দ্য ওয়াল ব্যুরো: হায়দরাবাদ, উত্তরপ্রদেশ, কোয়েম্বত্তূরের পর রাজস্থান। ফের লজ্জায় মাথা নত হল দেশের। নিজের মেয়ের উপরেই নৃশংস নির্যাতন চালালেন বাবা। ঘটনার কথা সামনে আনতে গিয়ে কেঁপে উঠলেন দুঁদে পুলিশ কর্তারাও। চেন দিয়ে নাবালিকা মেয়ের হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ, মারধর চলত দিনের পর দিন। ছিন্নভিন্ন যোনি, সারা শরীরে দগদগে ক্ষত নিয়ে মেয়েটি ভর্তি হাসপাতালে।
রাজস্থানের জালোরের এমন ঘটনা সামনে এসেছে গত শুক্রবার। নিদের বাড়ি থেকে কোনও মতে পালিয়ে মেয়েটি আশ্রয় নিয়েছিল তাঁর মামার বাড়িতে। সেখান থেকেই অভিযোগ দায়ের হয় পুলিশে। আজ, সোমবার অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির ছাড়াছাড়ি হয়েছিল বহুদিন। মেয়েকে নিয়েই থাকতেন তিনি। মেয়েটির মামার অভিযোগ অত্যন্ত বদমেজাজি, মদ্যপ একজন মানুষের সঙ্গে তাঁর বোন থাকতে পারেননি। মেয়ে ও তাঁর মা দু’জনকেই মারধর করত করতেন ওই ব্যক্তি। স্ত্রী চলে যাওয়ার পরে মেয়ের উপর অত্যাচার বেড়েছিল।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ করে থেঁতলে খুন ফুটপাথ থেকে অপহৃত চার বছরের শিশুকে! দেহ মিলল পরিত্যক্ত বাড়িতে
বয়ানে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, অন্য মহিলার সঙ্গে বাবাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন তিনি। তারপর থেকে অত্যাচারের মাত্রা দ্বিগুণ হয়। চেন দিয়ে তাঁর হাত-পা বেঁধে ঘরের এককোণে ফেলে রেখেছিলেন বাবা। ঠিকমতো খাবার, জলও দেওয়া হত না তাঁকে। দিনের পর দিন লাগাতার যৌন নিপীড়ন চালাতেন বাবা। চিৎকার করলেই কপালে জুটত বেধড়ক মার। কোনওরকমে চেন খুলে পালিয়ে যেতে পারেন তিনি।
স্টেশন হাউস অফিসার গিরধর সিং জানিয়েছেন, মেয়েটিকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁর দুই হাতে, পায়ে দগদগে ক্ষত ছিল। সারা শরীরে একাধিক কালশিটের দাগ। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে।
আরও পড়ুন: আমার ছেলেকেও পুড়িয়ে মারা হোক! এবার দাবি তুললেন হায়দরাবাদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত ধর্ষকের মা
হায়দরাবাদে তরুণী পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে। মহিলাদের নিরাপত্তার দাবিতে সরব হয়েছেন নাগরিকেরা। অপরাধীদের চরমতম শাস্তির দাবিতেও পথে নেমেছেন বহু মানুষ।সংসদের জিরো আওয়ারে হায়দরাবাদে তরুণী পশুচিকিৎসককে ধর্ষণের ব্যাপারে আলোচনার সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন যারা এই ধরনের বীভৎস ঘটনা ঘটায় তাদের কঠোর শাস্তি দিতে আইন আরও কঠোর করা যায় কিনা সে বিষয়ে সংসদে আলোচনা করা হবে। ধিক্কার, প্রতিবাদ মিছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রতিবাদ যতই হোক না কেন, এমন নারকীয় ঘটনা যে দেশে লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে ফের তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল রাজস্থানের এই ঘটনা।