা ক্রেইডবার্গ বলছেন, এই গ্রহে প্রাণ তৈরির পরিবেশ আছে কিনা তা অবশ্য এখনও বোঝা যায়নি। টেলিস্কোপ দেখিয়েছে গ্রহে জল আছে, গ্রহকে ঘিরে রয়েছে জলীয় বাষ্পের মেঘ।
আমাদের পড়শি কোনও গ্রহের পরিবেশ যদি মনোরম হয়, বেশ হাওয়া-বাতাস খেলে, তাপমাত্রাও অনেকটা পৃথিবীর মতোই হয় তাহলে সেই গ্রহের আঁতিপাঁতি বিশ্লেষণ করে সেখানে প্রাণ ধুকপুক করছে কিনা সেটা তদন্ত করে দেখা অবজারভেটরির মূল লক্ষ্য। তেমন কাজই বছরের পর বছর ধরে করে আসছে নাসা। তবে এবার তার লেন্সে ধরা পড়েছে এক অদ্ভুত এক্সোপ্ল্যানেট বা ভিনগ্রহ। নাম না জানা এক নক্ষত্রের চারপাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পাক খাচ্ছে। তবে চমকে দওয়ার মতো বিষয় হল এই গ্রহের অন্দরে ঘটে চলা আবহাওয়ার পরিবর্তন। এমন খামখেয়ালি আবহাওয়া এর আগে কোনও ভিন্ গ্রহের মধ্যে খুব একটা দেখা যায়নি।
উত্তপ্ত গ্যাসীয় পিণ্ড। গনগনে তেজ। কখনও তাতে থইথই করে বইছে জলের ধারা, আবার কখনও সেই জল বাষ্পীভূত হয়ে গ্রহকে ঘিরে ঘন মেঘ তৈরি করছে। ঝড় বইছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে ট্রোপোস্ফিয়ার আছে, তার ওপরে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার আছে। সেখানে আবার জলীয় বাষ্পও জমে আছে। মহাজাগতিক বিকিরণ এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলকে ছিঁড়েখুঁড়ে দিতে পারেনি। পুরু হয়ে জড়িয়ে রয়েছে গ্রহকে। তার মানে কি চুপি চুপি প্রাণের জন্ম হয়েছে গ্রহের গর্ভে? আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আসলে এই ব্রহ্মাণ্ডে নানা জাতের, নানা গোত্রের গ্রহ আছে। কেউ পৃথিবীর মতো, কেউ পৃথিবীর চেয়ে ছোট ‘সাব-আর্থ’ আবার কেউ পৃথিবীর চেয়ে বড় ‘সুপার আর্থ।’ এই সুপার আর্থগুলিতে জল ও কার্বন থাকার সম্ভাবনা বেশি। সুপার আর্থদের তাপমাত্রাও হয় অনেকটা পৃথিবীর মতোই। অর্থাৎ হ্যাবিটেবল জ়োন বা প্রাণের বাসযোগ্য পরিবেশ রয়েছে। খান পঞ্চাশেক এমন গ্রহের খোঁজ মিলেছে যাদের নিয়ে এখন নাড়াচাড়া করছেন বিজ্ঞানীরা।