
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুখের নানা জায়গা গভীর ভাবে কেটে গেছে প্রৌঢ় ভদ্রলোকের। গলগল করে পড়ছে রক্ত, ভিজে যাচ্ছে জামা, হাত মুখ। পাশ থেকে এক মহিলা আঁচল চেপে ধরছেন কাটা জায়গায়। তাঁর গলায় আতঙ্ক স্পষ্ট। একটু পরে একজন এগিয়ে এলেন ছোট একটা তোয়ালে নিয়ে, চেপে ধরলেন রক্তাক্ত মুখ। ওই অবস্থাতেও প্রৌঢ় ব্যক্তি অবশ্য সকলকে শান্ত হতে বলছেন। চারপাশে চেয়ারটেবিল ভেঙেচুরে পড়ে আছে, যেন এক রণক্ষেত্র পরিস্থিতি।রবিবার সন্ধেয় এমনই একটি ভিডিও (video) টুইটারে পোস্ট করল তৃণমূল। দেখে রীতিমতো শিউরে উঠতে হয়। জানা গেছে, রক্তাক্ত ওই ব্যক্তি ত্রিপুরা তৃণমূলের এক সাধারণ কর্মী।
ভিডিও পোস্ট করে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, ত্রিপুরায় এখন এমনই গুন্ডারাজ চলছে বিপ্লব দেবের। তৃণমূলের নেতা ও কর্মীদের প্রতিমুহূর্তে নির্দয় ভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। অথচ ত্রিপুরে পুলিশ দুষ্কৃতীদের আড়াল করছে! সুপ্রিম কোর্টকে পদক্ষেপ করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে ওই টুইটে।
দেখুন সেই ভিডিও (Video)।
This is the HORRIFIC state of affairs in Tripura under @BjpBiplab's Gunda Raj!
While our leaders & workers are being MERCILESSLY ATTACKED every moment, @Tripura_Police continues to shield the @BJP4Tripura assailants!
Urging the Hon'ble Supreme Court to take strict actions. pic.twitter.com/WYGSzPcnFw
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) November 21, 2021
প্রহৃত ব্যক্তির নাম জানা যায়নি এখনও। আগরতলাতেই এই আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়। তবে আজ গোটাদিনই তৃণমূলের সফর এবং সায়নী ঘোষের গ্রেফতারি ঘিরে উত্তাল ছিল ত্রিপুরা। পুরভোটের আগে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষোভ অশান্তির খবর এসেছে।
‘জটায়ুকে দেখে একেনবাবু লিখিনি’, জানালেন স্রষ্টা! এবার বড়পর্দায় আসছেন একেন
আজ দুপুরে তৃণমূল নেত্রী সায়নীকে আগরতলার থানায় ডেকে জেরা করে গ্রেফতার করার সময় থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ উঠেছে থানায় ঢুকে হামলা চালানোর। থানার বাইরে লাঠি হাতে, হেলমেট পরে বিজেপির দুষ্কৃতীরা জমায়েত করেছে বলে দাবি তৃণমূলের। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকের দাবি, ‘‘পুলিশকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের পথরোধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি। নেতা কর্মীদের উপর ইটবৃষ্টি চলছে, পুলিশ নীরব দর্শক।’’
এদিন রাতে দফায় দফায় টুইট করেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল লেখেন, ‘আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় বিজেপির তাণ্ডব চলছে। বাইরে সাহায্য দরকার। পুলিশ প্রশাসন দেখুন। সাংবাদিকও রক্তাক্ত। পুলিশ আতঙ্কিত।’
আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় বিজেপির তাণ্ডব চলছে।
বাইরের সাহায্য দরকার।
পুলিশ, প্রশাসন দেখুন।সাংবাদিকও রক্তাক্ত।
পুলিশ আতঙ্কিত।— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) November 21, 2021
আরও একটি টুইটে কুণাল লেখেন, ‘সায়নীকে নিরাপত্তার অভাবে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানা থেকে অন্য থানায় (নাম লিখছি না) নিয়ে গেল পুলিশ। পূর্ব থানায় জীবন মরণ সমস্যা। বিজেপি সশস্ত্র। ঘিরে। সভা করছে। বাজি ফাটাচ্ছে। বোমা গুলির আওয়াজ ঢাকার চেষ্টা? জানি না আমরা বাঁচব কি না।’
সায়নীকে নিরাপত্তার অভাবে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানা থেকে অন্য থানায় ( নাম লিখছি না) নিয়ে গেল পুলিশ।
পূর্ব থানায় জীবন মরণ সমস্যা।
বিজেপি সশস্ত্র।
ঘিরে।
সভা করছে।
বাজি ফাটাচ্ছে।
বোমা, গুলির আওয়াজ ঢাকার চেষ্টা?জানি না আমরা বাঁচব কি না।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) November 21, 2021
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল সন্ধেয়। আগরতলার আশ্রম চৌমহনীতে একটি সভা ছিল বিজেপির। তাতে মূল বক্তা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। সেই সভার পরেই আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর সভা চলাকালীন নাকি সায়নী ঘোষ একটি স্করপিও গাড়িতে করে দ্রুতগতিতে সভার দিকে এগিয়ে আসতে থাকেন। সেই গাড়িতে ‘দুষ্কৃতী’ ছিল বলেও দাবি করা হয় পুলিশের কাছে। আরও অভিযোগ, সায়নীর সেই গাড়ি থেকে ছোড়া হয়েছে ঢিল-পাথর, সভার উদ্দেশে করা হয়েছে গালাগেলি। এর পরে দ্রুত গতিতে চম্পটও দেয় গাড়িটি।
এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের হলে, সেই ভিত্তিতেই মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এর পরেই আজ রবিবার দুপুরে সায়নীকে ডাকা হয়েছিল থানায়। দীর্ঘ জেরার পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।