মশার কামড়ে বড়সড় ইনফেকশন
শেষ আপডেট: 18 April 2025 20:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মশার (mosquito) মতো ছোট্ট একটা প্রাণীর কামড় যতটা নিরীহ মনে হয়, তেমনটা যে নয় তার প্রমাণ আগেও পেয়েছে মানুষ। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া থেকে শুরু করে চিকুনগুনিয়া, এনকেফ্যালাইটিস পর্যন্ত হয়েছে মশার কামড়ে।
এবার অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা ৯ বছরের একটি মেয়ে। নিউ সাউথ ওয়েলসের এক ক্যাম্পসাইটে মজার মুহূর্তে সাধারণ মশার কামড় যে তাকে হাসপাতাল পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবে, সেটা হয়তো সে বা তার পরিবার কল্পনাও করেনি।
পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়ে মেয়েটিকে মশার কামড়ায় (mosquito bite)। এরপর স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয় চুলকানি। তার মা জানান, তাঁরা প্রথমে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্রিম মাখিয়ে দিয়েছিলেন কামড়ের জায়গায়, তবে তেমন কোনও ফল মেলেনি। চারদিন পর দেখা যায় কামড়ের জায়গাটা ঠিক তো হয়ইনি, বরং ফুলে লাল হয়ে গেছে।
‘জায়গাটা ব্যথা করছে’ মাকে জানায় ছোট্ট অ্যাভার। কিন্তু তারপর একসময় তার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে পড়ে যে, সে আর হাঁটতেই পারছিল না।
প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও, তাঁরা সময় দিতে পারেননি অ্যাভাকে। অবশেষে অনলাইনে একজন নার্সের পরামর্শে আভাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই জানা যায়, সামান্য মশার কামড় থেকে মারাত্মক একটি স্ট্যাফ ইনফেকশন (Staph infection)-এ আক্রান্ত হয়েছে মেয়েটি।
অ্যাভাকে তিনদিন হাসপাতালে থাকতেও হয়। প্রথম ধাপে দেওয়া অ্যান্টিবায়োটিক কোনও কাজই না করায় পরে ধরা পড়ে, এটি MRSA (মেথিসিলিন রেজিস্ট্যান্ট স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস), অর্থাৎ এমন একটি স্ট্যাফ ব্যাকটেরিয়া যা অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ (antibiotic resistance) গড়ে তুলতে পারে।
অ্যাভার শরীরে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তার থাই পর্যন্ত। এমনকি লিম্ফ নোডগুলোও ফুলে উঠেছিল। তার মা আরও জানান, ভুল করে প্রথমদিকে শক্ত ধাঁচের ব্যান্ড-এইড ব্যবহার করেছিলেন। যেগুলো খোলার সময় ত্বকের ছাল উঠে গিয়ে সেখানে ইনফেকশন হয়। মাত্র দু’দিনেই সেই জায়গাগুলোর আটটিতে দেখা দেয় গোল্ডেন স্ট্যাফ সংক্রমণ।
অ্যাভার এখন কোনও রকম চুলকানি বা ক্ষতর প্রতি এতটাই ভয় জন্মে গেছে যে সে প্রায়ই ভাবে, ‘এই জীবাণু কি আমার শরীরে এখনও রয়ে গেছে?’ পায়ের পেছনের অংশে একটা দাগ থেকে গেছে ওই ইনফেকশনের।
ডাক্তারদের কথায়, স্ট্যাফ ব্যাকটেরিয়া আমাদের ত্বকেই থাকে, কিন্তু কোনওভাবে তা শরীরের কেটে যাওয়া অংশ দিয়ে রক্তে মিশে গেলে সহজে তা নির্মূল করা যায় না।