শেষ আপডেট: 1 December 2023 10:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আশ্চর্য আবিষ্কার।
তারা নাচছে, তারা ঘুরছে, ছন্দে ছন্দে নাচতে নাচতে নতুন সূর্যকে ঘিরে পাক খাচ্ছে।
আমাদের সৌরজগতের বাইরে আরও এক সৌরজগতের খোঁজ পেল নাসা। সেখানে সূর্যের মতোই বড় আগুনে নক্ষত্রকে ঘিরে পাক খাচ্ছে ৬টা গ্রহ। একই তালে ও ছন্দে নাচতে নাচতে ঘুরছে। পৃথিবীর মতো গ্রহও রয়েছে সেই সারিতে। নাসার ট্রানসিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট (TESS) আরও এক নতুন নক্ষত্রমণ্ডলের খোঁজ পেয়েছে।
‘নেচার’ জার্নালে এই নতুন আবিষ্কারের কথা লখা হয়েছে। আশ্চর্য এই নক্ষত্রমণ্ডলের নাম দেওয়া হয়েছে এইচডি ১১০০৬৭। ইউনিভার্সিটি অফ বার্নের বিজ্ঞানী, গবেষণাপত্রটির লেখক হিউ অসবর্ন জানিয়েছেন, মহাকাশে যেন মেহফিল বসিয়েছে সেই নক্ষত্রমণ্ডল। এর আগে সৌরজগতের বাইরে যতগুলি নক্ষত্রমণ্ডলের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল তাদের সবার থেকে আলাদা এই ‘এইচডি ১১০০৬৭’। কারণ এই নক্ষত্রমণ্ডলের সকলেই নাকি নৃত্যরত। অদ্ভুত এক ছন্দে ও তালে তারা নাচতে নাচতে নক্ষত্রমণ্ডলের কর্তা নতুন সূর্যের চারপাশে পাক খাচ্ছে। এই ছন্দের কোনও বিচ্যুতি নেই। তাল-লয় সব সমান। একই গতিতে তারা পাক খাচ্ছে। বিজ্ঞানীর ভাবনায় ডিস্কো ড্যান্সার নক্ষত্রমণ্ডল।
নাসার ভিনগ্রহ-শিকারি টেলিস্কোপ এর আগে বহু অদ্ভুতদর্শন, আশ্চর্য চরিত্রের গ্রহ ও নক্ষত্রের খোঁজ দিয়েছে। ছোট ছোট নক্ষত্রমণ্ডলও খুঁজে পাওয়া গেছে যেখানে একটি তারাকে ঘিরে ঘুরপাক খাচ্ছে চারটি গ্রহ। কিন্তু একসঙ্গে ৬টি গ্রহ নিয়ে কোনও নক্ষত্রমণ্ডল আগে তেমনভাবে দেখা যায়নি। এই খোঁজ তাই নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।
????️ Descoberts sis planetes gràcies a les seves òrbites sincronitzades al voltant d'una estrella similar al Sol anomenada HD 110067, seguint un ritme predictible anomenat 'ressonància'.
— Institute of Space Sciences (ICE-CSIC) (@ice_csic) November 29, 2023
➡️ https://t.co/72B7z4IQbE pic.twitter.com/tXUvbuNPlC
পৃথিবীর মতো গ্রহের খোঁজে (Earth-Sized Planet) বহু বছর ধরেই মহাকাশের আনাচ কানাচে চোখ রেখে বসে আছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। নাসার ট্রানসিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট (Transiting Exoplanet Survey Satellite/TESS) সেই কবে থেকেই পৃথিবীর মতো গ্রহের খোঁজ করে চলেছে। এর আগে কয়েকবার এমন গ্রহের খোঁজ অবশ্য মিলেছে, তবে এবারের খোঁজ চমকে দেওয়ারই মতোই। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ডিস্কো ড্যান্সার নক্ষত্রমণ্ডলে পৃথিবীর মতো গ্রহও আছে।
আসলে এই ব্রহ্মাণ্ডে নানা জাতের, নানা গোত্রের গ্রহ আছে। কেউ পৃথিবীর মতো, কেউ পৃথিবীর চেয়ে ছোট ‘সাব-আর্থ’ আবার কেউ পৃথিবীর চেয়ে বড় ‘সুপার আর্থ।’ এই সুপার আর্থগুলিতে জল ও কার্বন থাকার সম্ভাবনা বেশি। সুপার আর্থদের তাপমাত্রাও হয় অনেকটা পৃথিবীর মতোই। অর্থাৎ হ্যাবিটেবল জ়োন বা প্রাণের বাসযোগ্য পরিবেশ রয়েছে। খান পঞ্চাশেক এমন গ্রহের খোঁজ মিলেছে যাদের নিয়ে এখন নাড়াচাড়া করছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর যমজও বেরিয়ে পড়েছে এই ফাঁকে, এক্সোপ্ল্যানেট ‘টিওআই ৭০০ ডি’। নীলপানা গ্রহ ঠিক যেন নতুন পৃথিবী। এখনও পর্যন্ত পাঁচশোরও বেশি গ্রহ, বামন গ্রহ ও উপগ্রহের খোঁজ মিলেছে যাদের সঙ্গে পৃথিবীর বিস্তর মিল। ‘এইচডি ১১০০৬৭’ নক্ষত্রমণ্ডলেও পৃথিবীর মতো গ্রহ আছে। সূর্য থেকে আমাদের পৃথিবীর দূরত্ব যতটা, ওই নক্ষত্রমণ্ডলেও ঠিক তেমনই দূরত্বে পৃথিবীর মতোই গ্রহ ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে সেই গ্রহে প্রাণ জন্মানোর আদর্শ পরিবেশ আছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।