
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব মেদিনীপুর: ভূপতিনগরের নাড়ুয়া ভিলা গ্রামে বিস্ফোরণে (Bhupatinagar Blast) মৃত্যুর ঘটনায় মৃত স্বামীর বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করলেন স্ত্রী লতারানি মান্না। গতকালই বিস্ফোরণে প্রাণ গেছে তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার। আজ, রবিবার ভূপতিনগর থানায় গিয়ে তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন, রাজকুমার বেআইনি আতসবাজি তৈরি করতেন। সেই কাজেরই পরিণতি এই মর্মান্তিক মৃত্যু।
লতারানি এদিন জানান, এই ঝুঁকির বাজি তৈরির কাজে তিনি বহুবার বাধা দিয়েছেন স্বামীকে। তাঁর কথা শুনতেন না রাজকুমার। সে কারণেই শেষমেশ এই পরিণতি দাঁড়িয়েছে বলে দাবি তাঁর। তিনি আরও জানিয়েছেন, আতসবাজি তৈরি করার সময়ে তিনি বাড়িতে থাকতেন না, তাই প্রাণে বেঁচে গেছেন। তাঁর অনুমান, ওই আতসবাজি তৈরি করার সময়ে সম্ভবত ধূমপান করা হচ্ছিল, তার স্ফূলিঙ্গ থেকেই ঘটেছে বিপদ।
অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আজ মৃতদেহগুলিকে পাঠানো হয়েছে ময়না তদন্তে।
তৃণমূলের মৃত বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার জেঠতুতো ভাই সহদেব মান্নাও এদিন মুখ খোলেন। তবে তিনি আতসবাজির কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ভয় দেখানোর জন্য হাত বোমা তৈরি হতো রাজকুমারের বাড়িতে।
সহদেব এদিন জানান, বিধানসভা ভোটের পর থেকে যে সব বিজেপির কর্মী ঘরছাড়া ছিলেন, তাঁরা এখন ঘরে ফিরছেন, তাঁদের ভয় দেখানোর জন্যই নাকি বোমা তৈরি করা চলছিল। তিনি বলেন, ‘এখানে প্রত্যেক দিনই দু-চারটে করে হাতবোমা ফাটে। আতসবাজির কোনও ব্যাপার নেই। বিজেপির লোকজনকে ভয় দেখানোর জন্যই এই ধরনের বোমা তৈরি চলছিল।’
শুক্রবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর দু’নম্বর ব্লকের ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়য়াবিলা গ্রামে আচমকা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়ি। তিনি, তাঁর ভাই দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েন মারা যান বিস্ফোরণে। গুরুতর জখম হন আরও দু’জন।
বিজেপির তরফে অভিযোগ ওঠে, ওই তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোমা বাঁধা হচ্ছিল, তাতেই বিপত্তি ঘটেছে। মৃত এবং আহতরা সকলেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের। আজ সেই কথাই শোনা গেল মৃত তৃণমূল নেতার ভাইয়ের মুখেও। তবে তাঁর স্ত্রী যে আতসবাজির কথা বলেছেন, তা তাঁকে শিখিয়ে-পড়িয়ে বলানো হচ্ছে বলেও পাল্টা অভিযোগ উঠেছে বিরোধী মহলে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভূপতিনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা। রাত হলেই এলাকা থেকে বোমাবাজি ও গুলির শব্দ শোনা যায় প্রায়ই। দিনকয়েক আগেই তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মিহির ভৌমিককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তারপর ফের বিস্ফোরণে মৃত্যু হল তিন তৃণমূল নেতার।
বৌমার সঙ্গে ‘পরকীয়া’ শ্বশুরের! সন্দেহের বশে শীতলখুচিতে বাবাকে খুন করল ছেলে