শেষ আপডেট: 9th January 2024 11:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্লাস্টিকের বোতলভর্তি জলে গুঁড়ো প্লাস্টিকের কণা মিশে থাকে এমন তথ্য আগেই দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছেন, প্লাস্টিকের বোতলে রাশি রাশি প্লাস্টিক কণা জলের সঙ্গে মিশে থাকে। এই গুঁড়ো প্লাস্টিক জল খাওয়ার সময় শরীরে ঢোকে এবং শরীরে টক্সিনের মাত্রা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস থেকে প্রকাশিত জার্নাল ‘দ্য প্রসিডিংস’-এর একটি প্রতিবেদনে ন্যানোপ্লাস্টিক নিয়ে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণাকে বলা হয় ন্যানোপ্লাস্টিক। গবেষণা বলছেন, ১ লিটার প্লাস্টিকের বোতলের জলে (৩৩ আউন্স) কম করেও ২ লাখ ৪০ হাজার প্লাস্টিকের কণা মিশে থাকে। খালি চোখে এদের দেখা যায় না। জলের সঙ্গে শরীরে ঢুকে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়।
যে কোনও রকমের প্লাস্টিকের ভগ্নাংশ, যা লম্বায় ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট, তাকেই বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক। এর আগে মানুষের কোষে, গবেষণাগারের জীবজন্তুদের মধ্যে, এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কিন্তু জীবিত মানুষের উপর এই দূষকের ভূমিকা এখনও পর্যন্ত অজানাই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি স্তনদুগ্ধে মাইক্রোপ্লাস্টিক এর উপস্থিতি খুঁজে পাওয়ার পর তার ক্ষতিকর প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরেছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণা বলছে, এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের থেকেও সূক্ষ্ম ন্যানোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে বোতলের জলে। এদের দৈর্ঘ্য ১ থেকে ৫০০০ মাইক্রোমিটারের মতো। মানুষের মাথার চুলের চেয়েও সূক্ষ্ম। প্লাস্টিকের বোতলের জলে এই সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণাগুলোই মিশে থাকে।
মাইক্রোপ্লাস্টিক বা ন্যানোপ্লাস্টিকের রাসায়নিক উপাদান মানব শরীরের জন্য বিষাক্ত। কারণ সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণা বা প্লাস্টিকের ভগ্নাংশ ব্যাকটেরিয়াদের আঁতুরঘর। ই সমস্ত ব্যাকটেরিয়া প্লাস্টিকের সারফেসে দীর্ঘসময় বেঁচেবর্তে থাকতে পারে। দ্রুত বিভাজিতও হতে পারে। এই সমস্ত ব্যাকটেরিয়া প্লাস্টিক থেকে জলে মেশে বা মাটিতে মিশে যায়। নানা সংক্রমণজনিত রোগ, স্তন ক্যানসারেরও কারণ এই প্লাস্টিকজাত উপাদান। তাছাড়া অধিকমাত্রায় প্লাস্টিকের কণা শরীরে জমলে পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। মহিলাদের হরমোন ক্ষরণে বাধা তৈরি করে। বিশেষ ইস্ট্রোজেন হরমোনের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে এই টক্সিক পদার্থ।