শেষ আপডেট: 23rd December 2023 16:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ক্ষেপে গেছে নিউট্রন নক্ষত্র। মহাকাশে ঝগড়া করছে অন্য তারাদের সঙ্গে। তারায়-তারায় যুদ্ধে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হচ্ছে। ভারতের অ্যাস্ট্রোস্যাট স্যাটেলাইট খবর পাঠিয়েছে, মহাকাশে ৬৭ খানা প্রলয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয়েছে। পৃথিবীর দিকে ছিটকে আসছে আগুনে রশ্মি।
নাসার সুইফ্ট এয়ারক্রাফ্টও খবর পাঠিয়েছে ম্যাগনেটার নামে এক নিউট্রন টারার সঙ্গে লড়াই বেঁধেছে অন্য তারাদের। একের পর এক বিস্ফোরণ হয়েছে চলেছে নিউট্রন তারায়। এই তারার নাম দেওয়া হয়েছে SGR J1830-0645। দিল্লি ইউনিভার্সিটি ও রমন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা বলছেন, শক্তিশালী এক্স রে ও গামা রশ্মির জন্ম হচ্ছে মহাকাশে। এই মহাজাগতিক রশ্মিরা ছিটকে বেরিয়ে পৃথিবীর দিয়ে ধেয়ে আসছে।
কোনও তারা বা নক্ষত্রের যখন মৃত্যুমুখে পৌঁছয় তখন ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয়। তাকে বলে সুপারনোভা। এই সুপারনোভার (Supernova) সময় তীব্র আলোর ছটা দেখা যায় মহাকাশে। আবার তারায়-তারায় যুদ্ধ বাঁধলেও এমন মহাজাগতিক রশ্মির ছিটকে বের হয়। বিস্ফোরণে তারার শরীর থেকে বেরিয়ে আসে আগুনের গোলা ও গ্যাস। এইসব মহাজাগতিক রশ্মি ১০০ থেকে ১৬০ আলোকবর্ষ দূরে পৃথিবীতেও ধ্বংসের কারণ হতে পারে। যদি এমন মহাজাগতিক রশ্মির ধারাবাহিক বিকিরণ হয় তাহলে ১৬০ আলোকবর্ষ দূর থেকেও তা পৃথিবীর প্রাণীজগতের উপরে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
পৃথিবীর রক্ষাকর্তা তার চৌম্বক ক্ষেত্র। বায়ুমণ্ডলের স্তর ঘিরে আছে পৃথিবীকে। কিন্তু মহাজাগতিক রশ্মির বিকিরণ তার থেকেও শক্তিশালী। এই রশ্মি ওজোন স্তর ফুঁড়ে পৃথিবীতে আঘাত করতে পারে।
মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলেন, একটি গ্যালাক্সির গ্যাসীয় স্তরে ভেসে বেড়ায় কোটি কোটি নক্ষত্র। বিশালাকার সেইসব তারাদের মধ্যে অবিরত ধাক্কাধাক্কি, মারামারি চলে। যার ফলে ভয়ানক বিস্ফোরণ হয়।
এই প্রলয় যেমন মৃত্যু ঘটায়, তেমনই জন্ম দেয় নতুন নক্ষত্রের। আবার এমনও দেখা যায়, গ্যালাক্সির ভিতর লুকিয়ে থাকা কোনও ভারী ব্ল্যাক হোল তার প্রবল অভিকর্ষজ বলের ক্রিয়ায় তারাদের নিজের দিকে টেনে নিতে থাকে। ব্ল্যাক হোলের ভিতরে এই নক্ষত্রেরা তলিয়ে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড বেগে একে অপরকে ধাক্কা মারে। এই সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয় এক্স-রে। যা আমরা দেখতে পাই না। তবে সেগুলিও তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ বা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ। এই রশ্মির বিকিরণ প্রচণ্ড তাপমাত্রা ও আলোর ছটা তৈরি করে।
২০১৫ সালে দুটি ব্ল্যাকহোলের সংঘর্ষে এমন মহাকর্ষীয় তরঙ্গ দেখা গিয়েছিল, যার উৎসস্থল ছিল পৃথিবী থেকে প্রায় ১৩০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। ২০১৭-তে ১৮০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ দেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এগুলি আসলে প্রচণ্ড শক্তিশালী এক্স-রে বা গামা-রশ্মির স্রোত যা পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের জন্য ভয়ঙ্কর।