
কেন্দ্রে দ্বিতীয় ইউপিএ জমানায় পি চিদম্বরম যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, গুজরাতে ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় অমিত শাহকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।
আর এখন কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। আর আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় চিদম্বরমকে খুঁজে বেড়াচ্ছে সেই কেন্দ্রীয় এজেন্সি-র গোয়েন্দারাই, সিবিআই।
২০০৫ সালে গুজরাতে পুলিশের এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিল সোহরাবুদ্দিন শেখ। পরে তদন্তে ফাঁস হয়েছিল ভুয়ো সংঘর্ষের কথা। তখন গুজরাতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন অমিত শাহ। সিবিআই অভিযোগ করে, অমিত শাহ-র নির্দেশেই ওই ভুয়ো এনকাউন্টার হয়েছিল। এর পরে ২০১০ সালে ওই অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। এ ব্যাপারে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের অনুমতি বা নির্দেশ সিবিআই কর্তারা নিয়েছিলেন বলেই অনেকে মনে করেন।
এ বার সেই সিবিআই-ই পিছনে পড়ে গিয়েছে চিদম্বরমের। আপাতত আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় তাঁকে খুঁজছেন কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির অফিসাররা। চিদম্বরম যখন কেন্দ্রে অর্থমন্ত্রী ছিলেন, তখন সাড়ে তিনশো কোটি টাকা বিদেশি লগ্নি এসেছিল আইএনএক্স মিডিয়ায়। অভিযোগ, চিদম্বরমের ছেলে কার্তি চিদম্বরম এ জন্য কাটমানি পেয়েছিলেন। এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসেবে বিদেশি লগ্নির জন্য আইএনএক্স মিডিয়াকে ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ডের ছাড়পত্র পেতে সাহায্য করেছিলেন চিদম্বরম।
আপাত ভাবে অমিত শাহ ও চিদম্বরমের ঘটনার মধ্যে ফারাক আছে। দু’টি পৃথক মামলা। কিন্তু বহু পর্যবেক্ষকের সন্দিহান চোখ। তাঁরা সব কিছু সোজা করে দেখতে পারেন না। মিল খোঁজেন দু’টি ঘটনার।
চিদম্বরমের আগাম জামিনের আর্জি গত কাল দিল্লি হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছিল। এর পরে রক্ষাকবচের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্টে কোনও সুরাহা না হলে তাঁর গ্রেফতারি অনিবার্য বলেই মনে করা হচ্ছে।
সে দিক থেকে গত ২০ বছরে এত বড় কোনও কংগ্রেস নেতা এই প্রথম গ্রেফতার হবেন। এর আগে ইউপিএ জমানায় ডিএমকে নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী এ রাজা, ডিএমকে সাংসদ কানিমোজি, টুজি কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কমনওয়েলথ গেমস দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুরেশ কালমাডি। কিন্তু চিদম্বরমের রাজনৈতিক ওজন ও উচ্চতা অনেক বেশি। এতো বড় কোনও নেতা হালফিলে এমন বিপাকে পড়েননি।
এখন দেখার, সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়।