
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুজোর দিনে এ যেন এক নয়া দুর্ভোগ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। এমনিতেই এই জায়গায় আনন্দের চেয়ে বিষাদই বেশি খেলা করে। গোটা শহরের পুজোর রোশনাই ছুঁতে পারে না হাসপাতালের ম্লান মুখগুলোকে। তার মধ্যে সুপার স্পেশ্যালিটি বিল্ডিং ভেসে গেল জলে! অন্ধকার নেমে এল বিল্ডিংয়ে! অচল হয়ে গেল ইউএসজি-সহ একাধিক যন্ত্রপাতি।
পঞ্চমীর দিনে হাসপাতালের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে হাজার খানেক রোগী নিয়ে অন্য জায়গায় সরাতে হল আউটডোর। মেডিক্যাল কলেজের সুপার, ডক্টর ইন্দ্রনীল বিশ্বাসকে ডাকতে হল পুলিশও।
পুলিশ জানিয়েছে, সুপার স্পেশ্যালিটি বিল্ডিংয়ের দোতলার নিরাপত্তারক্ষী সকালে কাজে যোগ দিতে এসে দেখেন, জলে ভেসে যাচ্ছে গোটা ফ্লোর। দোতলার জল একতলাতেও নেমে ভাসিয়ে দিচ্ছে, বলাই বাহুল্য। সঙ্গে সঙ্গে জলের উৎস খোঁজা শুরু হয়। চলে আসেন সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাসও। খোঁজাখুঁজি করে দেখা যায়, ওটি কমপ্লেক্সের স্টোররুম লাগোয়া একটি জলের কল ও একতলার আরও একটি কল রাতের বেলা চুরি হয়ে গেছে। সেখান থেকেই অবাধে জল বেরিয়ে ভাসিয়ে দিয়েছে ফ্লোর।
প্রচুর বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি রয়েছে দু’টি ফ্লোরেই, তাই বিপদের আশঙ্কা করে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করার নির্দেশ দেন সুপার। এ দিকে বিল্ডিংয়ের আউটডোরে তখন হাজারখানেক রোগীর ভিড়। এই অবস্থায় জলে ভাসছে হাসপাতাল, আলো জ্বলছে না গোটা বিল্ডিংয়ে।
এমনিতেই বৃহস্পতিবার নিউরো, ডায়াবেটিস, ইউরোলজি-সহ কয়েকটি বিভাগের স্পেশ্যালিস্ট ডাক্তারবাবুরা বসেন। ফলে এই দিন দূরদূরান্ত থেকে মেডিক্যাল কলেজে আসেন বহু রোগী। তাই শেষমেশ ওই অবস্থাতেই কাজ শুরু করে দেন চিকিৎসকেরা। জলে পা ডুবিয়ে বসেই রোগী দেখতে শুরু করেন। কিন্তু, বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকায় কাজ করছিল না সেন্ট্রাল এসি। এর ফলে গরমে দমবন্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন বাধ্য হয়েই তিন নম্বর গেটের সামনে পুরনো আউটডোর বিল্ডিংয়ে রোগীদের সরিয়ে আনা হয়।
সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, জলের কল ছাড়া অন্য কিছু চুরি হয়নি। দেখে মনে হয়েছে দোতলার ওটি কমপ্লেক্সের দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করেছিল চোরেরা। ওটির দরজার হ্যান্ডেল ও লক নষ্ট হয়েছে। কিন্তু দরজা ভাঙেনি। এর ওপর বিপর্যয় ও ভোগান্তি তো আছেই। তবে আরও অনেক ক্ষতি হতে পারত। এই সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকে কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে। তাই এই ঘটনার পরেই সুপার স্পেশ্যালিটি বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।