
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হৃদয় মণ্ডলকে (Hriday Mondal) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জামিনের তীব্র বিরোধিতা করে তাঁকে জেলে পাঠিয়েছে তারা। এই ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বহু মানুষ। তাদের বক্তব্য, বাংলাদেশে এসব কী শুরু হয়েছে? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এখনও উদযাপন চলছে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। তারই মধ্যে শুরু হয়েছে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন। গত বছর দুর্গা পুজোর সময় সে দেশের বেশ কিছু পূজামণ্ডপে হামলা করা হয়। বেশ কয়েকজন হামলাবাজদের হাতে নিহত হন। তখনই দেখা যায়, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর উদ্দেশে ধর্ম অমাননার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
দিন কয়েক আগে তেজগাঁও কলেজে প্রভাষক লতা সমাদ্দারকে পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তি কপালে টিপ পরা নিয়ে প্রকাশ্য রাস্তায় কটূক্তি ও হেনস্থা করে। নওগাঁয় আমদিনী পাল নামে এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে হিজাব নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে উত্তেজনা তৈরি করা হয়।
একের পর এক এমন ঘটনায় তীব্র নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন। এই সংগঠন দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের সংগঠন। তারা হৃদয় মণ্ডলের মুক্তি দাবি করে বলেছে, সাম্প্রদায়িক কূপমুণ্ডকতা তরুণ সমাজকে ক্রমশ গ্রাস করছে।
হৃদয় মণ্ডল কে? কী তাঁর অপরাধ? (Bangladesh)
তিনি বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক। প্রায় কুড়ি বছর ওই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। স্কুলের কোয়াটার্সে থাকেন।
দিন কয়েক আগে স্কুলের কিছু ছাত্র ও অভিভাবক প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করেন, ওই শিক্ষক বিজ্ঞান পড়ানোর সময় ধর্মের অবমাননা করেছেন।
প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য, যেদিন ওই শিক্ষক ক্লাস নেন, অভিযোগ জমা পড়ে তার পরদিন। তিনি ওই শিক্ষককে ডেকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। হৃদয় মণ্ডল তিন দিন সময় চেয়ে নেন।

তারপরের ঘটনা খুবই উদ্বেগের। প্রধান শিক্ষক বিবিসিকে আরও বলেন, আমি নিজের অফিস চেম্বার থেকে শুনতে পাই, হৃদয় মণ্ডলের কোয়াটার্সে হামলা হচ্ছে। ছাত্ররাই গিয়েছে সেখানে। আমি তাঁদের ডেকে পাঠাই। বলি, ওঁকে শো কজ করা হয়েছে। জবাব পেলে তারপর পদক্ষেপ করা হবে। এখন অশান্তি কেন করা হচ্ছে। কিন্তু তারা স্লোগান দিতে থাকে।
পুলিশ গ্রেফতার করার পর ওই শিক্ষক এখন জেলে। ওই ঘটনায় ধর্ম নির্বিশেষে সব শিক্ষক শিক্ষিকাই বিচলিত, উদ্বিগ্ন। যেমন, এক শিক্ষিকা বলেছেন, বিজ্ঞান হল সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত। অন্যদিকে, ধর্ম হল মূলত বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। ফলে বিজ্ঞানের সঙ্গে তার বিরোধ থাকবেই। তাই বলে শ্রেণিকক্ষে কি ধর্মের বিধান মেনে বিজ্ঞান পড়াতে হবে!
জীব সৃষ্টির প্রশ্নে সব ধর্মই ঈশ্বরের কথা বলে। বিজ্ঞান বলে জৈবিক প্রক্রিয়ার কথা। বিজ্ঞানের ক্লাসে কি ছেলেমেয়েদের ঈশ্বরের কথা সেখাতে হবে?
ওই শিক্ষকের স্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, তাঁরা খুবই ভয়ের পরিবেশে বাস করছেন। এমনকি স্কুল চত্বরে বাস করেও ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে পারছেন না।
গুলি করে খুন ভারতীয় ছাত্রকে, শহরের সাবওয়ের বাইরে মর্মান্তিক ঘটনা