মাঝে সময়ের ব্যবধান ২৭ বছর। কিন্তু বেঁচে ফেরা দুই জনই বসেছিলেন একই আসনে, ১১এ (Seat 11A)।
২৭ বছর আগে থাই অভিনেতা-গায়ক রুয়াংসাক লয়চুসাক একই আসনে ছিলেন
শেষ আপডেট: 14 June 2025 10:45
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দু’টি ভিন্ন বিমান দুর্ঘটনা। মাঝে সময়ের ব্যবধান ২৭ বছর। কিন্তু বেঁচে ফেরা দুই জনই বসেছিলেন একই আসনে, ১১এ (Seat 11A)।
সাম্প্রতিক এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনায় একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী, ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাস কুমার রমেশ ছিলেন ১১এ-তে। আশ্চর্যভাবে ঠিক একই আসনে বসেই ১৯৯৮ সালে এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন থাই অভিনেতা-গায়ক রুয়াংসাক লয়চুসাক (Ruangsak Loychusak)।
এই অসম্ভব মিল প্রকাশ্যে আসতেই বিস্ময়ের ঢেউ উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই একে ‘১১এ-এর অলৌকিকতা’ (Miracle seat 11A survivor) হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।
কী বলছে রুয়াংসাকের অভিজ্ঞতা?
১৯৯৮ সালের ১১ ডিসেম্বর, রুয়াংসাকের তখন ২০ বছর বয়স। থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইট TG261-এ তিনি ছিলেন, যা ল্যান্ডিংয়ের সময় দক্ষিণ থাইল্যান্ডে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় ১৪৬ জন যাত্রীর মধ্যে ১০১ জন নিহত হন। রুয়াংসাক অলৌকিকভাবে বেঁচে যান (Thai Airways TG261 survivor), আর তাঁর আসন ছিল ঠিক ১১এ।
যখন তিনি শুনলেন যে এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই-১৭১ (AI171)-এর একমাত্র বেঁচে থাকা ব্যক্তি ১১এ-তেই ছিলেন, যেন জীবনের সেই সময়টা চোখের সামনে ভেসে ওঠে তাঁর। তারপর ফেসবুকে তিনি থাই ভাষায় একটি পোস্ট লেখেন। যার অর্থ খানিক এমন, ‘ভারতের একটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে রয়েছেন একজন। তাঁর আসনও ছিল ১১এ- ঠিক আমারই মতো!’
তিনি জানিয়েছেন, যদিও নিজের ১৯৯৮ সালের বোর্ডিং পাসটি তাঁর কাছে নেই, কিন্তু সে সময়ের বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে ছিল তাঁর সিট ১১এ-এর তথ্য।
দুর্ঘটনার পর রুয়াংসাক দীর্ঘ প্রায় ১০ বছরের কাছাকাছি বিমানে সফর করতে পারেননি। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারেও জানিয়েছেন, কীভাবে আতঙ্ক ও অতজনের মধ্যেও তাঁর বেঁচে ফেরার ‘আফশোস’ তাঁকে তাড়া করে বেরিয়েছে। এই জীবনটা একদমই যেন তাঁর ‘দ্বিতীয় জীবন’। এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। বিমানে ছিলেন ২৩০ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু সদস্য। মাত্র ৬০০-৮০০ ফুট উঁচুতে উঠে বিমানটি আচমকাই নেমে আসে এবং একটি মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে ধাক্কা মেরে জ্বলে ওঠে।
AI 171 বিমানের যাত্রী ছিলেন বিশ্বাস কুমার রমেশ। বিস্ফোরণের ধাক্কায় ছিটকে পড়লেও প্রাণে বেঁচে যান। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘একসময় মনে হচ্ছিল, আমিও বুঝি মারা যাব। চোখ খুলে বুঝতে পারি এখনও বেঁচে আছি। তখনই সিটবেল্ট খুলে যেভাবে পারি বের হয়ে আসি।’
এই অলৌকিক বেঁচে ফেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে। সাধারণত এই সিট কেউ নিতে চান না, কিন্তু অনেকেই এখন টিকিট কাটার সময় ১১এ সিটটি খুঁজে নিচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন ‘এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান আসন।’