
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বহু মহিলাই কাজের সূত্রে বা বিভিন্ন কারণে একা যাতায়াত করেন। কিন্ত কোনও কারণে ট্রেন ধরতে না পারলে সমস্যায় পড়েন তাঁরা। অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘসময়। অনেকসময় বসার জায়গা পান না। পেলেও অনেকের ভিড়ের মধ্যে বসতে অস্বস্তিবোধ করেন। বিষয়টি মাথায় রেখে ‘নিরাপদ বলয়’ তৈরি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
মাস দু’য়েক আগেই তৈরি করা হয়েছে ওই নিরাপদ বলয়। যার নাম ‘নন্দিনী’। তিনদিকে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে গোলাপী বোর্ডে লেখা রয়েছে ওই বলয়ের নাম। নীচে লেখা রয়েছে ‘একাকী মহিলাদের জন্য’। প্লাটফর্মে যদি কোনও একা মহিলা আসেন, তাহলে তিনি এই বলয় এর ভেতর ঢুকে বসতে পারেন। এখানে শুধুমাত্র মহিলারাই বসতে পারবেন। পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ।

শিয়ালদহ স্টেশনের উত্তরদিক দিয়ে প্ল্যাটফর্মে ঢুকে একটু এগোলেই ডানদিকে চোখে পড়বে চারিদিকে ঘেরা ওই বলয়। ঢোকার গেট একটি। ভিতরে রয়েছে ৪০জনের বসার ব্যবস্থা। রয়েছে একাধিক ফ্যানের ব্যবস্থা। রয়েছে সিসি ক্যামেরা। সামনে লাগেজ রেখে বাচ্চা নিয়ে বহু মহিলা নিশ্চিন্তে বসছেন সেখানে। বয়স্ক মহিলারাও ট্রেনের অপেক্ষায় এখানেই বসছেন। বসে থেকেই দেখা যাচ্ছে ট্রেন আসার এলইডি বোর্ড। পাশেই রেলপুলিশের কিয়স্ক।
ট্রেনের অপেক্ষায় সেখানেই বসেছিলেন মাঝবয়সি নন্দিতা তালুকদার। বললেন, ‘আমি মাঝেমধ্যে শিয়ালদা থেকে বেলেঘাটা যাই। একাই যাতায়াত করি। অনেকসময় ট্রেন লেট থাকে। কিন্ত প্ল্যাটফর্মে বসার জায়গা একদমই ছিলনা। অনেকেই পেপার বিছিয়ে বা প্ল্যাটফর্মের মেঝেতেই বসে পড়েন। মেয়েদের জন্য নতুন এই বসার জায়গাটা হওয়ায় অনেক সুবিধা হয়েছে।’

ব্যারাকপুরের গৃহবধু আত্রেয়ী সরকার মৌলালীর কাছে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। রোজ শিয়ালদা আসতে হয় তাঁকে। রাতে ফেরার সময় কখনও ট্রেন আসতে দেরি হলে নিশ্চিন্তে বসতে পারেন ওই নিরাপদ বলয়ে। তাঁর কথায়, ‘বাড়ি ফেরার সময় আমি কোনও কোনওদিন কিছু বাজার করে নিয়ে যাই। ভারী ব্যাগ নিয়ে হেঁটে স্টেশনে ঢুকে ট্রেন আসতে দেরি হলে ক্লান্ত লাগে। বসার জায়গা পাওয়া যায় না। আগে এই সুবিধা ছিল না। এটাতে বহু মেয়ের সুবিধা হল। তবে মোবাইল চার্জ করার ব্যবস্থা থাকলে আরও ভালো হত।’
পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক এইচ এন গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘বহু মহিলা একা যাতায়াত করেন। অনেকের সঙ্গে বাচ্চা থাকে। বহু বয়স্ক মহিলাও একা যাতায়াত করেন। বিশেষকরে রাতের দিকে প্ল্যাটফর্মে একা মহিলারা অসুরক্ষিত বোধ করেন। তারা ভিড়ের মধ্যে কোথায় বসবেন বুঝতে পারেন না। তাই রেল ওই উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের জন্য একটি সুরক্ষিত বলয় তৈরি করে তাদেরকে অনেকটাই সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে।’

পাশাপাশি, শিয়ালদহ স্টেশনের দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্য এগজিটিউটিভ লাউঞ্জটি এখন আরও সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বিলাসবহুল ওই লাউঞ্জে একঘণ্টা সময় কাটাতে লাগছে মাত্র ৫০ টাকা। ট্রেন ধরতে এসে অপেক্ষা করার জন্য আর মেঝেতে কাগজ বিছিয়ে থাকতে হচ্ছে না অনেকের। বেশি সময় কাটানোর জন্য এসি সুইট, এসি ডরমেটরি, ২ শয্যা, ৪ শয্যা রুমেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১২ এবং ২৪ ঘণ্টা তাতে থাকা যাবে। ভাড়া ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে।
প্রায় ১১ লাখ যৌন অপরাধীর ঠিকুজি অচিরেই তদন্তকারীদের হস্তগত হবে