
যত দিন গড়াচ্ছে, সারা দেশের করোনা সংক্রমণ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে চড়ছে মৃতের সংখ্যা। একটি পরিবারে প্রায় সমস্ত সদস্যের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও আকছার খবরের শিরোনামে উঠে আসছে। শিশুরা তুলনায় কম সংক্রামিত হলেও তারা পুরোপুরি বিপন্মুক্ত নয়।
কিন্তু কোভিডের চেয়েও তাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্ভাবনা দেশের বিভিন্ন মহলে দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। বাবা-মা করোনা সংক্রামিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তারপর দু’জনেই কোনওভাবে মারা গেলে ছোট ছেলেমেয়েদের কী হবে, তার কোনও সদুত্তর মিলছে না। বিশেষ করে, ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করা পরিবারগুলির ক্ষেত্রে এই দুর্যোগ আগামী দিনে আরও ব্যাপক আকার নিতে পারে। বাড়তে পারে শিশুপাচার এবং শিশুশ্রমের মতো ঘটনা। এমনটাই মনে করছে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক (ডব্লিউসিডি)।
যে কারণে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রককে বিশেষ ডিক্লেয়ারেশন ফর্মের প্রস্তাব দিয়েছে তারা। সমস্যার বিষয়টি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। ডব্লিউসিডি-র সচিব রাজেশ ভূষণের দাবি, ‘করোনায় বাবা-মা-কে হারানোর পর অনেক নাবালকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। তক্ষুনি তাদের দায়িত্ব নিতে অনেকেই এগিয়ে আসছে না। এই ঘটনা শুধু তাদের বেড়ে ওঠাকেই নয়, বরং সামগ্রিকভাবে বাকি জীবনকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। এর জেরে পরবর্তী সময়ে শিশুপাচার কিংবা শিশুশ্রমের মতো ঘটনা বাড়তে চলেছে।’
সমস্যা ঠেকাতে নিদানও বাতলেছেন তিনি। তাঁর প্রস্তাব, ‘খুব ভাল হয়, যদি আক্রান্ত অভিভাবকেরা হাসপাতালে ভর্তির আগে নিজেরাই কোনও বিশ্বস্ত আত্মীয়ের নাম জানান। এর ফলে প্রয়োজন পড়লে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে। তাই প্রতিটি রাজ্যের সমস্ত কোভিড হাসপাতালে অ্যাডমিশন ফর্মে এই নাম-ঠিকানা লেখার নতুন কলাম জুড়লে ভালো হয়।’ ভবিষ্যতে সেই তালিকা নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন ভূষণ।