
‘দ্য স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ডস চিলড্রেন, ২০১৯’ শীর্ষক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের প্রতি হাজারটি শিশুর মধ্যে ৩৭টি শিশুর মৃত্যু হয় অপুষ্টি-সহ নানা কারণে। ভারতের উপরে আছে পাকিস্তান। পাক মুলুকে জন্মানো হাজার শিশুর মধ্যে ৬৯ জনের মৃত্যু হয় নানা কারণে। তার মধ্যে অপুষ্টি অন্যতম। সবার উপরে রয়েছে নাইজিরিয়া। আফ্রিকার এই দেশে হাজার শিশুর মধ্যে মৃত্যু হয় ১০২টি শিশুর। রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে ২০১৮ সালে ভারতবর্ষে অপুষ্টি-সহ নানান কারণে ৮ লক্ষ ৮০ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, দেশের মাত্র ২১ শতাংশ শিশুর খাদ্যতালিকায় বিবিধ এবং সুষম আহারের যথাযথ সমন্বয় মেলে। অর্থাৎ ৭৯ শতাংশ শিশু থেকে যায় এর বাইরে। পুষ্টির অভাবে অধিকাংশ শিশুই নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাইপার টেনশন, সুগার, কিডনির অসুখ জাঁকিয়ে বসছে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে।
ইউনিসেফের এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের এ শরীরে ভিটামিন ‘এ’-র ঘাটতি দেখা যায়। প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজনের শরীরে রয়েছে ভিটামিন বি-১২-এর অভাব। প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন ভোগে রক্তাল্পতায়। ‘মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস’-এর অভাবে রিকেট, রাতকানা, অন্ধত্বও থাবা বসায় শিশুদের শরীরে।
প্রধানত যেটা দেখা যায়, তা হল ছয় থেকে আট মাস বয়সের পর শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির সমস্যা বাড়ে। এর থেকে মৃত্যুও হয়। এর প্রধান কারণ, ওই বয়সে মাতৃদুগ্ধ পান করার অভ্যাস ছাড়িয়ে শিশুকে তোলা খাবার দেওয়া হয়। কিন্তু বহুক্ষেত্রেই এই খাবারের পরিমাণ যথেষ্ট হয় না, আবার পুষ্টির নিরিখেও যথাযথ হয় না। এর পিছনে যেমন রয়েছে দারিদ্র। তেমনই রয়েছে সচেতনতার অভাবও। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পরিষ্কার জলের অভাব, টীকাকরণ না করানো এবং তার জেরে সংক্রমণের শিকার হওয়াও শিশুমৃত্যুর ক্ষেত্রে বড় কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।