শেষ আপডেট: 4th November 2024 15:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বয়স্কদের জন্য ফ্লাইট বেশ নিরাপদ, এ কথা অনেকেই বলে থাকেন। তার প্রথম কারণ ফ্লাইটে অ্যাসিস্টেন্ট পাওয়া যায়। কেউ চলতে না পারলে, গেটে ঢোকা থেকে ফ্লাইটে ওঠা ও ফ্লাইট থেকে নামা শুরু করে বাড়ির লোকের কাছে পৌঁছে দেওয়া পুরোটাই কোনও বিমানসেবিকা বা বিমানের কর্মী করিয়ে দেন। এই নিয়ে এপর্যন্ত ছোটখাটো অভিযোগ শোনা গেলেও বিরাট কিছু সমস্যায় পড়ার কথা শোনা যায়নি। তবে, এই ঘটনা বিরল। একজন ৭১ বছরের বৃদ্ধাকে কার্যত হেনস্থা করল এক বিমান সংস্থা। লিঙ্কডইনে ক্ষোভ উগরে দিলেন বৃদ্ধার মেয়ে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম লিঙ্কডইনে সম্প্রতি একটি পোস্ট ভাইরাল হয়। একজন মহিলা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ঘটনার বিবরণ খানিকটা বিচলিত হওয়ার মতোই।
পোস্টটি থেকে জানা যায়, আঁচল জৈনের ৭১ বছর বয়সী মা কোচি থেকে বেঙ্গালুরু যাচ্ছিলেন। একাই যাত্রা করছিলেন এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইটে। ফলে তাঁর সঙ্গে সাহায্য করার জন্য একজন ছিলেন। ঠিক মতো হাঁটতে পারেন না তাই হুইলচেয়ারেই এয়ারপোর্ট চত্বরে ঘুরছিলেন। বিমানে ওঠার আগে যা যা গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্যাগ চেক ইন। ঠিক এই জায়গায় এসেই সাধারণ যাত্রীদের বুক ধুকপুক করে। ওজন বেশি হয়ে যায়নি তো! এই ভয় থাকে সকলেরই।
ঠিক এখানেই বাধে বিপত্তি। এই বৃদ্ধাকে জানানো হয়, তাঁর লাগেজের ওজন নির্ধারিত ওজনের তুলনায় অনেকটা বেশি। ফলে ওজন কমাতে হবে বা বাড়তি টাকা দিতে হবে। ফ্লাইট ডিলে ছিল তাই বৃদ্ধা চেষ্টা করে যদি লাগেজের ওজন কমানো যায়।
এরপর বৃদ্ধাকে হুইলচেয়ার থেকে নামিয়ে হাঁটিয়ে একটি অন্ধকার ঘরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, নোংরা মেঝেতে বসে লাগেজ খোলানো হয়। এখানে শেষ নয়, বার বার বৃদ্ধাকে ভয় দেখানোর অভিযোগ ওঠে, ফ্লাইট মিস করার।
ফ্লাইট মিস, শুনলেই যেভাবে কেউ ভয় পেতে পারে, সেভাবেই ভয় পান আঁচল জৈনের মাও। তিনি কোনও মতে ওই অবস্থায় চেষ্টা করেন লাগেজ খোলার। পোস্ট থেকে জানা যায়, ওই বৃদ্ধার একটি হাত ভাঙা ছিল, ফলে কী পরিস্থিতিতে তিনি ছিলেন তা অনুমান করা যায়।
এরপর বৃদ্ধার পার্স ও লাঠি ফ্লাইটে ওঠার আগেই কোথাও রেখে দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, বাড়তি ওজনের জন্য এরপর ৮,২০০ টাকা ধার্য করা হয়। পোস্টদাতার অভিযোগ, ওই বৃদ্ধা পরিস্থিতি দেখে কার্যত কেঁদে ফেলেন, ভয় পেয়ে যান। এবং বাড়ি ফিরে জানান, তিনি আর কখনওই একা বিমানে চড়বেন না।
অনেকেই পোস্টের নিচে এই হেনস্থা নিয়ে গর্জে ওঠেন। অনেকে তাঁদের সঙ্গে হওয়া ঘটনার কথাও শেয়ার করেন। এমন ঘটনা যদি ফ্লাইটে হয়, তাহলে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের যাতায়াত ও সুরক্ষা বিরাট প্রশ্নের মুখে দাঁড়াচ্ছে, এই প্রসঙ্গও ওঠে।
পোস্টের কমেন্টে অবশ্য রিপ্লাই করে সংস্থা। প্রথমেই তারা এমন ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেয়। তারপর টিকিট থেকে তথ্য বের করে জানায়, ওই বৃদ্ধা ১৭ কেজির একটি কেবিন ব্যাগ ও আরও ১৭ কেজির একটি চেক ইন ব্যাগ নিয়ে যাত্রা করছিলেন। যেখানে একজনের জন্য নির্ধারিত ওজন চেক ইনে ১৫ ও কেবিনে ৭ কেজি। ফলে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে যাত্রা করতে গেলে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বৃদ্ধা ওজন কমাতে চাননি বলার সত্ত্বেও।
এরপর এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের তরফে টিকিটের তথ্য, যেমন পিএনআর ইত্যাদি শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
যদি পরে পোস্টদাতা জানান, অতিরিক্ত চার্জ নেওয়াটা তাঁর পোস্ট করার বা লেখার মূল লক্ষ্য নয়। যেভাবে হেনস্থা হতে হয়েছে, সেটা নিয়ে বলা হয়েছে।