
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackrey)। এদিন ফেসবুক লাইভে এসে নিজের ইস্তফার কথা জানালেন তিনি। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে বিধান পরিষদ থেকেও ইস্তফা দিলেন তিনি। বুধবার রাত ন’টা নাগাদ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) রায় আসে। সেই রায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়, আগামীকালই অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই বিধানসভায় আস্থা ভোট হবে। এই মর্মে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারীকে নির্দেশ দেওয়া হয় ফ্লোর টেস্ট করানোর। সেই নির্দেশের কয়েক মিনিটের মাথাতেই মুখ্যমন্ত্রীর পথ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি।
এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্ধব ঠাকরে বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান জানাচ্ছি। অবশ্যই গণতন্ত্র মেনে চলা হবে।” শুধু তাই নয়, তাঁর ওপর আস্থা রাখার জন্য কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধী ও এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বিগত কয়েকদিন ধরে মহারাষ্ট্রে চলছে রাজনৈতিক নাটক (Maharasthra Politica Crisis)। শিবসেনার মধ্যেই দেখা যায় ভাঙন। শিবসেনার বিধায়ক একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে একদল বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। সেই থেকে মুম্বই ছাড়া ছিলেন তাঁরা। বিক্ষুদ্ধ বিধায়কদের ঘরে ফেরানোর একাধিক চেষ্টা ব্যর্থ হয়। শিন্ডের দাবি ছিল, তাঁর সঙ্গে ৩৯ জন বিধায়ক রয়েছেন। আজই তাঁরা গুয়াহাটি থেকে গোয়াতে উড়ে এসেছেন। আগামীকাল সেখান থেকেই বিধানসভায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁদের।
উদ্ধবের ইস্তফার ফলে প্রায় আড়াই বছর পর মহারাষ্ট্রের ‘মহাবিকাশ আঘাদি’ জোট সরকারের পতন হল। এই জোট সরকারে শিবসেনার পাশাপাশি ছিল ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি (NCP) এবং কংগ্রেস।
উদ্ধবের এই সিদ্ধান্ত কি আকস্মিক? রাজনৈতিক মহলের মতে, একদমই নয়। উদ্ধব আগেই বুঝতে পেরেছিলেন এই সরকার থাকবে না। তাই এদিন সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন তিনি। এই বৈঠকেই ঠিক হয়ে যায় ইস্তফার প্রসঙ্গ।
এই বৈঠকে যাওয়ার আগে উদ্ধব মহারাষ্ট্র সচিবালয়ে শিবাজির প্রতিকৃতিতে ফুল মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সকলের সঙ্গে করমর্দন করে সচিবালয় ছাড়েন। তখন তাঁর সঙ্গী ছিলেন পুত্র তথা পর্যটন মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে।
বুধাবার বিকেল থেকে শিবসেনার আবেদনের শুনানি শুরু হয় বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জেবি পাড়িয়ালা নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চে। যদিও এদিন সুপ্রিম কোর্ট উদ্ধবের আবেদন নাকচ করে দেয়। জানায়, বৃহস্পতিবার বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে। আস্থাভোট শেষ করতে হবে।
সূত্রের খবর, তিনি যখন ফেসবুক লাইভে নিজের ইস্তফার কথা ঘোষণা করছেন, তখন শিবসেনার একটি দল পৌঁছে যান রাজভবনে। ফেসবুক লাইভ শেষ করে উদ্ধব ঠাকরে আজ রাতেই চলে যান রাজভবনে। সেখানে রাজ্যপালের হাতে নিজের ইস্তফাপত্র তুলে দেবেন তিনি। এখন এটাই দেখার মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হন?