
দ্য ওয়াল ব্যুরো : অতিমহামারীর (Pandemic) সময় ভারতের ধনকুবেরদের (Richest Indians) মোট সম্পত্তি (Property) বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। ১০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থের মালিকদের সংখ্যাও দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৯ শতাংশ। অর্থাৎ অতিমহামারীর সময় মোট ১৪২ জন ভারতীয় ১০০ কোটির বেশি ডলারের মালিক হয়েছেন। সোমবার প্রকাশিত এক সমীক্ষার ফলাফলে জানা গিয়েছে, ১০ জন ধনীতম ব্যক্তির অর্থে আগামী ২৫ বছর ধরে দেশের প্রত্যেক শিশুর স্কুলে পড়ার খরচ ও উচ্চশিক্ষার খরচ মেটানো যেতে পারে।
এদিন ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের দাভোস অ্যাজেন্ডা সামিট অনলাইনে শুরু হচ্ছে। তার ঠিক আগে অক্সফাম ইন্ডিয়া নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সমীক্ষা করে জানিয়েছে, কোভিডের সময় ধনীতমদের ওপরে যদি বাড়তি এক শতাংশ কর চাপানো যেত, তাহলে সরকার আরও ১৭ লক্ষ ৭০ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে পারত। দেশের ধনীতম ৯৮ টি পরিবারের ওপরে যদি এক শতাংশ সম্পত্তিকর বসানো যেত, তাহলে সেই অর্থে সাত বছরের বেশি সময় ধরে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালানো যেত।
অতিমহামারীর সময় যে ১৪২ জন ভারতীয় অতি ধনী হয়ে উঠেছেন, তাঁদের সম্পত্তির মোট পরিমাণ ৭১৯০০ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় তার পরিমাণ ৫৩ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। দেশের ধনীতম ৯৮ জনের হাতে যে সম্পদ আছে, তা দেশের ৫৫.৫ শতাংশ গরিব লোকের মোট সম্পত্তির সমান। তার পরিমাণ ৪৯ লক্ষ কোটি টাকা।
অক্সফ্যামের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ১০ জন ধনীতম ভারতীয় যদি রোজ ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৭৪ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করেন, তাহলে তাঁদের বর্তমান সম্পদ শেষ হতে সময় লাগবে ৮৪ বছর। তাঁদের ওপরে সম্পত্তিকর বসিয়ে বছরে ৭৮৩০ কোটি ডলার বা প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা তোলা সম্ভব। তাতে স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় বাড়ানো যাবে ২৭১ শতাংশ।
অক্সফ্যামের মতে, কোভিড অতিমহামারী প্রথমে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিপর্যয় ডেকে এনেছিল। কিন্তু এখন তা আর্থিক ক্ষেত্রে বিপর্যয় ডেকে আনছে। ভারতের ধনীতম ১০ শতাংশ মানুষ দেশের মোট সম্পদের ৪৫ শতাংশের মালিক হয়েছেন। অন্যদিকে দেশের দরিদ্র ৫০ শতাংশ মানুষ জাতীয় সম্পদের মাত্র ছয় শতাংশের ভাগ পেয়েছেন।
সরকারের সমালোচনা করে অক্সফ্যাম বলেছে, সরকার ক্রমশ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় কমাচ্ছে। একইসঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে ওই ক্ষেত্রগুলিতে। কোভিডের চিকিৎসার খরচ চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের আয়ত্তের বাইরে।